লোহাগাড়ায় স্বেচ্ছায় লকডাউনে ২১ গ্রাম

139

লোহাগাড়া উপজেলায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে অন্তত ২১ গ্রাম ‘স্বেচ্ছায় লকডাউন’ করে দিয়েছেন এলাকার স্থানীয়রা। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে উপজেলার ২১ গ্রামের স্থানীয় সচেতন যুবকরা গ্রামের প্রবেশ পথে বাঁশের ঘেরাও দিয়ে প্রতিবন্ধকতা করে সেখানে নোটিশ ঝুলিয়ে গ্রামগুলো লকডাউন করে দেয়। এসময় হাতের লেখা নোটিশে ‘প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি ছাড়া বহিরাগতদের গ্রামে প্রবেশ নিষেধ’ লেখা দেখা যায়।
জানা যায়, দেশে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দিন দিন দ্রæত বাড়তে থাকায় আগাম সতর্কতা হিসেবে সামাজিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ লকডাউন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী। যদিও এসব এলাকার কারও শরীরে এখনও করোনা ভাইরাসের কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি।
উপজেলায় সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজনের দেয়া তথ্যানুযায়ী, উপজেলার স্বেচ্ছায় লকডাউন করা গ্রামগুলো হলো উপজেলা সদর ইউনিয়নের পুরাতন থানা গেইটের কাছিম আলী মহুরী পাড়া, রশিদার পাড়া, আলাউদ্দিন সিকদার পাড়া, লিচু মিয়াজীর পাড়া, সিকদার পাড়া, ভিল্যা পাড়া, আধুনগর ইউনিয়নের উত্তর হরিণার মিয়া পাড়া ও দক্ষিণ হরিণার মনসুর আলী সিকদার পাড়া, আমিরাবাদ ইউনিয়নের মল্লিক ছোবাহান তেলিপুকুর পাড় হতে কাটা বটগাছ এলাকা, মাস্টার হাটের মতিউল্লাহ মহাজন পাড়া, গোলামনবী হাজির পাড়া ও ঝাঁকুয়াবির পাড়া, কলাউজান ইউনিয়নের খালাদাদ খাঁন পাড়া, পদুয়া ইউনিয়নের ফরিয়াদের কুলের রাবারড্যাম এলাকা, নালার খিল এলাকা ও নিজতালুক পাড়া, চরম্বা ইউনিয়নের নয়া বাজার এলাকা, মজিদার পাড়া ও ওয়াহিদের পাড়া, পুটিবিলা ইউনিয়নের ডলুকুল ও বড়হাতিয়া ইউনিয়নের মালপুকুরিয়া খোন্দকার পাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকা।
স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চরম আকারে দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। সরকারও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে লোকজনকে নিজ বাড়িতেই অবস্থান করতে বার বার নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। তাই এ প্রাণঘাতী করোনা মহামারী থেকে নিজেদের রক্ষার স্বার্থে আমরা আমাদের গ্রামগুলো নিজেদের উদ্যোগে স্বেচ্ছায় লকডাউন করে দিয়েছি। ফলে, বাহিরের কেউ আমাদের গ্রামে প্রবেশ করতে পারছে না। আর গ্রামের বাসিন্দারাও একান্ত প্রয়োজন ছাড়া গ্রামের বাইরে যাচ্ছেন না। এতে কিছুটা হলেও করোনার ঝুঁকি কমবে বলে বিশ্বাস করি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌছিফ আহমদ বলেন, করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে পাবলিক ডিমান্ড হিসেবে স্বেচ্ছায় উপজেলার কয়েকটি গ্রাম লকডাউন করেছে বলে শুনেছি। তবে, সরকারিভাবে উপজেলায় কোনো বাড়ি, পাড়া ও গ্রাম লকডাউন করা হয়নি। লোহাগাড়ায় এখনো সে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।
এদিকে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হানিফ জানান, এ পর্যন্ত লোহাগাড়ায় করোনায় কোনো ব্যক্তি আক্রান্ত হয়নি। তবে, এ পর্যন্ত (মঙ্গলবার) ১২ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ৯ জনের নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে এবং বাকী ৩ জনের রিপোর্ট কাল জানা যাবে।