লোহাগাড়ায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ কোচিং শিক্ষকের বিরুদ্ধে

30

লোহাগাড়ায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক কোচিং সেন্টারের মালিকের বিরুদ্ধে। গত ১২ এপ্রিল দুপুরে উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের উত্তর আমিরাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ঐ কোচিং সেন্টারটি বন্ধ রয়েছে। ধর্ষক সাইফুল ইসলাম বর্তমানে পলাতক।
ধর্ষণের সময় ঐ ছাত্রীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক সপ্তাহ চিকিৎসার পর গত বৃহস্পতিবার নিজ বাড়িতে ফিরে ওই ছাত্রী।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) কো-অর্ডিনেটর ডা. সৈয়দা মাফরুহা নিগার লোহাগাড়া থানায় এজাহার প্রেরণ করার প্রেক্ষিতে ধর্ষিতার মাকে বাদি করে মামলা নেয় পুলিশ।
লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, থানার এসআই বিকাশ রুদ্রকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তবে ধর্ষক সাইফুল ইসলামকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
সাইফুল গোপনে বিদেশ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে ধর্ষিতার পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উত্তর আমিরাবাদের আব্দুস সোবহানের ছেলে ধর্ষক সাইফুল ইসলাম কিছুদিন আগে উত্তর আমিরাবাদে সৃজনশীল নামে একটি কোচিং সেন্টার খুলে। এলাকার ছেলে সাইফুলের অনুরোধে উত্তর আমিরাবাদ এমবি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রীকে উক্ত কোচিং সেন্টারে ভর্তি করানো হয়। সেই থেকে সাইফুলের সাথে ঐ ছাত্রীর পরিবারের যোগসূত্র তৈরি হয়।
ছাত্রীর মা বলেন, ঘটনার আগের দিন আমি আমার বড় মেয়ের শশুড় বাড়িতে যায়। ঘটনার দিন সকাল ৮টার দিকে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম আমাকে মোবাইল ফোনে কোথায় জানতে চাইলে আমি বড় মেয়ের শশুড় বাড়িতে আছি বলে জানায়। এরপর সে আমার ঘরে এসে আমার মেয়েকে একা পেয়ে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করে। মেয়ের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে ধর্ষক সাইফুল পালিয়ে যায়। গুরুতর অবস্থায় আমার মেয়েকে উদ্ধার করে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। গত এক সপ্তাহ চিকিৎসার পর বৃহস্পতিবার আমার মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসি। এরই মধ্যে গত ১৫ এপ্রিল ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সহযোগিতায় লোহাগাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করি। কিন্তু এখনো ধর্ষক সাইফুলকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এ ব্যাপারে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বিকাশ রুদ্র বলেন, আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ধর্ষক যাতে বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য আমরা বিমান বন্দর ও স্থলবন্দর সমূহে বিশেষ বার্তা প্রেরণ করেছি। ধর্ষককে দ্রুত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

কাউখালীতে
শিশু ধর্ষণের
চেষ্টা, আটক ১
কাউখালী প্রতিনিধি
রাঙামাটির কাউখালীতে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। উপজেলা সদরে আটককৃত গোপাল কৃষ্ণ নাথের (৬০) একটি সাইনবোর্ড লেখার দোকান রয়েছে। গত রবিবার সন্ধ্যায় তিনি সাইনবোর্ড লিখতে গিয়ে খেলারত অবস্থায় এক কন্যাশিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ অভিযোগে কাউখালী থানায় মামলা দায়ের করেন শিশুটির পিতা।
জানা যায়, উপজেলা সদরে ‘উষা আর্ট’ এর সত্ত¡াধিকারী গোপাল কৃষ্ণ নাথ গত
রবিবার সন্ধ্যায় কাউখালী বাজারে একটি বেসরকারি এজেন্ট ব্যাংক’র সাইনবোর্ড লিখতে যান।
এসময় সেখানে খেলতে থাকা এক কন্যাশিশুকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে সিঁড়ির নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালান।
পরে শিশুটির চিৎকারে ব্যাংকের এক কর্মকর্তা এসে পড়ায় গোপাল শিশুটিকে ছেড়ে দেয়। কি হয়েছিল জানতে কর্মকর্তারা সিসি টিভির ফুটেজ চেক করতে গেলে বিষয়টি ধরা পড়ে। এসময় ঘটনাটি প্রকাশ না করতে অনুরোধ করে ব্যর্থ হয়ে কৌশলে বাড়ি চলে যান গোপাল। ব্যাংক কর্মকর্তারা বিষয়টি পুলিশকে জানালে রাতেই উপজেলা সদরের বিদ্যুৎ এলাকা থেকে গোপালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে শিশুটির পিতা বাদি হয়ে কাউখালী থানায় মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২১ ফেব্রুয়ারি নিজের দোকানে মোবাইলে অশ্লীল ভিডিও দেখিয়ে ২য় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ছিল গোপালের বিরুদ্ধে।
নীপিড়নের শিকার শিশুটির পিতা বলেন, ‘প্রথম ঘটনায় গোপালকে পুলিশ ছেড়ে দেয়ায় আজ আমার মেয়ে তার লালসার শিকার হলো। এখন মুখ দেখাতেই লজ্জা লাগছে। ভিডিও ফুটেজে তার অপরাধের প্রমাণ আছে। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
কাউখালী থানার ওসি মনজুর আলম বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তি কয়েক দফা শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ বিষয়ে সব আলামত জব্দ করা হয়েছে।’
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ছুফি উল্লাহ ও কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার মো. জুনায়েদ কাউসার গতকাল সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় মো. ছুফি উল্লাহ বলেন, ‘দ্বিতীয় ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। ফুটেজ দেখে গোপালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা হয়েছে। প্রথম ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নিলে এ ঘটনা ঘটতো না। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’