লোহাগাড়ায় বন্যায় ক্ষতি প্রায় ১৬ কোটি টাকা

80

লোহাগাড়ায় গত সপ্তাহের টানা বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে উপজেলার প্রায় সব এলাকার বেড়িবাঁধ ও খালপাড়ে ভাঙ্গন দেখা দেয়। সৃষ্ট বন্যায় উপজেলার শতাধিক কাঁচা বসতঘর পানিতে বিলীন হয়ে গেছে।
সূত্র জানায়, গত ৪ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত ১০ দিনের টানা ভারী বর্ষণের ফলে উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের ৯৭টি গ্রামীণ সড়ক-উপসড়ক ও ব্রিজ-কালভার্টের এপ্রোচ সড়ক লÐভÐ হয়ে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ১৫০টি মৎস্য প্রজেক্ট, ২০০টি পুকুর ও ১৩৪টি কাঁচা বসতঘর বন্যার পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। উপজেলার বড়হাতিয়া, পদুয়া, কলাউজান ও আধুনগরে প্রায় ৩শ পরিবার এখনো পানিবন্দী রয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে উপজেলার শস্যভান্ডারখ্যাত জঙ্গল পদুয়া ও উত্তর পদুয়ার হাজার হাজার একর সবজিক্ষেত। এছাড়াও বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে আমন বীজতলা, পানের বরজ, মুরগীর খামার ও অসংখ্য দোকান-পাট।
বন্যায় সবমিলিয়ে পুরো উপজেলায় ১৬ কোটি টাকার অধিক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস ও ৯ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
লোহাগাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে উপজেলায় কাবিখা’র ২৯টি প্রকল্পের বিপরীতে ২৩৪ মেট্রিক টন চাল ও গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব প্রকল্পের আওতায় ৩০ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে ১২ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার কাজ করা হয়। কিন্তু সা¤প্রতিক টানা অতিবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে সদ্য নির্মিত রাস্তাগুলো ভেঙ্গে যায়। এছাড়া অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় ৮০টি প্রকল্প (১ম ও ২য় পর্যায়) ৪০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা নির্মাণের জন্য এক কোটি টাকার অধিক বরাদ্দ দেওয়া হয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা জানান, উপজেলার ২ হাজার ১৭ জন নিবন্ধিত শ্রমিকদের মাধ্যমে এ প্রকল্পের আওতায় ৪০ কিলোমিটার এর অধিক কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করে গ্রামীণ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করা হলেও স¤প্রতি টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে এসব উন্নয়ন কাজ তলিয়ে যায়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় থেকে আরো জানা যায়, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এর গ্রামীণ রাস্তা ও সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার চুনতি, আধুনগর, চরম্বা ও কলাউজান ইউনিয়নে ১ কোটি ৫৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকায় ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যরে ৫টি সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে সেতুগুলোর এপ্রোচ সড়ক তলিয়ে গেছে।
উপজেলার পদুয়া ইউপি চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন জানান, বিগত ১০ দিনের টানা অতিবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। ইউনিয়নের ২০ থেকে ২৫টি গ্রামীণ সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্রিজ-কালভার্টের এপ্রোচ সড়কগুলো পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। ইউনিয়নের ২ কিলোমিটার পাকা সড়ক, ২ কিলোমিটার ব্রিক সলিন সড়ক, ৮ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক, ১২ কিলোমিটার সড়ক পথ, ৩টি ব্রিজ ও ৩টি কালভার্ট ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬ কিলোমিটার এলাকায় নদীর পাড় ভেঙ্গে পানিতে তলিয়ে গেছে ৩৫ টি কাঁচা বাড়ি ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৫০টি বসতঘর। বন্যার পানিতে ডুবে ভেসে গেছে ২০টি পুকুর ও মৎস্য প্রজেক্টের ২০ লক্ষাধিক টাকার মাছ, আমন বীজতলা ও পানের বরজ। এছাড়াও উপজেলার একমাত্র শস্যভাÐার খ্যাত জঙ্গল পদুয়া ও উত্তর পদুয়ার হাজার হাজার একর কাকরোল, শিম, বরবটি, শসা, পটল, ঝিঙা, কচু ও ঢেঁড়শসহ বিভিন্ন জাতের সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পদুয়া ইউনিয়নের অন্তত ৫টি গ্রাম এখনো পানিবন্দী রয়েছে। এই বন্যায় পদুয়ায় প্রায় ৮ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উপজেলার আধুনগর ইউপি চেয়ারম্যান আয়ুব মিয়া জানান, বিগত ১০ দিনের টানা অতিবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের প্রায় এলাকা ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়েছে। ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামীণ সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউনিয়নের প্রায় সব ব্রিজ-কালভার্টের এপ্রোচ সড়ক পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। আধুনগর ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত ডলু নদী, হাতিয়া খাল ও কুলপাগলী খালের ১৮৯০ ফুট বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। ইউনিয়নের অন্তত ২০টি পুকুর ও মৎস্য প্রজেক্ট পানিতে ডুবে লাখ লাখ টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়াও অনেক আমন বীজতলা, পানের বরজ ও সবজিক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। সব মিলিয়ে এ বন্যায় আধুনগর ইউনিয়নে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার আমিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) এস. এম. ইউনুছ জানান, আমিরাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে ২০০ পরিবার ও ১ হাজার ৪০০ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১০টি গ্রামীণ সড়ক বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ১ কিলোমিটার পাকা সড়ক ও ২০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেছে। অধিকাংশ ব্রিজ-কালভার্টের এপ্রোচ সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ইউনিয়নের পূর্ব হাজারবিঘা ও তুলাতলী-বণিক পাড়ায় ৫টিসহ ১০টি কাঁচা বসতঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। আমিরাদের উপর দিয়ে প্রবাহিত ডলু নদী ও টংকাবতী খালের পাড় ভেঙ্গে পানির স্রোতে তলিয়ে গেছে আমন-আউশের বীজতলা, ১৫০ একর সবজিক্ষেত, পানের বরজ, হাস-মুরগীর খামার ও অনেক ঘর-বাড়ি। বন্যার পানিতে ডুবে অন্তত ৩০টি পুকুর ও মৎস্য প্রজেক্টের লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গেছে। এছাড়াও কাবিখা, কাবিটা, অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির মাটির কাজ প্রায় সব বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। আমিরাবাদ ইউনিয়নে সা¤প্রতিক বন্যায় ২ কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার চরম্বা ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার শফিকুর রহমান জানান, বিগত ১০দিনের টানা অতিবর্ষণ ও বন্যায় চরম্বার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ইউনিয়নের ওয়াহিদার পাড়া সড়ক, মাইজবিলা সড়ক, হাতিরডেপা সড়ক, রাজঘাটা সড়ক, কালোয়ার পাড়া সড়ক ও শাহপীর সড়কসহ অন্তত ১০ থেকে ১২টি গ্রামীণ সড়ক বিধ্বস্ত হয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাজঘাটা এলাকায় টংকাবতী খালের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে পানির স্রোতে অনেক সবজিক্ষেত, আমন-আউশের বীজতলা, মুরগীর খামার ও পানের বরজ তলিয়ে গেছে। এছাড়াও পুরো ইউনিয়নের অন্তত ৫০টি পুকুর-মৎস্য প্রজেক্টের লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। বন্যায় চরম্বা এলাকায় প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
বড়হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. জুনাঈদ চৌধুরী জানান, সা¤প্রতিক বন্যায় বড়হাতিয়ার নিম্নাঞ্চল ব্যাপক প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে ইউনিয়নের ২৬টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব সড়কের ১০২৫ ফুট জায়গা সম্পূর্ণ ধ্বসে গেছে। থমথমিয়া খাল ভেঙ্গে ২টি বসতঘর ভেঙ্গে যায় এবং পানিবন্দী হয়ে পড়ে ৩০টি পরিবার। এছাড়াও বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে অনেক বীজতলা, হাস-মুরগীর খামার, পানের বরজ, সবজিক্ষেত ও দোকান-পাট। বন্যার পানিতে ডুবে অন্তত ১০টি পুকুর-মৎস্য প্রজেক্টের লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গেছে। গত সপ্তাহের টানাবর্ষণ ও বন্যায় বড়হাতিয়ায় ১ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
চুনতি ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন জনু জানান, বিগত ১০ দিনের টানা অতিবর্ষণ ও বন্যায় ইউনিয়নের ৫ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক, ১ কিলোমিটার ব্রিক সলিন সড়ক, ২টি কালভাট ও প্রায় সব গ্রামীণ সড়কের ব্রিজ-কালভার্টের এপ্রোচ সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বন্যার পানির স্রোতে তলিয়ে গেছে ইউনিয়নের ৫টি বসতঘর, ১০ একর সবজিক্ষেত, ১০ একর আমন-আউশ বীজতলা ও ১৫ টি পানের বরজ। বন্যার পানিতে ডুবে ভেসে গেছে অন্তত ৩০টি পুকুর-মৎস্য প্রজেক্টের মাছ। সা¤প্রতিক বন্যায় পুরো ইউনিয়নে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
কলাউজান ইউপি চেয়ারম্যান এম এ ওয়াহেদ জানান, বন্যায় কলাউজানে ২ বর্গ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক, ২টি কালভার্ট ও প্রায় সব ব্রিজ-কালভার্টের এপ্রোচ সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ২০টি কাঁচা বাড়ি, ১০০ হেক্টর সবজিক্ষেত, ৩ হেক্টর আমন বীজতলা। বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫০টি হাস-মুরগীর খামার ও ৪০টি পরিবার। এছাড়াও পানির ¯্রােতে ভেসে গেছে অন্তত ৩০টি পুকুর-মৎস্য প্রজেক্টের ৩০ লক্ষাধিক টাকার মাছ। বন্যায় কলাউজানে প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
লোহাগাড়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুচ্ছফা চৌধুরী জানান, বন্যায় লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চলের ৭ কিলোমিটার পাকা সড়ক ও ১০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানির স্রোতে বিধ্বস্ত হয়েছে ৮টি কাঁচা বাড়ি, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫০টি বসতঘর। পানির স্রোতে ভেসে গেছে ১০টি পুকুর ও ৫টি মৎস্য প্রজেক্টের অন্তত ২০ লক্ষ টাকার মাছ। পানিতে তলিয়ে গেছে ৩ একর সবজিক্ষেত ও আমন বীজতলা। এছাড়াও বেশ কয়েকটি হাস-মুরগীর খামারও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সব মিলিয়ে লোহাগাড়া সদর ইউনিয়ন এলাকায় প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
পুটিবিলা ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মো. ইউনুস জানান, বন্যায় পুটিবিলার ৮টি সড়ক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পহরচান্দা গজালিয়া দিঘীর পাড় হইতে চান্দা সড়কের ব্রিক সলিন সম্পূর্ণ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যার পানিতে ভেঙ্গে গেছে ২টি বসতঘর ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৭টি পরিবার। পানিতে ভেসে গেছে ১০টি পুকুর-মৎস্য প্রজেক্টের প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মাছ। এছাড়াও অনেক সবজিক্ষেত, হাস-মুরগীর খামার, পানেরবরজ ও আমন-আউশের বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যায় সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, লোহাগাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম রাসেদ জানান, সা¤প্রতিক বন্যায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কাবিখা’র ২৯টি প্রকল্পের আওতায় সদ্য নির্মিত ১২ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির ৮০টি প্রকল্পের আওতায় সদ্য নির্মিত ৪০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ও এডিবি’র গ্রামীণ রাস্তা ও সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সদ্য নির্মিত ৫টি সেতুর এপ্রোচ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) প্রতিপদ দেওয়ান জানান, সা¤প্রতিক টানা ১০দিনের অতিবর্ষণ ও বন্যায় ৮টি পাকা সড়কের ১২ কিলোমিটার জায়গা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ৫টি কালভার্ট ও পদুয়া হাঙ্গর খালের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। এতে প্রায় ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাঈল জানান, বন্যার পানিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৩৫০টি পুকুর-মৎস্য প্রজেক্টের প্রায় ১ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম জানান, সা¤প্রতিক বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৫ হেক্টর আমন, ৪ হেক্টর আউশ বীজতলা ও ৪ হেক্টর সবজিক্ষেত সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে। এছাড়াও অনেক সবজিক্ষেত ও বীজতলা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌছিফ আহমদ জানান, বন্যায় উপজেলার নি¤œাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। আধুনগর, পদুয়া, আমিরাবাদ, চুনতি ও বড়হাতিয়া এলাকা তুলনামূলকভাবে একটু বেশি প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ৩ হাজার জনকে কয়েকদফায় খাবার ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছি। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, ব্রিজ-কালভার্ট ও কাঁচা রাস্তা মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে।