লোহাগাড়ায় এক বছরে ৪১ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু

82

লোহাগাড়ায় ২০১৯ সালে নারী-শিশুসহ ৪১ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আত্মহত্যা, খুন, বন্যহাতির আক্রমণ, পুকুরে ডুবে, গাছের চাপায়, মারামারি, অগ্নিদগ্ধ ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট অন্যতম। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুরো বছরের সংবাদগুলো পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া যায়। ৪ ফেব্রূয়ারি চুনতি ফারেঙ্গা এলাকার গভীর অরণ্য মন্দুলার চর খামার বাড়িতে অজ্ঞাত হিংস্র বন্যপ্রাণীর আক্রমণে মো. মিয়া প্রকাশ জুনু মিয়া (৬৫) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছিলেন। ৮ ফেব্রূয়ারি পদুয়া ইউনিয়নের ঠাকুরদিঘীর পূর্ব পাশে পদ্মবিল এলাকায় ক্ষেতের জমি থেকে আবদুল মোনাফ (৩৮) নামে এক সিএনজি অটোরিকশা চালকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। ২৪ ফেব্রূয়ারি উপজেলার উজিরভিটা নাথ পাড়ায় রুমি দেবী (২৪) নামে এক গৃহবধূ কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করেছিলেন।
৩ মার্চ আমিরাবাদ রাজঘাটা মাদ্রাসার পুকুরে ডুবে মো. রায়হান (১৬) নামে এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছিল। ৫ মার্চ চুনতি ইউনিয়নের পানত্রিশা চাম্বি রাবারড্যামের অদূরে একটি বাগানে গাছ কাটতে গিয়ে আবু বক্কর (৫৫) নামে এক কাঠ ব্যবসায়ী গাছের চাপায় নিহত হয়েছিলেন। ৭ মার্চ পদুয়া ইউনিয়নের ধলিবিলা হানিফারচর এলাকায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে সালেহা আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছিলেন সে সময় বলা হয়েছিল। ১১ মার্চ লোহাগাড়া বটতলী মোটর স্টেশনস্থ কক্সবাজার বোর্ডিং’র ছাদে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অজ্ঞাত যুবকের (৩৫) লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। একইদিন পুটিবিলা ইউনিয়নের পহরচান্দা গ্রামে নুরুল হক (৫৮) নামে এক কৃষক আত্মহত্যা করেছিলেন। ২৩ মার্চ লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ সুখছড়ি এলাকায় শ্বশুর বাড়ির অদূরে আলিশ্যায়র ব্রিজের উপর মোস্তফা কামাল (২০) নামে এক তরুণ বিষপানে আত্মহত্যা করেছিলেন।
৬ এপ্রিল কলাউজান ইউনিয়নের উত্তর কলাউজান হাজারী গোদার পাড়ায় রুহুল আমিন (২৮) নামে এক যুবক ফাঁসিতে ঝুঁলে আত্মহত্যা করেছিলেন। ২৭ এপ্রিল পুটিবিলা ইউনিয়নের বড়ুয়া পাড়ায় ফাঁসিতে ঝুঁলে সুনিতা বড়ুয়া (৫৯) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছিলেন।
২ মে পশ্চিম কলাউজান বাংলা বাজারের দক্ষিণে বাড়ির পাশে পুকুরে ডুবে আবদুল্লাহ ওয়ায়েজ (৩) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। ৪ মে চরম্বা ইউনিয়নের নোয়ারবিলা গ্রামে বাড়ি সংলগ্ন পুকুরে ডুবে জান্নাতুল ফেরদাউস তাহিয়াদ (৫) নামে এক কন্যাশিশুর মৃত্যু হয়েছিল।
১০ মে পুটিবিলা ইউনিয়নের পূর্ব তাঁতী পাড়ায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে ইয়াছমিন আক্তার (২৮) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রী আত্মহত্যা করেছিলেন। ১২ মে লোহাগাড়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সংলগ্ন মহাসড়কের পাশে অজ্ঞাত (৫০) এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছিল থানা পুলিশ। একইদিন পুটিবিলা ইউনিয়নের গৌড়স্থান নয়াপাড়ায় তুচ্ছ ঘটনায় ভাইয়ের হাতে আহত ভাই কবির আহমদ (৪৫) নামে একজন ঘটনার ৪ দিন পর মৃত্যুবরণ করেছিলেন। ১৩ মে চুনতি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন মহাসড়কের পাশ থেকে এক অজ্ঞাত (৬০) ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছিল থানা পুলিশ। ২১ মে আধুনগর ইউনিয়নের রূপবান পাড়ায় আফরোজা খানম মুমু (১৮) নামে এক নববধূ বিষপানে আত্মহত্যা করেছিলেন।
১৫ জুলাই আমিরাবাদ জনকল্যাণ এলাকায় মো. ইকবাল (৪০) নামে এক বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত হয়েছিলেন। ১৯ জুলাই বার আউলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের যাত্রী ছাউনীর সামনে থেকে অজ্ঞাত (৪৫) এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছিল থানা পুলিশ। ২০ জুলাই চরম্বা ইউনিয়নের নয়াবাজার এলাকা থেকে অজ্ঞাত (৩৫) এক মহিলার লাশ উদ্ধার করেছিল থানা পুলিশ। ২১ জুলাই বড়হাতিয়া ইউনিয়নের শীল পাড়ায় গভীর রাতে ঘরের বীমের সাথে রশিতে ঝুঁলে দিলীপ শীল (৫৫) নামে এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছিলেন। ২৭ জুলাই লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের সিকদার পাড়ায় নানা বাড়ির পুকুরে ডুবে মো. রাফি (৭) নামে ২য় শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছিল। ৩১ জুলাই পুটিবিলা ইউনিয়নের গৌড়স্থান মাঝর পাড়ায় মো. শাকিল (১০) নামে এক শিশু বাড়ির ছাদের বীমের সাথে ঝুঁলে আত্মহত্যা করেছিল।
৪ আগস্ট চরম্বা ইউনিয়নের মাইজবিলা গ্রামের দক্ষিণ পাড়া (দক্ষিণ মাইজবিলা) এলাকায় আবুল হোসেন (৬০) নামে এক কৃষক বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত হয়েছিলেন। ২২ আগস্ট আধুনগর আখতারিয়া পাড়ায় বাড়ি সন্নিহিত পুকুরে ডুবে আবদুল্লাহ (২) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। ২৪ আগস্ট পদুয়া ইউনিয়নের জঙ্গল পদুয়া মুন্সিমুড়া হোসেন সিকদার পাড়ায় মোরশিদা আক্তার (২৪) নামে এক গৃহবধূ বীমের সাথে শাড়ি প্যাঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন।
৩ সেপ্টেম্বর পুটিবিলা ইউনিয়নের ডলুখাল পাড়স্থ ইব্রাহিম মৌলভীর বাগান থেকে আবদুল ওয়াহেদ (২৬) নামে এক বালু ব্যবসায়ীর ঝুঁলন্ত লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ৮ সেপ্টেম্বর চুনতি ইউনিয়নের বড় মিয়াজি পাড়ায় অগ্নিদগ্ধে ইয়াসমিন আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছিলেন। ২৬ সেপ্টেম্বর পদুয়া ইউনিয়নের তেওয়ারীখিল গ্রামের আল হাদ্বারা ইসলামিক স্কুল ভবনে রং করতে গিয়ে বাঁশ ভেঙে নিচে পড়ে মো. ছাবের (৩৫) নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। ২৯ সেপ্টেম্বর কলাউজান ইউনিয়নের হিন্দুরহাট এলাকায় ‘কলাউজান কিন্ডার গার্ডেন ইনস্টিটিউট’র বারান্দা থেকে আবু সুফিয়ান নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ৩০ সেপ্টেম্বর আমিরাবাদ হাছির পাড়ায় পুকুরে ডুবে মোহাম্মদ জিহাদ (৮) ও আবদুল্লাহ আল তাওহিদ (৪) নামে দুই সহোদরের মৃত্যু হয়েছিল।
১২ অক্টোবর চরম্বা ইউনিয়নের মাইজবিলা আবাসন প্রকল্পের পূর্ব পার্শ্বে হাজারি খোলা ঘোনা এলাকায় বন্যহাতির আক্রমণে মুহাম্মদ আবদুর রহমান (৫২) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছিলেন। ৩০ অক্টোবর পদুয়া তেওয়ারীখিল এলাকায় বাড়ির পার্শ্ববর্তী পুকুরে ডুবে আল আমিন নামে আড়াই বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছিল।
২৪ নভেম্বর কলাউজান বাংলাবাজার খলিল সিকদার পাড়ায় পুকুরে ডুবে তাহির আক্তার (৪) নামে এক কন্যাশিশুর মৃত্যু হয়েছিল। ২৫ নভেম্বর পদুয়া ইউনিয়নের আলী সিকদার পাড়ায় ব্যাডমিন্টন খেলার মাঠে বৈদ্যুতিক লাইনের সংযোগ দিতে গিয়ে মো. রিয়াদ (১৫) নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছিল।
৭ ডিসেম্বর চরম্বা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মাইজবিলা পূর্ব পাড়ায় বন্যহাতির আক্রমণে নুরুল ইসলাম (৩৮) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছিলেন। ১১ ডিসেম্বর কলাউজান ইউনিয়নের উত্তর কলাউজান নিচতালুক এলাকায় বন্যহাতির আক্রমণে শাহাব উদ্দিন (৪৫) নামে এক নৈশপ্রহরী নিহত হয়েছিলেন। ১২ ডিসেম্বর চুনতি ইউনিয়নের বনপুকুর কুমুদিয়া পাড়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে ইফতেখার হোসেন রানা (৩২) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবক আত্মহত্যা করেছিলেন। ২৩ ডিসেম্বর বড়হাতিয়া ইউনিয়নের জঙ্গল বড়হাতিয়া এলাকায় বিষপানে সফুরা খাতুন (৪৫) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছিলেন।