লালখান বাজারে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ তুমুল সংঘর্ষ

134

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নগরীর লালখান বাজার কর্নার হোটেলের মোড়ে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ কর্মীদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ একজনসহ চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। গতকাল শনিবার
বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, মনির হোসেন (৪০), সোহেল (২৩), সুমন (১৮) ও ইমন (১৭)। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক হামিদুর রহমান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে গিয়ে দুই গ্রæপের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে আহত অপর তিনজন পুলিশ সদস্যসহ বাকিদের নাম পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার বিকেলে লালখানবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম ও যুবলীগ নেতা আবুল হাসনাত বেলালের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আবুল হাসনাত বেলালের অনুসারীরা দিদারুল আলম মাসুমের অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।


পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে যুবলীগ নেতা বেলালের সমর্থক এক যুবককে ছুরিকাঘাত করে আওয়ামী লীগ নেতা মাসুমের অনুসারীরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে দুপুরে বেলালের অনুসারীরা লালখানবাজার মোড়ে সমাবেশ করে। সমাবেশ শেষে তারা মিছিল নিয়ে বাঘঘোনা কাঁচাবাজারের কাছে আসলে তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে মাসুমের অনুসারীরা। এ সময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছোড়া হয় বলে জানান তারা। গত শতকের নব্বইয়ের দশকে চট্টগ্রামের সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমের অনুসারী ছিলেন তৎকালীন কলেজ ছাত্রসংসদের এজিএস আবুল হাসনাত বেলাল। বছর কয়েক আগে বেলালও লালখান বাজার এলাকায় আলাদা বলয় গড়ে তোলেন। এরপর থেকে দুইপক্ষের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। দুইপক্ষের বিবাদে হত্যাকাÐও ঘটেছে।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী জানান, সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে দুই পক্ষের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতরা চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি এবং উভয় পক্ষের কেউ অভিযোগও দেয়নি বলে জানান ওসি প্রণব চৌধুরী।
ঘটনার বিষয়ে দিদারুল আলম মাসুম দাবি করেছেন, আজ (শনিবার) আবুল হাসনাত বেলালের অনুসারীরা তার কর্মীদের উপর হামলা করেছেন। তার অফিসে হামলা চালিয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করা হয়েছে। হামলার সময় তিনি বাসায় অবস্থান করছিলেন। তার কর্মীরা হামলা থেকে বাঁচতে বেলালের অনুসারীদের প্রতিরোধ করেছেন। তিনি এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থার নেওয়ার দাবি জানান।
এদিকে আবুল হাসনাত বেলাল বলেন, গত শুক্রবার রাতে আমার কর্মী সাইদুলকে মেরে আহত করে দিদারুল আলম মাসুমের অনুসারীরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে পুলিশের কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে আজ (শনিবার) বিকেলে মিছিল বের করে আমার অনুসারীরা। এসময় বাঘঘোনা কাঁচাবাজার এলাকায় আসলে মাসুমের অনুসারীরা হামলা করে।