লামা ও আলীকদমে অর্ধদিবস হরতাল ও মানববন্ধন

89

লামা : বান্দরবান পৌর শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর চথোয়াইমং মারমাকে অপহরণের পর হত্যা এবং জড়িতদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে লামা উপজেলায় অর্ধদিবস হরতাল পালন করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালের কারণে উপজেলায় রবিবার সকাল থেকে দূর পাল্লার কোন যানবাহন ছেড়ে যায়নি। শহরের দোকানপাটও ছিল বন্ধ। বাস স্টেশন ও বাজারের বিভিন্ন অলিগলি ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। এছাড়া হরতালের সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ মাহাবুবুর রহমান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ রফিক, কৃষকলীগের সভাপতি জাপান বড়–য়া, আওয়ামী লীগ নেতা অজাহা ত্রিপুরাসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সকাল থেকে বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং ও বিক্ষোভ মিছিল করতে দেখা গেছে। লামা-ফাঁসিয়াখালী, লামা-আলীকদম, লামা-সুয়ালক ও লামা-রুপসীপাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে হরতাল সমর্থকরা ব্যারিকেড দেয়। হরতালের কারণে কোথাও কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে যান বাহন চলাচল না করার কারণে জনসাধারণ দুর্ভোগে পড়েন। ব্যাংক-বীমাসহ সকল সরকারি বেসরকারি কার্যালয়ে কার্যক্রম ছিল ঢিলেঢালা। দুপুর ১২টার পর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ বিষয়ে লামা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আমিনুল হক জানান, সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে উপজেলার সব কটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ টহলে ছিল। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
প্রসঙ্গত, ২২ মে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বান্দরবান পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার ও পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চথোয়াইমং মারমাকে বালাঘাটার চড়ুইপাড়া এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। তিনদিন পর শনিবার (২৫ মে) দুপুরে জর্ডান পাড়ার একটি পাহাড় থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আলীকদম: বান্দরবান সদর উপজেলার সাবেক পৌর কমিশনার ও পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চথোয়াই মং মার্মাকে অপহরণের পর হত্যার প্রতিবাদে আলীকদম উপজেলায় অর্ধদিবস হরতাল পালিত হয়েছে। বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালের সাথে সমন্বয় করে শনিবার সন্ধ্যায় হরতালের সমর্থনে উপজেলায় মাইকিং ও বিক্ষোভ করেছে আলীকদম উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। হরতালের কারণে রবিবার সকাল থেকে টার্মিনাল হতে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। বড় যানবাহনের পাশাপাশি উপজেলার অভ্যন্তরে চলা অটোরিক্সা ও টমটমের উপস্থিতিও ছিলোনা রাস্তায়। উপজেলার প্রত্যেকটি বাজার ও স্টেশনের দোকানপাট ছিলো বন্ধ। ব্যাংক, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কার্যালয়ের কার্যক্রম ছিলো ঢিলেঢালা।


এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মংব্রাচিং মার্মা ও সাধারণ সম্পাদক ধুংড়িমং মার্মার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের স্ব-স্ব অবস্থানে থেকে হরতাল পালন করতে দেখা গেছে। হরতাল চলাকালে নেতাকর্মীরা রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। তবে হরতালের কারণে কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিক উল্লাহ জানান, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে উপজেলার প্রতিটা পয়েন্টে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
ছবি- রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ইফতার মাহফিলে বক্তব্য রাখছেন বশির উদ্দিন খান, জমির উদ্দিন পারভেজ, ইউপি চেয়ারম্যান লায়ন সাহাবুদ্দিন আরিফ, সৈয়দ আবদুল জব্বার সোহেল, এডভোকেট দীপক দত্ত ও আবদুল মালেক।

বান্দরবান: পাহাড়ে সম্প্রীতি বিনষ্টকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও রাজবিলা এলাকার তাইংখালিতে সেনাক্যাম্প স্থাপন ও চথোয়াই মংকে হত্যার প্রতিবাদে বান্দরবানে মানববন্ধন করেছে সামাজিক সংগঠন সচেতন পার্বত্যবাসী। রোববার সকালে বান্দরবান প্রেসক্লাবের সামনে সচেতন পার্বত্যবাসী বান্দরবান জেলার সভাপতি মো. মিজানুর রহমান আখন্দ এর সভাপতিত্বে এসময় মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন মো. রেজাউল করিম, আব্দুল­াহ আল মামুন, সদস্য সচিব শফিকুর রহমান প্রমুখ।
এদিকে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি পাহাড়ে গুম খুন অপহরণ মহামারী আকার ধারণ করেছে, সম্প্রতি বান্দরবানে হত্যাকান্ড বেড়ে গেছে আর এসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিরসনে রাজবিলা এলাকার তাইংখালিতে সেনাক্যাম্প স্থাপন করা জরুরি। এসময় বক্তারা সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার পূর্বক বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শান্তি নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।