লামায় ৩৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

86

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন পাহাড় ও ঝিরি থেকে অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথর জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার বৈদ্যছড়া হয়ে পাশ্ববর্তী উখিয়ার পাতাবাড়ী এলাকায় নিয়ে পাচারের জন্য মজুদ রাখা এ সব পাথর জব্দ করেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান চৌধুরী। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের রেজু খালের আগা সহ বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে আসছে বশির সিন্ডিকেট। এইসিন্ডিকেট গত দুই বছর যাবত প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে লক্ষ লক্ষ ঘনফুট পাথর পাচার করছে। সম্প্রতি সোনাইছড়ি থেকে উত্তোলন করা পাথর প্রশাসনের নজর এড়াতে পাশর্^বর্তী পাতাবাড়ী এলাকায় নিয়ে মজুদ রাখা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে নাইক্ষ্যংছড়ি ও উখিয়া নির্বাহী কর্মকর্তা পুলিশী সহায়তায় অভিযান চালিয়ে এ সব পাথর জব্দ করেন।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন কচি বলেন- সোনাইছড়ি থেকে অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথর কৌশলে পাশের উপজেলায় নিয়ে মজুদ রাখার খবর পেয়ে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে খবর দিলে এসব পাথর জব্দ করা হয়। এ সময় নাইক্ষ্যংছড়িতে পরিবেশ বিধ্বংসী কাজে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।
লামা : অবশেষে বান্দরবানের লামা উপজেলার বিভিন্ন পাহাড় ও ঝিরি থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারী দুই শিক্ষকসহ ৩৯ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে থানায় পৃথক দুটি এজাহার দাখিল করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। মঙ্গলবার বিকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের বান্দরবান শাখার পরিদর্শক নাজনীন সুলতানা নীপা বাদী হয়ে এজাহার দাখিল করেন। এজাহারে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বনপুর এলাকার ৯জন ও কাঁঠালছড়া এলাকার ১৭জন পাথর ব্যবসায়ীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১৩ জন ব্যবসায়ীকে বিবাদী করা হয়। এতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক ও একজন সহকারী শিক্ষকও রয়েছেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত ৬ মাস ধরে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের কাঁঠালছড়া পাড়া, ইয়াংছা, বনপুর, গজালিয়া ইউনিয়নের মিজঝিরি, আকিরাম, গতিরামপাড়াসহ ফাইতং ও সরই ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থান থেকে স্থানীয় ও বাহিরাগত একটি সংঘবদ্ধ চক্র কোন ধরনের অনুমতি ছাড়াই নির্বিচারে পাহাড় ও ঝিরি খুঁড়ে পাথর উত্তোলন করে আসছে। ওই চক্রটি ইতিমধ্যে ১২ লক্ষাধিক ঘনফুট পাথর উত্তোলন করে নিয়ে যায়। আরও প্রায় ৫ লক্ষ ঘনফুট পাথর উত্তোলন করে পাচারের জন্য মজুদ করে। এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে প্রশাসনের টনক নড়ে। পরে স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর যৌথ অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫ লক্ষ ঘনফুট পাথর জব্দ করে এবং অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নেয়।
পাথর উত্তোলনকারী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এজাহার দাখিলের সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, এজাহারে উল্লেখিত বিবাদীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।