লামায় বন্য হাতির মৃত্যু দুর্ঘটনা নাকি হত্যা

68

বান্দরবানের লামা উপজেলায় একটি বাচ্চা বন্য হাতির মৃত দেহ পাওয়া গেছে। উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা এলাকার ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি মৎস্য প্রকল্পের পানিতে ভাসমান অবস্থায় হাতিটি পাওয়া যায়। মৃত হাতির বয়স আনুমানিক তিন থেকে সাড়ে তিন বছর হবে। খবর পেয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস.এম কাওচার, ইউনিয়ন পরিষদ চেযারম্যান মো. জাকের হোসেন মজুমদার, উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেন ও অংচিং মার্মাসহ পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এদিকে কেউ বলছেন পানিতে পড়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে, আবার কেউ কেউ বলছেন বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মারা গেছে হাতিটি। বর্তমানে এ নিয়ে সর্ব মহলে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র জানায়, স্থানীয় সেলিমুল হক চৌধুরী বহু কায়িক শ্রম ও অর্থ ব্যয়ে ইয়াংছা হিমছড়ি এলাকায় একটি মৎস্য ও রাবার বাগান গড়ে তুলেন। সোমবার দুপুরে প্রকল্পের পানিতে একটি বন্য হাতির মৃতদেহ ভাসতে দেখে বন বিভাগে খবর দেন তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন স্থানীয় অধিবাসী জানান, বিভিন্ন সময় হাতির পাল ওই বাগানে হানা দিয়ে ক্ষয়ক্ষতি করে থাকে। এ কারণে বাগানে প্রায় সময় বিদ্যুতের ফাঁদ পেতে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করতেন প্রকল্পের মালিক। গত রবিবার দিনগত রাতে ৩০-৩৫টি বন্য হাতি খাবারের সন্ধানে প্রকল্পে ঢুকে পড়ে বাগানের ক্ষতিসাধণ করে। এ সময় একটি বাচ্চা হাতি পাতানো বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। পরে এটিকে পানিতে ফেলে দেয়া হয়। উল্লেখ্য যে, একই প্রকল্পে ২০০৪ সালে আরো একটি বন্য হাতির মৃত্যু হয়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রকল্পের মালিক সেলিমুল হক চৌধুরী ও জাহানারা আরজু বলেন, সম্ভবত হাতির বাচ্চাটি রোগাক্রান্ত ছিল। তাই চলাচলের সময় পানিতে পড়ে আর ওঠতে পারেনি। এতে হাতিটি মারা যায়।
তিনি আরো বলেন, সেখানে কখনো বিদ্যুতের ফাঁদ পাতানো হয়নি। একটি মহল বিষয়টি নিয়ে মিথ্যা রটাচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুয়েল মজুমদার বলেন, মৃত হাতিটির গায়ে ফোসকার চিহ্ন দেখা গেছে। এটির প্রাথমিক সুরতহাল ও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য সেগুলো চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে হাতিটিকে হত্যা করা হয়েছে নাকি, স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। বুনোহাতির মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস.এম কাওচার জানান, প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় লামা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।