লামায় চৌহদ্দী পরিবর্তন করে কৃষকের জমি নামজারী করার পাঁয়তারা

40

বান্দরবানের লামা উপজেলায় চৌহদ্দী পরিবর্তন করে চার কৃষকের দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় জমি নামজারী করার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার সকালে পৌরসভা এলাকার সাবেক বিলছড়ি গ্রামের কৃষক এরশাদ আলী সাংবাদিকদের কাছে লিখিতভাবে এ অভিযোগ করেন। প্রতিপক্ষ মোহাম্মদ আশ্রাব ও তার স্ত্রী, সন্তান কর্তৃক সৃজিত নামজারী মামলাটি বাতিলসহ হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ক্ষতিগ্রস্ত এরশাদ আলী পরিবার। অভিযোগে জানা যায়, ১৯৮৫ সালে স্থানীয় মো. আলী মিয়া এবং শফি আলমের কাছ থেকে এফিডেভিট মূলে (হলফনামা নং- ২২৩/৮৫ ও মিউটেশন মামলা নং-৯৫/৮৫ মূলে) ২৯৩নং ছাগল খাইয়া মৌজার সাবেক বিলছড়িস্থ ৩৬২ ও ১১৭নং হোল্ডিং এর ৪ একর ৪০শতক জমি কৃষক মো. এরশাদ আলী, মো. রৌশন আলী, আবদুল ওহাব ও আলী হোসেন ক্রয় করেন। সেই থেকে এরশাদ আলীগং ওই জমিতে বিভিন্ন ফলজ বনজ বাগান ও বসতঘর সৃজন করে ভোগ করে আসছেন।
পরে বিক্রেতা আলী মিয়া মারা যাওয়ার কারনে জায়গাটি এরশাদ আলীগংদের নামে নামজারি করা যায়নি। ২০০৮ সালের ৬ জুলাই ১১৭নং হোল্ডিং থেকে ক্রয়সূত্রে মালিক মো. এরশাদ আলীগং ৪০শতক জমি পাশের মৃত আবদুল শহিদের ছেলে মোহাম্মদ আশরফের নিকট বিক্রি করেন (যার দলিল নং-২০/১৯৯৬)। যাহার চৌহর্দ্দি দেয়া হয় উত্তরে- ঝিরি, দক্ষিণে নিজ ভূমি, পূর্বে ঝিরি, পশ্চিমে আবুল হোসেনের জমি। কিন্তু ক্রেতা মোহাম্মদ আশরফ বিক্রেতা মো. এরশাদ আলীগংদের সরলতা ও অজ্ঞতার সুযোগে প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে তার নামীয় অন্য একটি হোল্ডিং (আর/১০৪নং) এর চৌহর্দ্দি সংশোধনের নাম করে একটি মিস (মোকদ্দমা নং-৮১(ডি)/০৫) মামলা রুজু করেন। যা পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত স্থগিত করে দেন। এতে পেরে না ওঠে মো. আশরফ পূণরায় প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে একই হোল্ডিং এর চৌহর্দ্দি উল্লে­খ করে স্ত্রী সন্তানের নিকট বিক্রি দেখায়।
পরবর্তীতে আবার স্ত্রী সন্তানের নামে ওই জমি নামজারী করার জন্য (মামলা নং-৪১০/১৩) আরেকটি মামলা রুজু করেন। যাহার চৌহদ্দী দেখান- উত্তরে- ঝিরি, দক্ষিণে-বিক্রেতা নিজ, পূর্বে-ঝিরি, পশ্চিমে- খতিয়ানের জমি। নামজারি মামলার বিষয়টি জানতে পেরে মো. এরশাদ আলীগং গত ২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর আশরফ কর্তৃক সৃজিত সাফ কবলা দলিল সম্পাদনে আপত্তি জানায়। স্থানীয় মো. ইলিয়াছ, ইউছুফ, রুহল আমিন ও আছমা আক্তার জানান, মূলত মো. আশ্রব সাবেক বিলছড়ি এলাকার এরশাদ আলীগংদের কাছ থেকে ৪০শতক জমি কিনেছিলেন। এখন চৌহদ্দি পরিবর্তন করে অন্য একটি হোল্ডিং বসিয়ে এরশাদ আলীগংদের চার একর চল্লিশ শতক জমি তার বলে দাবি করছেন। যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এদিকে মো. আশ্রব বলেন, আমি আমার জমিতে আছি। এরশাদ আলীগংদের কোন কাগজপত্র নেই।
ক্ষতিগ্রস্ত এরশাদ আলী বলেন, মোহাম্মদ আশরফের হয়রানি মূলক মামলা মোকাদ্দমার কারণে আজ আমরা প্রায় সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েছি। এমনকি এর জের ধরে মোহাম্মদ আশরফ আমাদেরকে জীবন নাশেরও হুমকি দিয়েছেন। হয়রানি মূলক মামলা থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেন ক্ষতিগ্রস্ত এরশাদ আলী। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জাকির হোসেন বলেন, ১৯৮৫ সালে এরশাদ আলীগং স্থানীয় আলী মিয়া ও শফি আলমের কাছ থেকে ৪একর৪০শতক জমি কিনে ভোগ করে আসছেন। সম্প্রতি মো. আশ্রব ওই জমি তার বলে দাবি করে স্ত্রী সন্তানদের নামে নামজারির জন্য আবেদন করেন।