লামায় কৃষকের ২০ বছরের জমি জবর দখলের চেষ্টা

39

বান্দরবানের লামা উপজেলার এক প্রান্তিক কৃষকের দীর্ঘ ২০ বছরের ভোগ দখলীয় জমিসহ সৃজিত বাগান জবর দখল চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, জমি নিজেদের দখলে দেখাতে চেয়ারম্যানের নির্দেশ অমান্য করে তড়িগড়ি করে ঘর নির্মাণের চেষ্টাও করে প্রতিপক্ষ। জনৈক ওসমান গণি ও মো. ইব্রাহিম লোকজন নিয়ে জবর দখলের উদ্দেশ্যে জমিতে ঘর নির্মাণের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেন কৃষক সোহরাব হোসেন।
লামা সদর ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি নকসার ঝিরি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রতিপক্ষ কর্তৃক জবর দখল চেষ্টার হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন কৃষক সোহরাব হোসেন। জানা যায়, উপজেলার ২৯৫নং লামা মৌজার আওতায় নকসার ঝিরি এলাকায় বশির উদ্দিনের ছেলে মো. সোহরাব হোসেনের নামে ক্রয় সূত্রে ১৮৩নং হোল্ডিং মূলে ৫ একর ও ৮৪নং হোল্ডিং মূলে ৪.৮০ একর পাহাড়ি জমি রয়েছে। ওই জমিতে বহু কায়িক ও অর্থ ব্যয়ে বিভিন্ন ফলদ ও বনজ বাগানসহ খামার ঘর সৃজন করে গত ১৮-২০ বছর ধরে ভোগ করে আসছেন সোহরাব হোসেন। সম্প্রতি চাঁন মিয়া ও ইব্রাহিম নামের দুই ব্যক্তি আর/৯১নং হোল্ডিংয়ের একটি কাগজ দেখিয়ে ওই জমি তাদের বলে দাবী করেন। এ নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নিকট একটি অভিযোগ করা হয়। এ প্রেক্ষিতে আগামী সোমবার বিরোধ মিমাংশার লক্ষে জায়গা পরিমাপ পরিচিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত নেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন। কিন্তু ওসমান গণি ও ইব্রাহিম জমি তাদের দখলে দেখানোর জন্য পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে গত শনিবার সকালে লোকজন নিয়ে জমির এক পাশে তড়িগড়ি করে ঘর তুলতে যান। খবর পেয়ে সোহরাব হোসেন গং ঘর তুলতে বাঁধা প্রদান করেন। পরে এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ঘর ভাংচুরের মত একটি মিথ্যা ঘটনা রটিয়ে বিভ্রান্তির চেষ্ঠা করেন প্রতিপক্ষ ওসমান গণি ও ইব্রাহিম। এ বিষয়ে স্থানীয় অধিবাসি রফিক আলী, আবুল কালাম, মো. ইউছুপ ও আলাল উদ্দিন বলেন, ২০ বছর আগে ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে সোহরাব হোসেন জমিতে বিভিন্ন ফলদ ও বনজ বাগান ও জমিতে ফসল আবাদ করে ভোগ করে আসতে দেখেছি। কিন্তু সম্প্রতি ওসমান গনি ও ইব্রাহিম একটি আর হোল্ডিংয়ের একটি কাগজ দেখিয়ে জমি তার বলে অযুক্তিক দাবি তুলেন। একই কথা জানালেন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আক্তার কামাল। সংশ্লিষ্ট মৌজা হেডম্যান বলেন, সোহরাব হোসেনের জমিতে না যাওয়ার জন্য ওসমান গণি ও মো. ইব্রাহিমকে নিষেধ করেছিলাম। কারণ এ জমি ১৮-২০ বছর ধরে সোহরাব হোসেন ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে আবাদ করে ভোগ করে আসছেন। কিন্তু তারা নিষেধ অমান্য করে জমিতে গিয়ে ঘটনার সৃষ্টি করে। এদিকে অভিযুক্ত ওসমান গণি ও মো. ইব্রাহিম বলেন, আমরা কারো জায়গায় ঘর তুলতে যাইনি। বরং সোহরাব হোসেন আমার জমির ওপর নির্মিত ঘর ভেঙে দিয়েছে। তাছাড়া সোহরাব হোসেনের অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। লামা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন জানান, জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে ওসমান গনি প্রতিপক্ষ সোহরাব হোসেনকে বিবাদী করে পরিষদে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এ প্রেক্ষিতে সার্ভেয়ার দ্বারা জায়গা পরিমাপ পরিচিহ্নিত করার আগে উভয় পক্ষকে বিরোধীয় জমিতে না যাওয়ার জন্য নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু উভয় পক্ষ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমিতে যাওয়ার কারণে এসব ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি মিমাংশা করার চেষ্টা করছি।