র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধ চকরিয়ায় দুই ডাকাত নিহত

3

চকরিয়া প্রতিনিধি

চকরিয়ায় র‌্যাবের সঙ্গে আবু তৈয়ব বাহিনীর সশস্ত্র সন্ত্রাসী ও ডাকাতদলের ঘণ্টাব্যাপী বন্দুকযুদ্ধে ডাকাতদলের দুই সদস্য নিহত হয়েছে। এ সময় শতাধিক রাউন্ড গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। গতকাল সোমবার ভোরে চিংড়ি জোন হিসেবে পরিচিত উপজেলার পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের ডেবডেবী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বন্দুকযুদ্ধের এক পর্যায়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা পিছু হটলে তাদের ফেলে যাওয়া দুই সন্ত্রাসীকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্রসহ আটক করে র‌্যাব। র‌্যাবের দাবি, বন্দুকযুদ্ধে নিহত দুইজন ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক দুইজন সবাই সশস্ত্র সন্ত্রাসী ও ডাকাতদলের সদস্য।
বন্দুকযুদ্ধে নিহত বাবুল দাশ (৩৮) নামে একজনের নাম জানা গেলেও অন্যজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। নিহত বাবুল দাশ উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট ছগিরশাহ কাটা এলাকার মৃত নারায়ন দাশের ছেলে। এছাড়া আটক ডাকাতদলের দুই সদস্যরা হলেন পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নজির আহমদের ছেলে আবুল কালাম (৪৫) ও লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের মল্লিক ছোবহান গ্রামের আবদুর রউফের এর ছেলে শাহনেওয়াজ টিপু (৫০)।
সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের ডেবডেবী এলাকায় লিজমূলে বৈধ মালিক মোয়াজ্জেম হোসাইন শাওন নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন ও দখলীয় ৫৫০ একরের একটি বড় চিংড়ি প্রকল্প রয়েছে। ওই চিংড়ি প্রকল্পটি দীর্ঘদিন ধরে জোরপূর্বক জবর-দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন কক্সবাজার ও চকরিয়া কেন্দ্রিক জনৈক আবু তৈয়বের নেতৃত্বে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। তারই সূত্র ধরে রবিবার দিবাগত রাত একটার পর থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ অন্তত শতাধিক সশস্ত্র ডাকাত-সন্ত্রাসী ওই চিংড়ি প্রকল্পে অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) ভোররাতে ওই চিংড়ি প্রকল্প এলাকায় অভিযান চালায় র‌্যাব। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী ও ডাকাতদলের সদস্যরা প্রথমে র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে র‌্যাবও আত্মরক্ষার্থে তাদের প্রতি পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। এ সময় উভয় পক্ষের মাঝে শতাধিক রাউন্ড গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর শেখ ইউসূফ আহমেদ বলেন, পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের ডেবডেবী এলাকার একটি চিংড়ি প্রকল্পে বেশকিছু অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও ডাকাতদলের সদস্যরা অবস্থান নেয়ার খবর পেয়ে সোমবার ভোর রাতে ওই এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সশস্ত্র ডাকাত দলের সদস্যরা প্রথমে র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুাড়লে র‌্যাবও আত্মরক্ষার্থে তাদের প্রতি পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। একপর্যায়ে সশস্ত্র ডাকাত দলের সদস্যরা পিছু হটলেও ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ সময় ডাকাতদলের আরো দুই সদস্যকে আটকের পর তাদের কাছ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ গুলি ও গুলির খোসা এবং বেশকিছু ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
মেজর শেখ ইউসূফ আহমেদ আরও বলেন, পরে গুলিবিদ্ধ দুইজনকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে চকরিয়া থানার একদল পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে নিহত দুইজনের লাশ তাদের হেফাজতে নিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য তাদের মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণসহ অস্ত্র-গোলাবারুদসহ আটককৃতদের থানায় সোপর্দের প্রস্তুতি চলছে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত দুইজনের মধ্যে একজনের নাম পরিচয় জানা গেছে। তার নাম বাবুল দাশ (৩৮)। তিনি চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট ছগিরশাহ কাটা এলাকার মৃত নারায়ন দাশের ছেলে। নিহত অন্যজনের পরিচয় জানা যায়নি। ওসি আরও বলেন, অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ আটক দুইজনকে এখনো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেনি ব্যাব। তবে এ ব্যাপারে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।