রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধানে একমত চীন

45

রোহিঙ্গা সংকট দ্রুত সমাধানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একমত হয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দুই নেতা বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুকে আর ফেলে রাখা যাবে না। চীন সফররত শেখ হাসিনার সঙ্গে বেইজিংয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘দিয়াওইয়ুনতাইয়ে’ গতকাল শুক্রবার বিকেলে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জিনপিং এ ঐকমত্য প্রকাশ করেন। পরে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন। খবর বাংলানিউজের। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, দুই নেতা (চীনের প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী) একমত হয়েছেন যে এটার (রোহিঙ্গা সংকট) দ্রুত সমাধান করতে হবে। এটাকে আর আর ফেলে রাখা যাবে না। দুই বছর হয়েছে চুক্তি হয়েছে। সুতরাং ওই ব্যাপারেও কোনো দ্বিমত নেই।
রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার মধ্যে এর সমাধান রয়েছে- প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে একমত হয়েছেন জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সমাধান কিভাবে হবে সেটাতেও দ্বিমত নেই যে, এদের নিজেদের দেশে মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে। দুই নেতা এটাও সম্মত হয়েছেন যে, দুই দেশের প্রতিনিধিদল একসঙ্গে কাজ করবে। তারাও মিয়ানমারের ওপর তাদের ‘গুড উইল’ ব্যবহার করবে।
চীনের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘দিয়াওইয়ুনতাইয়ে’ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকপররাষ্ট্র সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন বাংলাদেশ এখন ১ দশমিক ১ মিলিয়ন (প্রায় ১১ লাখ) রোহিঙ্গা আশ্রয় দিয়েছে। এটা বাংলাদেশের জন্য একটা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে এনভারনমেন্টাল (পরিবেশগত) চ্যালেঞ্জ, নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ, পাচার সমস্যা আছে। দ্রূত যেন রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে, তার জন্য চাইনিজ সরকার এবং প্রেসিডেন্টের গুড উইল আমরা আশা করছি।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখার বিষয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট আশ্বাস দিয়েছেন জানিয়ে শহীদুল হক বলেন, চাইনিজ প্রেসিডেন্ট এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেছেন যে, চায়না আগেও এ ব্যাপারে মিয়ানমার, বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছিল এবং এখনো কাজ করে যাবে। তাদেরও উদ্দেশ্য যেন রোহিঙ্গারা দ্রুত তাদের নিজেদের দেশে ফিরে যেতে পারে। সেজন্য ওনারা বলেছেন যে, মিয়ানমারের যে মন্ত্রী আছেন, রোহিঙ্গা বিষয় নিয়ে কাজ করেন, তিনি হয়তো বাংলাদেশ সফরে আসবেন। আশা করা যাচ্ছে হয়তো আরেকটা সম্ভবনা দেখা দেবে।
নির্ধারিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের বাইরেও রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা নৈশভোজের টেবিলেও গড়িয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।
শহীদুল হক জানান, শেখ হাসিনা আরেকটি বিষয় উল্লেখ করেছেন- এই যে রোহিঙ্গারা যেতে চায় না। তাদের মনের ভেতর একটা ভীতি আছে যে, তারা ফিরে গেলে আবার হয়তো তাদের ওপর অত্যাচার হতে পারে। এ বিষয়ে যেন চীন তার গুড উইল ব্যবহার করে। সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে চীনের প্রেসিডেন্টের জবাব তুলে ধরে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, শি জিনপিং বলেছেন- যেহেতু এটা একটা আন্তর্জাতিক অ্যাটেনশনের (মনোযোগ) মধ্যে হচ্ছে সুতরাং এই ধরনের রিপিটেশন (পুনরাবৃত্তি) হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তিনি বলেছেন তাদের পক্ষে যতটা সম্ভব তারা চেষ্টা করবেন। তিনি বলেছেন চীনের কাছে মিয়ানমার-বাংলাদেশ দুই দেশই ঘনিষ্ঠ বন্ধু, কেউ কম, কেউ বেশি নয়। সমান বন্ধু। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে চীন দুই দেশেরই স্বার্থ দেখবে, এটা নিশ্চিত করেছেন।