রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে ভূমিকা রাখতে হবে

44

বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে মিয়ানমারকে ভূমিকা রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ব ব্যাংকের সিইও ক্রিস্টালিনা জর্জিওভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানিয়েছেন। ঢাকার ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে গতকাল বুধবার ‘গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন’ বিষয়ক ঢাকা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শেখ হাসিনা। ওই হোটেলেই তার সঙ্গে দেখা করেন ঢাকা সফররত বিশ্ব ব্যাংকের নির্বাহী প্রধান।
নির্যাতনের মুখে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে ফেরত নেওয়ার আশ্বাস মিয়ানমার দিলেও তাতে কোনো অগ্রগতি নেই।
রাখাইনে নিরাপত্তার সঙ্গে বসবাসের নিশ্চয়তা চায় রোহিঙ্গারা। কিন্তু মিয়ানমার সেই পরিবেশ তৈরিতে গা করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
এজন্য মিয়ানমারকে চাপ দিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ; ফলে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা কথা বলছেন, যার ধারাবাহিকতায় বিশ্ব ব্যাংক নির্বাহী প্রধানের মন্তব্য এল। খবর বিডিনিউজের
ক্রিস্টালিনা জর্জিওভা বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘স্বাধীনতা ও সংগ্রামের প্রতীক’ অভিহিত করেন বলে প্রেস সচিব জানান।
আমি স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলাম, যখন বঙ্গবন্ধুর জাদুকরি নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়, বলেন জর্জিওভা। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মানুষকে রক্ষা করতে।
বাংলাদেশের গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রসারের প্রশংসা করে জর্জিওভা বলেন, বাংলাদেশে দরিদ্র সীমা ২১ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাসও তিনি দিয়েছেন বলে প্রেস সচিব জানান।
বিশ্ব ব্যাংকের নির্বাহী প্রধান বাংলাদেশের জনসংখ্যাকে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে নিয়ন্ত্রণ এবং বাণিজ্য প্রসারে জলপথ ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশে জলবায়ু
অভিযোজন কেন্দ্র
স্থাপনের প্রস্তাব

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য বাংলাদেশে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছেন গেøাবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশনের চেয়ারম্যান ও জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন। মঙ্গলবার সকালে ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি এই প্রস্তাব দেন বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইনসানুল করিম জানিয়েছেন। এই সাক্ষাৎ পর্বে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের প্রেসিডেন্ট হিলদা সি হেইনও ছিলেন।
পরে হোটেলে ‘গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন’র ঢাকা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বান কি মুন। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজন ও এর প্রভাব মোকাবেলার ধারণার উন্নয়নে কাজ করে ‘গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন’। খবর বিডিনিউজের
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ‘অত্যন্ত ভালো’ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে বান কি মুন বলেন, ‘আমরা ঢাকায় একটা অভিযোজন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই’।
প্রেস সচিব ইনসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনের ক্ষেত্রে ‘দৃষ্টান্ত’ বলে মন্তব্য করেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান। তার প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সাইক্লোন সেন্টার স্থাপন করেছিলেন। বহুমুখী সাইক্লোন সেন্টারগুলোতে শুধু মানুষ নয় পশুপাখিদেরও নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা ছিল’।
সাক্ষাতের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবুল মোমেন, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।