রোহিঙ্গা ও ইয়াবা ঠেকাতে তৎপরতা বাড়াবে বিজিবি

35

সেন্টমার্টিনসহ অন্যান্য এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করার কথা বলেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা এবং ইয়াবার চালান রোধে বিজিবির তৎপরতা বাড়ানো হবে। পাশাপাশি সীমান্ত সুরক্ষায় যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় জলপথে নৌযান বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে বিজিবির। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে সেন্টমার্টিন বিওপির জন্য নির্ধারিত জমি পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
এরআগে, তিনি একই দিন দুপুর ১টা ২৪ মিনিটের দিকে হেলিকপ্টারযোগে সেন্টমার্টিনে পৌঁছান। সেখানে তিনি মোটরসাইকেল চালিয়ে বিজিবির বিভিন্ন সীমান্ত চৌকি পরিদর্শন করেন।
এ সময় সেন্টমার্টিনকে মিয়ানমারের অংশ দাবি করার বিষয়ে বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, হয়তোবা মিয়ানমার অজ্ঞতার কারণে এটি বলছে। আন্তর্জাতিক সীমানা রেখা অনুযায়ী সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের। সেন্টমার্টিনের সুরক্ষায় টহল জোরদার করা হবে, সে লক্ষ্যে কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তের সড়কের কাজ চলছে। সীমান্ত দিয়ে কোনও রোহিঙ্গা ঢুকতে দেওয়া হবে না। এছাড়া বিজিবির তৎপরতায় চোরাচালানসহ বিভিন্ন অপরাধ অনেকটাই কমে এসেছে।
মিয়ানমার সীমান্তরক্ষীরা ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়। তারাও চেষ্টা করছে ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ করতে।
তিনি দাবি করেন, নাফ নদী দিয়ে ইয়াবা পাচার রোধে অনেক সফলতা পেয়েছে বিজিবি, ইয়াবা পাচার কমে এসেছে। আগের তুলনায় ইয়াবা পাচার নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পাশাপাশি ইয়াবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মিয়ানমারের সঙ্গে স¤প্রতি উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার রামু সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল মাইন উদ্দিন চৌধুরী, বিজিবি কক্সবাজার রিজিয়ান কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজেদুল রহমান, সেক্টর কমান্ডার মনজরুল হাসান খান, টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সাল হাসান খান, অপারেশন অফিসার মেজর রুবায়াৎ কবীরসহ কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তারা।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সাল হাসান খান বলেন, প্রথমবারের মতো সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিদর্শন করেছেন মহাপরিচালক। এসময় সীমান্ত নিরাপত্তা, রোহিঙ্গা ও মাদক ঠেকাতে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন এবং দ্বীপে বিজিবির প্রস্তাবিত জায়গা ঘুরে দেখেন।
বিজিবি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত দ্বীপে বিজিবির কার্যক্রম ছিল। এরপর দ্বীপে কোস্টগার্ড কাযক্রম চালিয়ে আসছিল। দীর্ঘ ২২ বছর বন্ধের পর চলতি বছরে ৭ এপ্রিল কোস্টগার্ডের পাশাপাশি বিজিবিও সেখানে নিয়মিত টহল শুরু করে। সীমান্তের সুরক্ষা ও চোরচালান রোধে সরকার নতুন করে দ্বীপে বিজিবির একটি চৌকি স্থাপনার উদ্যোগ নেয়। এই চৌকি প্রথমবারের মতো পরির্দশনে আসেন বিজিবির মহাপরিচালক।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৭ এপ্রিল সেন্টমার্টিন জুড়ে বিজিবি মোতায়েন করে সরকার। মূলত সেন্টমার্টিনকে মিয়ানমার তাদের দাবি করার পর পরই সেখানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।