রোহিঙ্গার কারণে পরবাসীর মতো হয়ে যাচ্ছে স্থানীয়রা

28

রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সাবাজারের মানুষ কষ্টে আছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়ে উদারতা ও মানবিকতা দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এর মানে এই নয় যে রোহিঙ্গাদের আমরা স্থায়ীভাবে আশ্রয় দিয়েছি। রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে সাহায্য করেছিলাম, কিন্তু আজ আমরাই মানবিক সংকটে রয়েছি। বিশেষ করে কক্সবাজারের মানুষেরা রোহিঙ্গাদের কারণে আজ অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে, উখিয়া-টেকনাফের মানুষ পরবাসীর মতো হয়ে যাচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কক্সবাজার শহীদ দৌলত ময়দানে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, এজন্য আমাদের পরিবেশ, অর্থনীতি, পর্যটন ও জীববৈচিত্র আজকে হুমকির সম্মুখিন। তাই সবকিছু বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়সহ চীন, ভারতকে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা উচিত। আমরা বিশ্ববাসীর কাছে আহবান জানাবো মিয়ানমারের ওপর চাপ আরও জোরদার করার জন্য। তাদের নাগরিকদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে মিয়ানমার নানা কৌশল অবলম্বন করছে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিয়ে তারা পাশ কাটিয়ে যেতে চায়। তাদের এই বোঝা আমরা আর বহন করতে চাই না। এই বোঝা বহন করার দায়িত্ব বিশ্বের। আমাদের এই অস্থিরতা ও বোঝা থেকে মুক্তি দিতে পারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। আমরা কারও দয়া ও সাহায্য চাই না। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চাই।
বিএনপি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বিএনপি তাদের দলে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে দাবি করলেও অনেক আগেই তা ভাটা পড়েছে। বিএনপি’র কাছে গণজোয়ার এখন দিবা স্বপ্ন। বিএনপির আন্দোলনেও ভাটা, নির্বাচনেও ভাটা। জোয়ার তারা দেখেননি, ভবিষ্যতেও দেখতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৎ সাহসিকতার কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রথমে আপন ঘরে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন তিনি। আপন ঘরে, আপন লোকদের শাস্তি দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিচ্ছেন দুর্নীতি করলে, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি করলে কারও রেহাই নেই। দুর্নীতিকে না বলতে হবে, সন্ত্রাসকে না বলতে হবে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চলতে হবে বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করে এবং শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দুঃসময়ের কর্মীরাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রাণ। ত্যাগী কর্মীদের উপেক্ষা করলে আওয়ামী লীগ বাঁচবে না। আওয়ামী লীগ না বাঁচলে বাংলাদেশের-মুক্তিযুদ্ধ বাঁচবে না। আওয়ামী লীগ না বাঁচলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র বাঁচবে না। আওয়ামী লীগ না বাঁচলে বাংলাদেশের উন্নয়ন বাঁচবে না। আওয়ামী লীগ না বাঁচলে বাংলাদেশের অর্জন হবে না। তাই যে কোনও মূল্যে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতার অহঙ্কার পতনের কারণ যেন না হয়। ক্ষমতা যেন আমাদের নেতাকর্মীদের বিনয়ী করে, অহঙ্কারী নয়। বিনয়ী যত হবেন তত আপনি বড় হবেন। বিনয়ী হলে জনগণ আরও ভালোবাসবে।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মীসভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা সদর-রামু আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি কানিজ ফাতেমা মোস্তাক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানসহ নেতাকর্মীরা।