রোহিঙ্গাদের ফেরাতে কৌশলী অবস্থানে সরকার : কাদের

27

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ফেরাতে সরকার কৌশলী অবস্থান নিয়েছে। তিনি বলেন, এখানে ব্যর্থতার কোনো বিষয় নেই। এখানে কৌশলগত বিষয় রয়েছে। অনেক সময় দু’পা এগিয়ে এক পা পিছিয়ে যেতে হয়। এটিকে কূটনীতিক ব্যর্থতা বলা যাবে না। রোহিঙ্গারা কক্সবাজার সীমান্ত অতিক্রম করে আসার পর মিয়ানমার সরকার সবচেয়ে বেশি চাপ অনুভব করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মিয়ানমার সরকার সেখানে পরিবেশ সৃষ্টি করেনি, নিরাপত্তা সৃষ্টি করেনি, সিটিজেনশিপের মতো বিষয়টি সুরাহা করতে পারেনি; এজন্য তাদের বিশ্বাস করতে পারেনি রোহিঙ্গারা।তারা অত্যাচারিত নির্যাতিত হয়েছে। এর দায় মিয়ানমার সরকারকে নিতে হবে। সেজন্য আমরা যুদ্ধের পথে যাবো না, আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখবো। সেই কৌশলে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা।
তিনি গতকাল রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশন মিলনায়তেনে বিআরটিসি শ্রমিক-কর্মচারী লীগের শোক দিবসের আলোচনা সভায় এ কথা বলেন।
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আবদুল কাদেরের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান , বিআরটিসির চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভুইয়া , জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ প্রমুখ। খবর বাসস’র
সেতুমন্ত্রী বলেন, সবকিছু মিলিয়ে জাতিসংঘ ইউরোপসহ আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে শেখ হাসিনা সরকার যতটা কূটনীতিক সাফল্য অর্জন করেছে এটা অন্য কোনো দেশে সম্ভব হয়নি। এখানকার সমস্যাটা জটিল। এই জটিলতার মধ্যে যুদ্ধ পরিহার করে ঠান্ডা মাথায় যুদ্ধের উস্কানির মধ্যে যুদ্ধের পথে না গিয়ে শান্তির মাধ্যমে আলাপ-আলোচনা করে এর সমাধান করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, আজকের দিনে যুদ্ধের পথে গিয়ে জয়ী হওয়া যাবে না। শান্তিকে জয় করতে হবে। এই লোকগুলোকে সম্মানের সঙ্গে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ফেরত পাঠাতে হবে। সেজন্য চেষ্টা চলছে।
আজকে যারা বলেন এখানে কূটনৈতিক প্রয়াস ব্যর্থ হয়েছে, তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি বলবো তাদের এটা বিগ মিসটেক। সরকারের কুটনৈতিক প্রয়াস এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এই ব্যাপারে আমাদের মনে রাখতে হবে মিয়ানমারেরও বন্ধু আছে এবং শক্তিশালী বন্ধু আছে।
রোহিঙ্গাদের দীর্ঘমেয়াদে অবস্থান কক্সবাজার-টেকনাফ এলাকার পর্যটনসহ সব বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি উলে¬খ করে মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের লালন পালন আশ্রয় দেয়ায় আমাদের ট্যুরিজম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ইকোলজি অ্যফেকক্টটে হচ্ছে। আমাদের ইকোনমি ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছে। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত যা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে, সেই পর্যটন শিল্প ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্নীতিমুক্ত না হলে বিআরটিসি লাভের মুখ দেখবে না। লাভের গুড় এখানে পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলে। লাভের গুড় যখন পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলে, তখন লোকসান ছাড়া কিছুই হবে না। যারা ওপরে আছেন ভাগাভাগি তারাই করেন। বিআরটিসিকে লাভজনক করতে হবে। এর জন্য আমি সবার সহযোগিতা চাচ্ছি। আমি বিআরটিসির ব্যাপারে কঠিন হতে চলেছি।
বিআরটিসি থেকে দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধ করা হবে। নতুন গাড়িগুলো এসে বহর আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। আপনারা সহযোগিতা করলে বিআরটিসিকে লাভবান করা সম্ভব। এই প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক করার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করবো।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে প্রথম দিকে প্রক্রিয়ায় একটু ধীরগতি থাকলেও চেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ব্যাপারে কারো শিথিলতা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি মনিটরিং করছেন। আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। শুধু শোকের মাস পালন করছি না।