‘রোহিঙ্গাদের কারা সনদ দেয় চিহ্নিত করতে হবে’

35

রোহিঙ্গা ইস্যুতে একের পর এক গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদের কারণে নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা অযথা হয়রানি হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম। অথযা যাতে আমাদের অফিসার যারা কাজ করছে তাদের হয়রানি করা না হয়। আমাদের অফিসারদের চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কালকে তারা আমাকে এরকমও বলেছে, সুইসাইডাল নোট দিয়ে দিব। গতকাল চট্টগ্রাম সার্কিজ হাউজে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা কমিটির এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ভোটার করায় কারা কারা জড়িত তা নিয়ে প্রাথমিক তদন্তের বিষয় আছে। একজন আসামি একাধিক ব্যক্তির নাম বলতেই পারে। ১৬৪ এ অনেককে জড়িয়ে ফেলে। আমি বিচার বিভাগ থেকে এসেছি। ১৬৪ ও ১৬১ ধারা অনেক দেখেছি। আমি কারো দোষ দিয়ে কথা বলতে চাই না। কারো নাম প্রকাশ হলে অথরিটির সাথে কথা বলেন। আমরা নিজেরাও তো তদন্ত করছি।
তিনি প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আমার অফিসাররা বলছে, আমরা এখানে স্যার অভিভাবকহীন অবস্থায় আছি। এটা শুনতে আমার ভালো লাগে নাই। আমার ইচ্ছে হলো আমি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে তুলে নিয়ে চলে গেলাম। আমার ইচ্ছে হলো আমি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে তুলে নিয়ে চলে গেলাম। আমার যেকোনো স্টাফ যার সাথে ভোটার করার কোনো সম্পৃক্ততাই নাই তাদেরকে তুলে নিয়ে গেলাম। এটা হতে পারে না।
নির্ধারিত কাগজপত্র পাওয়ার পরেই ভোটার করা হয় জানিয়ে কবিতা খানম বলেন, এখানে ভোটার করতে জন্মসনদ ডকুমেন্ট লাগে। নাগরিকত্ব সনদ লাগে। এগুলো কোথা থেকে আসে, সে রুটে যেতে হবে। রুটে না গিয়ে শুধু উপরে ঘোরাফেরা করে আপনি কিছু করতে পারবেন না। রুট লেভেলে যেখানে এদেশের বাসিন্দা, এদেশের নাগরিক চিহ্নিত করেছে তাদের দায় আছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা এ সার্টিফিকেট দেয়। এ সার্টিফিকেটগুলো কারা দেয়, কেন আসছে এগুলো চিহ্নিত করার দরকার আছে। এটা সমূলে উৎপাটন করতে রুট থেকেই আসতে হবে। নির্বাচন কর্মকর্তা তো যাকে ভোটার করা হয় তাকে দেখেও না। একটা বিশেষ কমিটিও আছে। কাগজপত্র তো দিয়ে দিচ্ছে, এগুলো দেখেই বিশেষ কমিটি ভোটার করছে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আইনানুগ হোক, সিস্টেমেটিক হোক, অযথা কেউ যাতে হয়রানি না হয়। মানুষ যেন বিক্ষুব্ধ না হয়। যেন অন্যরকম ধারণা পোষণ না করে। পাবলিক সার্ভেন্ট আমরা। পাবলিককে সেবা দিতেই এখানে বসেছি। ওদের প্রতি নজর দিবেন। ওনারা কান্নাকাটি করেছেন। ঘুমাতে পারছেন না। আমি তাদের ফিলিংসটা শুনেছি। অযথা যেন আমার স্টাফ ও অফিসাররা হয়রানি না হয়। আসল কালপিট বের হোক সেটা আমরাও চাই। কিন্তু এটা করতে গিয়ে কমিশনের কাজকর্ম একদম স্লো হয়ে গেছে। মানসিক শান্তি না থাকলে কাজ করতে পারবে না। কাজ করতে না পারলে নির্বাচনেও যে মনযোগ দিতে পারবে তা নিয়ে আমি সন্দিহান। আমি বিষয়টি কমিশনে জানাবো। আপনারা একটু বিষয়টি ভালোভাবে দেখবেন।