রিফাত হত্যা জিজ্ঞাসাবাদের পর স্ত্রী মিন্নি গ্রেপ্তার

22

বরগুনায় শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার মামলায় তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে সদর উপজেলার নয়াকাটা গ্রামের বাড়ি থেকে মিন্নিকে বরগুনা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরকেও সঙ্গে নেওয়া হয়। রাত সাড়ে ৯টায় মিন্নিকে গ্রেপ্তারের খবর জানায় পুলিশ।
বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে রিফাত হত্যায় তার স্ত্রী মিন্নির সংশ্নিষ্টতা পাওয়া গেছে। তাই এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর আগে পুলিশ সুপার জানিয়েছিলেন, মিন্নিকে মামলার সাক্ষী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খবর বার্তা সংস্থার
সূত্র জানায়, হত্যাকারীদের সঙ্গে পূর্ব যোগাযোগ ও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বরগুনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হুমায়ুন কবির জবানবন্দি নেওয়ার জন্য মিন্নিকে নিয়ে আসেন।
গত ২৬ জুন ঘটনার পর থেকে মিন্নি বাড়িতে পুলিশ পাহারায় ছিলেন। সম্প্রতি ঘটনার একটি নতুন ভিডিও প্রকাশ পেলে একটি মহল এ মামলায় মিন্নিকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি আলোচিত হয়। গত ১৩ জুলাই রাতে নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ এক সংবাদ সম্মেলনে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানান। পরদিন ১৪ জুলাই সকালে বরগুনা প্রেস ক্লাবের সামনে সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে মিন্নিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ, চাচা আবদুল আজীজ শরীফ, জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এমপিপুত্র অ্যাডভোকেট সুনাম দেবনাথ ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান মারুফ মৃধা বক্তৃতা করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে রিফাত শরীফকে। এ ঘটনায় পরের দিন ২৭ জুলাই ১২ জনের নাম উল্লেখ করে নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় এখন পর্যন্ত এজাহারভুক্ত সাতজন এবং জড়িত সন্দেহে সাতজনসহ মোট ১৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার মধ্যে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছে। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে এজাহারভুক্ত চারজন এবং জড়িত সন্দেহে ছয়জনসহ মোট ১০ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বাকি তিনজনকে পুলিশ বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।