‘রিফাতের ‘খুনিরা’ জামিন পেলে রুখে দাঁড়ান’

41

বরগুনায় প্রকাশ্যে সড়কে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরিফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের যেন জামিন না দেওয়া হয় সে বিষয়ে আদালতের প্রতি অনুরোধ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমÐলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। গতকাল শুক্রবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় এ হত্যা মামলার আসামিদের আইনি সহায়তা না দিতে আইনজীবীদের প্রতিও আহ্বান তিনি।
আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে নাসিম বলেন, ‘বেশি টাকা নিয়ে আপনারা এই সন্ত্রাসীদের পক্ষে দাঁড়াবেন না। আপনারা বিবেক দিয়ে বিষয়টি বিবেচনা করবেন। শুধু টাকার জন্য খুনিদের পক্ষ কেন নেবেন? সন্ত্রাসীদের আইনি সহায়তা দেবেন না। তাদের পক্ষে দাঁড়াবেন না। আর যে কোর্ট এদের জামিন দেবে, তাদের বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়াতে হবে। আইন সবকিছুর ঊর্ধ্বে। তার মানে এই নয়, এই সমস্ত আশ্রয়কারীদের (হত্যাকারীদের) আপনারা আশ্রয় দেবেন’।
বুধবার সকালে বরগুনা শহরের কলেজ রোডে রিফাতকে (২৩) কুপিয়ে জখম করে একদল যুবক। এসময় তার স্ত্রী বাধা দিয়েও তাদের আটকাতে পারেননি। বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এঘটনায় নিহতের বাবা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবণগোলা গ্রামের বাসিন্দা দুলাল শরীফ রাতেই ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এদের মধ্যে চন্দন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের নাম পুলিশ প্রকাশ করেনি।
তবে নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি গণমাধ্যমকে বলেছেন, নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী নামে তিনজন তার স্বামী রিফাত শরীফকে কুপিয়ে আহত করে।
এদের মধ্যে নয়ন বন্ড হিসেবে পরিচিত সাব্বির আহমেদ নয়ন শহরের ডিকেপি রোড এলাকার মৃত সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে। আর রিফাত ও রিশান বরগুনা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ধানসিঁড়ি সড়কের দুলাল ফরাজীর ছেলে। পরের দু’জন বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে। সেই ক্ষমতার জোরে তারা এলাকায় অপরাধমূলক কর্মকাÐ চালাতো বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। খবর বিডিনিউজের
এবিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনার সাবেক সংসদ সদস্য দেলোয়ার বলেন, ‘রিফাত ও রিশানের সঙ্গে আমার রক্তের সম্পর্ক নেই। তারা আমার শ্যালিকার ছেলে। রিফাত অনেক খারাপ কাজের সঙ্গে যুক্ত বলে পাঁচ বছর থেকে সম্পর্ক নাই’।
আলোচনা সভায় নাসিম বলেন, ‘রিফাত (ফরাজী) দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তাই আমি অনুরোধ করবো, কোনো আইনজীবী রিফাতের মতো সন্ত্রাসীদের আইনি সহায়তা দেবেন না। তাদের পক্ষে দাঁড়াবেন না। কোনো পলিটিক্যাল শেল্টার দেওয়া যাবে না এদেরকে। আমি আমার নিজের দল থেকে বলতে চাই, এই সমস্ত খুনিদেরকে কেউ শেল্টার দেবেন না দয়া করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাউকে খাতির করেন না। তিনি বিশ্বজিৎ ও নুসরাত হত্যাকান্ডের বিচার করেছেন’।
শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকীর এই আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ছিলেন একজন মহিয়সী নারী। তিনি ক্যান্সার নিয়ে একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন করেছেন। শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এই মামলা হয়েছিল বিএনপির আমলে। এ জন্য খালেদা জিয়ার বিচার হওয়া উচিত’।
শিল্পকলা একাডেমীতে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের নেত্রী দিনাত জাহান মুন্নির সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা বক্তব্য দেন।