রিকশার চাকার সাথে থেমে গেল ৪ সন্তানের ভবিষ্যৎ?

46

চার সন্তানের জনক মাহমুদুল হক রিকশা চালাতেন। তিনি রিকশার চাকা ঘুরিয়ে চালাতেন সংসার, বহন করতেন সব ব্যয়। সময় হলেও টাকার অভাবে স্কুলে ভর্তি করাতে পারেননি সন্তানকে। তাই আগামী বছর জানুয়ারিতে ছেলে মো. সলিমকে (১০) স্কুলে ভর্তি করানোর ইচ্ছে ছিল। ছয়জনের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটি প্রতিদিনকার মত রিকশা চালাতে গিয়ে পাথরঘাটায় বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন। ফলে চারপাশ অন্ধকার হয়ে আছে স্ত্রী শাহীনের। তাহলে কি রিকশার চাকার সাথে থমকে যাবে মাহমুদুলের চার সন্তানের ভবিষ্যৎ?
নগরীর পাথরঘাটায় গ্যাসলাইনে বিস্ফোরণে নিহত হন ৭ পথচারী। গত রবিবার এ ঘটনা ঘটে। নিহতের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় মিললেও অজ্ঞাত ছিল একজন। সর্বশেষ সেই অজ্ঞাত লাশটির পরিচয় মিলেছে। রবিবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরে পড়ে থাকা সেই লোকটির নাম মাহমুদুল হক (৪০)। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়ায় আঁধারমানিক গ্রামে তার বাড়ি। তার বাবার নাম আবুল কাশেম ও মায়ের নাম মমতাজ বেগম। তিনি নগরীর বাকলিয়ার ভেড়া মার্কেটের বেলাল কলোনিতে থাকতেন।
নিহত মাহমুদুলের ছোট ভাই মো. ফারুক পূর্বদেশকে বলেন, আমরা তিনভাই। সবার বড় ছিলেন মাহমুদুল হক। আমি মেজ। গ্রামের বাড়িতে কৃষি কাজ করে চলি। আর দুইভাই শহরে রিক্শা চালান। আমার বড় ভাই মাহমুদুল ১০ বছর আগে বিয়ে করেন। তার চার সন্তান। তিন ছেলে ও এক মেয়ে। তারা হলেন মো. সলিম (১০), জান্নাতুল মাওয়া (৭), শহিদুল ইসলাম (৫) ও নবী হোসেন ( ৪ মাস)। ভাই রিকশা চালায় যা আয় করতেন, তা দিয়ে চলত তাদের সংসার। আমরা সবাই পারিবারিকভাবে অস্বচ্ছল। ফলে নিজেদের চলতে অনেক কষ্ট হয়ে যায়। ভাইয়ের এমন মৃত্যুতে কঠিন হয়ে যাবে চার সন্তানের ভবিষ্যৎ। তার খুব ইচ্ছে ছিল সন্তাগুলোরে পড়াশোনা করাবে। আগামী বছর সেলিমকে স্কুলে দেওয়ার কথা। কিন্তু তিনি তা দেখে যেতে পারেননি।