রামুতে ৭ ব্যবসায়ী ও ২ প্রবাসীকে লাখ টাকা জরিমানা

21

রামুতে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মূল্য বৃদ্ধি করায় ৭টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ২ সদ্য প্রবাস ফেরত ব্যক্তিকে ১ লাখ ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত শুক্রবার এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জানা গেছে, বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্রে জানা গেছে, রামু ফকিরা বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ওসমানের ৬টি গুদাম রয়েছে। ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকেই কক্সবাজার-রামুর অনেক খুচরা ব্যবসায়ী পেঁয়াজ ক্রয় করেন। কিন্তু তিনি কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পেঁয়াজ দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করায় সর্বত্র পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। এ কারণে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুক্রবার দুপুরে বাজারের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ী ওসমানকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করেন। একই অভিযোগে বাজারের জসিম স্টোরের মালিক দীপক পালকে ১২ হাজার টাকা, মেসার্স সাদ ট্রেডার্সের স্বত্ত¡াধিকারী মো. শহীদুল্লাহকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পরে রামু চৌমুহনী স্টেশনে আরো দুটি দোকান মালিককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা রশিদনগর ইউনিয়নের পানিরছড়া মামুন মিয়ার বাজারে অভিযান চালান। অভিযানে বাজারের হোছাইন স্টোরকে ২০ হাজার টাকা এবং কাজল এন্ড ব্রাদার্স স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী কাজল কান্তি দে’কে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অভিযানে রামু উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সরওয়ার উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া ইউএনও প্রণয় চাকমা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রামুর বিভিন্ন সড়ক ও হাট-বাজারে নিজ গাড়ি ও হ্যান্ড মাইকযোগে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক, বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের হোম কোযারেন্টাইনে থাকা এবং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দৃব্যমূল্য বৃদ্ধি না করার জন্য প্রচারণা চালান।
এদিকে বিকালে অভিযান চালিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইন অমান্য করায় রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ফুলনীরচর গ্রামের গোলাম আকবরের ছেলে সদ্য ওমান ফেরত মোহাম্মদ আরিফ উল্লাহকে ১০ হাজার টাকা এবং সন্ধ্যায় রামুর দক্ষিণ চাকমারকুল মিস্ত্রী পাড়া এলাকার মৃত নজির আহমদের ছেলে সদ্য মালয়েশিয়া থেকে আসা কলিম উল্লাহকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা।
আগেরদিন বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) রাতে তিনি ছুটে যান রামুর সবচেয়ে দুর্গম জনপদ ঈদগড় ইউনিয়নের ঈদগড় বাজারে। সেখানে তিনি বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রয় ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এসময় তিনি অতিরিক্ত মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রয় করায় ঈদগড় হাসান স্টোরকে ৬ হাজার টাকা এবং পণ্য মূল্য তালিকা না থাকায় অপর একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করেন। রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণয় চাকমা জানান, সদ্য যারা প্রবাস থেকে দেশে এসেছেন তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা গ্রহণ এবং ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এ আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। দেশ ও জনকল্যাণে সবাইকে এ আদেশ মেনে চলতে হবে। এছাড়া করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির সুযোগে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি এবং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নজরদারি রয়েছে। জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।