রাফাল চুক্তি : মোদীর বিরুদ্ধেও তদন্ত দাবি রাহুলের

34

রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দিকেই বারবার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দিচ্ছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। এবার চুক্তিটির বিতর্ক নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস প্রধান। তিনি বলেছেন, ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা খতিয়ে দেখা দরকার। এই কান্ডে প্রধানমন্ত্রীকেও অভিযুক্ত করার যথেষ্ট প্রমাণ আছে। অন্যদের অভিযুক্ত করতে পারেন, কিন্তু তাকে বাদ দিতে পারেন না। এছাড়া আমি আর কোনো অভিযোগ করছি না। একইসঙ্গে রাফাল নিয়ে নরেন্দ্র মোদী ‘বাইপাস সার্জারি’ করেছেন বলে মন্তব্য করেন রাহুল গান্ধী। ৭ মার্চ সকালে রাফাল বিতর্ক নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন রাহুল গান্ধী। এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও তদন্তের দাবি জানান।
এদিকে, চুক্তির নথির বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে টপকে প্রধানমন্ত্রীর দফতর ফ্রান্সের সঙ্গে রাফাল নিয়ে আলোচনা করেছিল। তখন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ হস্তক্ষেপে প্রতিবাদও করেছিল। পরে চুক্তি সই হওয়ার পর নানা ত্রুটিও ছিল এতে। এছাড়া চুক্তিতে আগের চেয়ে (কংগ্রেসের শাসনামল) যুদ্ধবিমানের দামও বেশি ধরা হয়েছিল। কংগ্রেসের দাবি বিজেপি সরকার রাফাল চুক্তিতে পরিবর্তন এনেছে। বেশি অর্থ ব্যয় করে সংখ্যায় কম যুদ্ধবিমান কেনা হয়েছে। রাহুল দাবি করে বলছেন, নরেন্দ্র মোদী এখানে এজেন্টের ভূমিকা পালন করেছেন।
রাহুল বলেন, রাফাল চুক্তির নথি স্পষ্টভাবে নরেন্দ্র মোদীর নাম উল্লেখ করে। এ চুক্তিতে প্রধানমন্ত্রীর দফতর ভূমিকা পালন করেছিল। আদালতে তারা (বিজেপি সরকার) বলছে, রাফাল চুক্তির নথি চুরি হয়ে গেছে। এ থেকেই বোঝা যায়- নথিগুলো আসল ছিল। এটাই প্রমাণ।
রাফাল চুক্তিতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের হস্তক্ষেপ ছিল- এমন খবর প্রকাশ হলে মোদী সরকার আদালতে বলে, চুক্তির অনেক নথি চুরি হয়ে গেছে। এছাড়া সরকারের দাবি- নথি চুরি করে চুক্তিটি নিয়ে আদালতে মামলা করা হয়েছে। আদালতে নথি চুরির বিষয়টি উপস্থাপনও করা হয়। পরে একবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েও দেয় রাফাল নিয়ে তদন্ত শেষ। কিন্তু এর বিরুদ্ধে আবার আবেদন জমা পড়লে নতুন করে বিতর্ক দেখা দেয়।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ফ্রান্সের কাছ থেকে ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগে এর আগেও উত্তেজনায় জড়ায় ক্ষমতাসীন বিজেপি-কংগ্রেস। গত বছরের জুলাইয়ে এ নিয়ে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের মুখেও পড়তে হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকাকালে এ চুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা সম্পন্ন হয় নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর। রাহুলের দাবি, এই চুক্তিতে হাজার হাজার কোটি রুপি লুটে নেওয়া হয়েছে। যা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে বিজেপির সরকার।