রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা সাত কোটি টাকা

66

চট্টগ্রামের সরকারি তালিকাভুক্ত ৮৪টি বালুমহাল ইজারার দরপত্র আহবান করেছে জেলা প্রশাসন। এসব বালুমহাল থেকে আগামী অর্থ বছরে প্রায় সাত কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ১ বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত (২০১৯-২০) ইজারা প্রদানের জন্য একসাথে আটদফা দরপত্র আহবান করেছে। গত ২০মার্চ আহবান করা দরপত্রের প্রথমধাপে ৪এপ্রিল পর্যন্ত ফরম বিক্রি করা হবে। ৭ এপ্রিল সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টার মধ্যে অফিস চলাকালীন দরপত্র জমা দিতে হবে।
জানা যায়, প্রথম ধাপে ইজারা না হওয়া বালুমহালগুলো পুনরায় যাতে ইজারা দেয়া যায় সেজন্য আরো সাতটি ধাপের ফরম জমা ও দাখিলের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। শেষধাপে চলতি সনের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত অবিক্রিত বালুমহাল ইজারার দরখাস্ত ফরম জমা নেয়া হবে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন পূর্বদেশকে বলেন, ‘বালুমহাল ইজারার দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেমন জমা পড়ে দেখি। এরপরেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। অবৈধ বালুমহাল বন্ধে ইউএনও ও এসি-ল্যান্ডদের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে বলা হয়েছে। সরকার ঘোষিত বালুমহাল ছাড়া যেকোন জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করা অপরাধ।’
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, রাঙ্গুনিয়ার ইছামতি-১, ইছামতি-২, ইছামতি-৩, ইছামতি-৪, ফকিরাহাট বালুমহাল, কোদালা বালুমহাল, শিলক বালুমহাল, শিলক বালুমহাল (পদুয়াংশ), ঝংকার খাল বালুমহাল (পশ্চিমাংশে শিলখ খালের মুখ), নারিশ্চা বালুমহাল, ইছামতি-৫, ফটিকছড়ির গজারিয়া খাল বালুমহাল-১, গজারিয়া খাল বালুমহাল-২, গজারিয়া খাল বালুমহাল-৩, বালুখালী খাল বালুমহাল, বালুখালী খাল প্রকাশ কাইটইস্যা বালুমহাল, রুপাইছড়ি খাল বালুমহাল-১, রুপাইছড়ি খাল বালুমহাল-২, রুপাইছড়ি খাল বালুমহাল-৩, রুপাইছড়ি খাল বালুমহাল-৪, ফনী খাল বালুমহাল, শোভনছড়ি বালুমহাল, ফকিরটিলা পাশ^বর্তী ধর্মছড়ি সংযোগ বালুমহাল, বেতুয়া বালুমহাল, বারমাসিয়া খাল বালুমহাল, ডলু বালুমহাল, লেলাং খাল বালুমহাল (কাঞ্চননগর অংশ), মানিকপুর বালুমহাল, লেলাং খাল বালুমহাল (লেলাং অংশ), দমদমা লেলাং খাল বালুমহাল, গামারী তলা বিনাজুরী খাল বালুমহাল, হিংগারপুল কুতুবছড়ি খাল বালুমহাল, লেলাং/রায়পুর বালুমহাল (রায়পুর অংশ), লেলাং খাল বালুমহাল, সর্স্তার খাল বালুমহার, লোহাগাড়ার চরম্বা বালুমহাল, চরম্বা বালুমহাল-৩, আমিরাবাদ বালুমহাল-১, জঙ্গল পদুয়া বালুমহাল, জামছড়ি বালুমহাল, আমিরাবাদ বালুমহাল-২, সুখছড়ী বালুমহাল, লোহাগাড়া, চরম্বা ও মাইজবিলা বালুমহাল, পুটিবিলা বালুমহাল-৩, চুনতি বালুমহাল-১, সোনাইছড়ি বালুমহাল-১, পুটিবিলা বালুমহাল-৪, পশ্চিম কলাউজান বালুমহাল-১, সাতকানিয়ার ডলু বালুমহাল-৩, ডলু বালুমহাল-৪, ডলু বালুমহাল-৫, বড় দুয়ার রামদা বালুমহাল, সোইনছড়ি খাল বালুমহাল, পটিয়ার বাহুলী বালুমহাল, হাইদগাঁও বালুমহাল, খরনা বালুমহাল, চানখালী খাল বালুমহাল, শ্রীমাই-২ বালুমহাল, রাউজানের কর্ণফুলী বালুমহাল, সস্তাখাল বালুমহাল-১, ডাবুয়া খাল বালুমহাল-১, ডাবুয়া খাল বালুমহাল-২, রাউজান খাল বালুমহাল, কাঁশখালী খাল বালুমহাল, সর্স্তা খাল বালুমহাল (চিকদাইর অংশ), সর্স্তা খাল বালুমহাল-৪ (নোয়াজিষপুর অংশ), ফটিকছড়ি ছড়া বালুমহাল, মিরসরাইয়ের রামগড়-সীতাকুÐ রিজার্ভ ফরেষ্ট এলাকার বালুমহাল, শুভপুর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন ফেনী নদী বালুমহাল, ধুমঘাট বালুমহাল, ইসলামপুর বালুমহাল, হিঙ্গুলী ব্রীজ সংলগ্ন পূর্ব হিঙ্গুলী বালুমহাল, লক্ষীছড়ী বালুমহাল, শুক্র বারইয়ার হাট বালুমহাল, মোল্লাঘাট বালুমহাল, সুন্দরী ছড়া বালুমহাল, বাঁশখালীর জঙ্গল পুঁইছড়ী বালুমহাল, নাপোড়া ছড়া বালুমহাল, চন্দনাইশের বরগুনী খাল বালুমহাল (গাছবাড়িয়া অংশ), বরগুনী খাল বালুমহাল (হাশিমপুর অংশ), বরুমতি খাল বালুমহাল (হাশিমপুর অংশ-১), ডলু খাল বালুমহাল, গুইল্যাছড়ি বালুমহাল, বরুমতি খাল বালুমহাল (হাশিমপুর-২)। এসব বালুমহালে পৃথক সরকারি মূল্য নির্ধারণ করে জেলা প্রশাসন। সবক’টি বালুমহাল ইজারা দিয়ে সরকার প্রায় সাত কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের টার্গেট করেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিবছর বালুমহাল ইজারার দরপত্র আহবান করা হলেও অর্ধেকেরও বেশি বালুমহাল ইজারা হয় না। একশ্রেণির বালু সিন্ডিকেট সরকারি মূল্যের কম দর দিয়ে বালুমহাল ইজারা বাধাগ্রস্ত করে। কেউ কেউ উচ্চ আদালতের ধারস্থ হয়ে বালুমহাল ইজারায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এসব বালুমহাল ইজারা বন্ধ হলে অবৈধ বালুমহালগুলোর নিয়ন্ত্রণে রেখে কোটি টাকার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে বালু ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে সারা চট্টগ্রামে অবৈধভাবে কমপক্ষে শতাধিক স্পট থেকে বালু উত্তোলন করা হয়। এসব অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে সরকারি বালুমহালগুলো ইজারা না হওয়ার শঙ্কা থেকেই যাবে।
বাঁশখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার পূর্বদেশকে বলেন, ‘বাঁশখালীর প্রত্যেকটি ইউনিয়নে অবৈধ বালু উত্তোলন ও পাহাড় কাটা বন্ধসহ আরো কিছু ইসুতে সচেতনতা বাড়াতে মতবিনিময় সভা করেছি। এসব সভায় স্পষ্টভাবেই অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। বেশকিছু জায়গায় বালু উত্তোলন বন্ধে হয়ে গেছে। কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়ে জরিমানাও আদায় করা হয়েছে।’