রাজমিস্ত্রির সঙ্গে মেয়ের বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মাকে খুন

32

চকরিয়ায় রাজমিস্ত্রি ছেলের সাথে মাদ্রাসা পড়ুয়া কন্যাকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় মো. হাসান নামে এক বখাটের হাতে নিজ ঘরেই খুন হন নাজমা বেগম (৪২)। ওই বখাটে নাজমা বেগমকে জবাই করে খুন করার পর পালিয়ে যায়।
গত সোমবার রাত ৯টার দিকে হারবাং ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর মুসলিমপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নাজমা বেগম ওই এলাকার রিক্শা চালক কলিম উল্লাহর স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননী। নাজমা বেগমের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে হারবাং ইউনিয়নে দাফন করা হয়।
এদিকে নিহত নাজমা বেগমের স্বামী কলিম উল্লাহ বাদী হয়ে গতকাল বিকালে বখাটে মো. হাসানসহ ৫-৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন। তবে পুলিশ এ খুনের ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামিসহ কাউকে আটক করতে পারেনি। পুলিশের দাবি, নাজমা বেগম খুনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
নাজমা বেগমের দেবর মঞ্জুর আলম জানান, বেশকিছু দিন ধরেই তার মাদ্রাসায় পড়ুয়া ভাতিজীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল বখাটে হাসান। কক্সবাজারের বাসিন্দা হলেও হাসান প্রায় সময় হারবাং ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর মুসলিমপাড়ায় তার খালা জাহেদা বেগমের বাসায় আসা-যাওয়া করতো। মাঝে মধ্যে বখাটে হাসান তার খালার জামাই মোনাফ মিস্ত্রির সাথে বিভিন্ন জায়গায় কাজকর্মও করে। এ কারণে সে তার খালা ও খালার জামাইর আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তাদের বাড়িতেই থেকে যায়। গত এক সপ্তাহ আগেও বখাটে মো. হাসান তার মাদ্রাসায় পড়–য়া ভাতিজীকে বিয়ে করার প্রস্তাব পাঠায় তার মা’র কাছে। এ সময় মেয়ের মা বখাটের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও তাদেরকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। এরপর বখাটে হাসানের উৎপাত থেকে বাঁচাতে মেয়েকে দাদার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন নাজমা বেগম। পরবর্তীতে মেয়েকে দেখতে না পেয়ে হাসান ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার সকালে তার ভাই এবং ভাবী নাজমা বেগমকে বকাঝকা এবং দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।
মঞ্জুর আলম আরও জানান, সোমবার রাত ৯টার দিকে বাড়ির লোকজনের অনুপস্থিতিতে হাসান তার ভাইয়ের বাড়িতে ঢুকে ভাবী নাজমা বেগমকে খুন করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর তার ভাতিজা শেফায়েত উল্লাহ বাড়িতে ঢুকে রক্তাক্ত অবস্থায় তার মায়ের লাশ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করে। এ সময় পাশের লোকজন এসে হারবাং পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নাজমা বেগমের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, নাজমা আক্তারের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার বিকালে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী কলিম উল্লাহ বাদি হয়ে বখাটে মো. হাসানকে প্রধান আসামি করে ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। নাজমা বেগম খুনের ঘটনায় জড়িত হাসানসহ অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।