রাজনীতির রণকৌশলে ৭ মার্চের ভাষণ অসাধারণ

105

নগরীর বিভিন্ন স্থানে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ স্মরণে আলোচনা অনুষ্ঠান ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণের কর্মসূচি পালন করা হয়।
শিশু একাডেমি ঃ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও শিশু একাডেমির উদ্যোগে শিশুদের চিত্রাংকন, ভাষণ পরিবেশন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। শিশু প্রতিনিধি পংকজ ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক ভাষণের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আবু হাসান সিদ্দিক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিশু একাডেমির জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা নারগীস সুলতানা। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী-শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস, এমইএস কলেজের সহকারী অধ্যাপক শিশু সাহিত্যিক গোফরান উদ্দিন টিটু, মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ইদ্রিস আলী ও সাংবাদিক রনজিত কুমার শীল। শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ শোনায় ক্ষুদে শিক্ষার্থী পংকজ ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান শোনায় শিশু একাডেমির শিক্ষার্থী জয় দত্ত। তবলায় সহযোগিতা করেন একাডেমির প্রশিক্ষক ছোটন চক্রবর্তী। শেষে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণ উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাংকন ও ভাষণ প্রতিযোগিতায় ক, খ ও গ গ্রুপে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় ‘ক’ গ্রুপে সাফীরাহ মাকারিম- ১ম স্থান, অন্তরা বিশ্বাস-২য় স্থান, নাজমুল ইসলাম অথৈ-৩য় স্থান, ‘খ’ গ্রুপে নসুরাত জাহান (প্রীতি)-১ম স্থান, অনন্যা চৌধুরী-২য় স্থান, শোভন দেব নোবেল-৩য় স্থান, ‘গ’ গ্রুপে জাবিরুল ইসলাম-১ম স্থান, পূজা বকসী-২য় স্থান, দীপ্ত আচার্য-৩য় স্থান। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতায় ‘ক’ গ্রুপে অনন্যা চৌধুরী-১ম স্থান, পংকজ ভট্টাচার্য-২য় স্থান, আহনাফ তাহমিদ-৩য় স্থান এবং ‘খ’ গ্রুপে নাফিসা আনজুম রাইসা-১ম স্থান ও সাজিয়া আফরীন প্রাপ্তি-২য় স্থান অর্জন করেন। সবশেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আবু হাসান সিদ্দিক বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে স্বপ্নে বিভোর করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর এই ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশ ও স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদান রেখেছে।
৫চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব : গত বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও আলোচনা সভা। সকালে ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে জাতির জনকের ম্যুরালে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের পিএইচপি ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, সিনিয়র সহ সভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজা, কার্যকরী সদস্য মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম, কাজী আবুল মনসুর, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী, বিএফইউজে’র সাবেক সহ-সভাপতি শহীদ উল আলম, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসিফ সিরাজ, সিইউজে’র অর্থ সম্পাদক কাশেম শাহ।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের সহ-সভাপতি মনজুর কাদের মনজু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক রূপম চক্রবর্তী, ক্রীড়া সম্পাদক দেবাশীষ বড়ুয়া দেবু, গ্রন্থাগার সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিন্টু চৌধুরী, কার্যকরী সদস্য স ম ইব্রাহীম, মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ, ক্লাবের স্থায়ী সদস্য রাজেশ চক্রবর্তী, আবুল হাসনাত, মোহাম্মদ জহির, মো. ফরিদ উদ্দিন, মো. নাছির উদ্দিন চৌধুরী, রেজা মুজাম্মেল, অনিন্দ্য টিটো, সিইউজের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আহমেদ কুতুব প্রমুখ। সভাপতি বক্তব্যে আলী আব্বাস বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চে রেসকোর্স ময়দানের ভাষণের মধ্য দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন। বাংলা, বাঙালির জন্য এটি একটি স্মরণীয় দিন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে হাজারো বাঙালি নয়মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ভাষণ ২০১৭ সালে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সাংবাদিকদের সংগঠন। বাংলা, বাঙালি ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে আমরা সামনের দিনের পথ চলতে চাই। আর এর মধ্য দিয়ে দেশ উন্নতির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
দেওয়ান বাজার ওয়র্ডের প্রাথমিক বিদ্যালয় : ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ স্মরণে ২০নং দেওয়ান বাজারস্থ ঘাটফরহাদবেগ সরকারি প্রাথমিক বালক বিদ্যালয়ে ওয়ার্ড ভিত্তিক বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ঘাটফরহাদবেগ সরকারি প্রাথমিক বালক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাদাত উল্লাহ কাজেমী’র সভাপতিত্বে ও শিক্ষিকা স্বপ্না রাণী দাশ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্যানেল মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনি, বিশেষ অতিথি ছিলেন কোতোয়ালী থানা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার শর্মিষ্ঠা রাণী মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন ঘাটফরহাদবেগ বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি এস.এম শাহ আলম, ঘাটফরহাদবেগ বালক বিদ্যালয়ের এসএমসি সহ-সভাপতি মো. শিহাব উদ্দিন, পিটিএ সভাপতি আনিছ আহমদ খোকন, সহ-সভাপতি জিয়াউর রহমান প্রমুখ। আরো উপস্থিত ছিলেন লামাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঝর্ণা সেন গুপ্তা, বলুয়ারদীঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুপ্রীতি সেন, ঘাটফারহাদবেগ সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুনমুন সেন সহ মোট ৪টি বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনি বলেন, ৭ই মার্চ বাংলা ও বাঙালী জাতির ঐতিহাসিক স্মারণীয় দিন, আজকের এ দিনে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে বাংলার স্বাধীনতার ঐতিহাসিক দলিল ঘোষণা করেন।
বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতা স্মৃতি পরিষদ : বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতা স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে গত বৃহস্পতিবার সকালে পতেঙ্গা সিটি কর্পোরেশন মহিলা কলেজ মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধুকে জানো’ শীর্ষক মহিলা শিক্ষার্থীদের সমাবেশ, বঙ্গবন্ধুর জীবনী বই ও ৭ মার্চের ছাপানো ভাষণ বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুর রহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমউদ্দিন শ্যামল প্রধান অতিথি ও কাউন্সিলর হাজী মো. জয়নাল আবেদীন, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিসেস শাহানুর বেগম, অধ্যক্ষ ইসমত আরা বিশেষ অতিথি ছিলেন। বিশ্বনাথ নাথ, মিসেস ফাতেমা নার্গিস, মিসেস লুৎফুন নাহার, মো. হোসেন চৌধুরী সাদ্দাম ও সজীব অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমউদ্দিন শ্যামল বলেন, রাজনীতির রণকৌশলের দিক থেকে বঙ্গবন্ধু’র ৭ মার্চের ভাষণ অসাধারণ। সেই দিনের উত্তাল জনতরঙ্গে সময় ও পরিস্থিতি বিবেচনায় বঙ্গবন্ধু’র বজ্রকণ্ঠে তাই ধ্বনিত হয়েছিল। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু’র ৭ মার্চের ভাষণ চিরকালই ইতিহাসে সর্বজনীন হয়ে থাকবে কারণ এ ভাষণের মধ্য দিয়ে নিরস্ত্র জাতিকে সশস্ত্র জাতিতে পরিণত করে স্বাধীনতা অর্জনে অভিষ্ট লক্ষ্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। তিনি প্রজন্ম পরম্পরায় জাতির পিতার আদর্শ বয়ে নেয়ার আহব্বান জানান। অনুষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর জীবনী বই ও ৭ মার্চের ছাপানো ভাষণ বিতরণ করা হয়।
পূর্ব বাকলিয়া সিটি কর্পোরেশন গার্লস হাই স্কুল এন্ড কলেজ : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের ওপর এক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে নগরীর পূর্ব বাকলিয়া সিটি কর্পোরেশন গার্লস হাই স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার সকালে ৬ষ্ট শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি শ্রেণিতে ১ম ঘন্টার এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ভাষণের সময়,কাল,স্থান, প্রেক্ষাপট, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, স্বাধীনতা সংগ্রামে এর প্রভাব ও পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধসহ বিভিন্ন বিষয়ে ২০ মার্কের ১০টি কুইজের লিখিত ও পুরো ভাষণ হুবহু মুখস্থ উপস্থাপন প্রতিযোগিতায় প্রায় সাতশ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিদের মধ্য থেকে ৩৩ জন বিজয়ী হয়। শেষ ঘন্টায় প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল, সহকারী প্রধান শিক্ষক বাবু মানিক চন্দ্র বৈদ্যসহ কলেজ ও বিদ্যালয় শাখার শিক্ষকবৃন্দ প্রতিটি শ্রেণিতে গিয়ে পুরস্কার প্রদান করেন। এসময় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে ছোটদের বঙ্গবন্ধু বইটি পুরস্কার হিসাবে প্রদান করা হয়।