রাজধানীতে বাসচাপায় আবারও প্রাণহানি বিক্ষোভ-ভাংচুর

35

রাজধানীর মালিবাগে সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন গার্মেন্ট শ্রমিক নিহতের পর দুপুর থেকে সন্ধ্যা নাগাদ রাস্তা আটকে বিক্ষোভ করেছেন তাদের সহকর্মীরা। এ সময় দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ এবং অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাংচুর করেছেন বিক্ষুব্ধরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে মালিবাগ রেলগেট থেকে আবুল হোটেলের মাঝামাঝি জায়গায় ‘সুপ্রভাত’ পরিবহনের একটি বাসের চাপায় ওই দুই নারী নিহত হন বলে রামপুরা থানার ওসি এনামুল হক জানান। খবর বিডিনিউজের
দুর্ঘটনায় তাদের মৃত্যুর খবর শুনে আশপাশের কয়েকটি গার্মেন্টের কয়েকশ শ্রমিক রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় তারা মালিবাগ থেকে রামপুরা অভিমুখী সড়কে অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাংচুর এবং দুটি বাসে আগুন দেন বলে আলোকচিত্রী আব্দুল্লাহ জানান। বিকাল পৌনে ৫টার দিকে ওই সড়কে একের পর এক ভাঙা গাড়ি পড়ে থাকতে দেখেন তিনি।
কয়েক ঘণ্টা অবরোধ ও ভাংচুরের পর সন্ধ্যার দিকে বিক্ষুব্ধ সড়ক ছেড়ে গেলে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে সেখানে আবার যান চলাচল শুরু হয় বলে ঘটনাস্থল থেকে আরেক আলোকচিত্রী মাহমুদ জামান অভি জানান। এ সময় ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না, বিক্ষুব্ধরা সরে গেলে ৭টার পর সেখানে বিদ্যুৎ আসে বলে জানান তিনি।
এদিকে শ্রমিকদের বিক্ষোভের মধ্যে ওই এলাকার একটি বাসায় আটকা পড়েন ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার নাজমুন নাহার। সন্ধ্যার দিকে তাকে উদ্ধার করে আনার সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন।
ইটের আঘাতে তার এক চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, এই পুলিশ কর্মকর্তাকে আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে দুই শ্রমিককে চাপা দেওয়া বাসটি জব্দ এবং তার চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে ওসি এনামুল জানিয়েছেন। নিহত নাহিদ পারভীন পলি (১৯) ও মীম (১৩) মালিবাগের পদ্মা সিলেমা হলের বিপরীতে এমএইচ গার্মেন্ট কারখানায় কাজ করতেন।
পলির গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায়, মীমের বাড়ি বগুড়ার গাবতলী উপজেলায়। মগবাজারের পূর্ব নয়াটোলায় একটি রুম ভাড়া নিয়ে থাকতেন তারা।
সুমি নামে তাদের এক সহকর্মী জানান, পলি ও মীম দুপুরের খাবার খেতে কারখানা থেকে বাসায় যাচ্ছিলেন। রাস্তা পার হওয়ার সময় সদরঘাট থেকে গাজীপুরগামী একটি বাসের নিচে চাপা পড়েন তারা।
দুর্ঘটনাস্থলেই মীমের মৃত্যু হয়। সেখানে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সার্জেন্ট শুভ কুমার দে গুরুতর আহত অবস্থায় পলিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।