রাঙ্গুনিয়ায় যত্রতত্র অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মুরগি জবাই-ড্রেসিং

135

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মুরগী জবাই ও ড্রেসিং করা হয়ে থাকে। উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা সহ প্রায় বাজারে একাধিক মুরগির দোকান রয়েছে। আর এই সব দোকানে মুরগী জবাই ও ড্রেসিং করতে দেখা যায়। মুরগি জবাইয়ের পর বড় একটি ড্রেসিংয়ের ড্রামের মধ্যে মুরগিকে ফেলে গরম পানি দিয়ে সাধারণ ড্রেসিং করা হয়। সাধারণত মুরগি পালক, বিষ্ঠা, রক্ত, পানি এবং মুখে থাকা খাদ্য পানির সাথে মিশে এক ধরনের বিষাক্ত পানিতে পরিণত হয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাজার ভেদে শত শত মুরগি ড্রেসিং করা হয় এই বিষাক্ত পানির মধ্যে যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। আবার ড্রামের ভেতরেও বার বার জবাই করা মুরগির রক্ত সহ বর্জ্য গরম পানির সাথে মিশে একাকার হয়ে যায়। দোকানগুলোর কর্মচারীরা প্রতিটি মুরগি জবাই করে প্রথমে টিনের ড্রামের মধ্যে রাখে। কয়েক মিনিট পর সেখান থেকে মুরগি চামড়া, নাড়িভুঁড়ি, ছাড়িয়ে পলিথিনে ভরে গ্রাহকের হাতে তুলে দেয়। ড্রামগুলো রক্ত-পানিতে ভরে গেলে রাস্তার পাশে ড্রেনে ফেলে দেওয়া হয় এতে পরিবেশ দুষিত হয়। পরিস্কার না করার ফলে ড্রামগুলোর ভেতরে-বাইরে ময়লার স্তর জমে যায়। এতে মুরগিতে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে জানতে চাইলে পৌরসভার রোয়াজার হাট বাজারের এক মুরগী দোকানের কর্মচারি আবদুল গফুর বলেন, ভাই রাইতের বেলা সব ধোয়া হয়। আবার সকালে দোকান খোলার সময় ধোয়া হয়। দুই বেলা ড্রাম পরিষ্কার করলে ময়লার স্তর জমে থাকার সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, রক্ত জমে যায় তো। সহজে পরিষ্কার হয় না। সরেজমিনে বিভিন্ন দোকানে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার চন্দ্রঘোনা লিচুবাগানে, দোভাষী বাজারে মুরগী জবাই করার স্থানও ড্রেসিং করার স্থান এক সাথে। একই ধরণের মুরগী ড্রেসিং করতে দেখা যায় উপজেলার বিভিন্ন দোকানে। জানা যায়, ২০০৮-২০০৯ সালে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ নিয়ে হুলুস্থুল পড়ে যায়। তখন সরকার বার্ড ফ্লু নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক গুলো নিয়ম করেছিলেন। বার্ড ফ্লু আক্রমণ থেকে বাঁচতে হাতে গ্লাবসও মুখে মাক্স ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে দোকানিরা এখন আর তা ব্যবহার করেন না। অথচ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু বার্ড ফ্লু নয়, বর্তমানে যে পরিবেশে যে প্রক্রিয়ায় মুরগি জবাই করে বিক্রি করা হচ্ছে সেখান থেকে নানা ব্যাকটিয়া ও ভাইরাস জনিত রোগ ছড়াতে পারে। এই বিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, খোলা বাজারে মুরগী জবাই করা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মুরগি জবাই ও ড্রেসিং করলে বার্ড ফ্লু সহ নানা ধরন্রে রোগ জীবাণু ছড়াতে পারে। তাই আমি মনে করি বাজার কমিটির উচিত এই সব দোকানগুলো সঠিক ভাবে তরারকি করা।