রাঙ্গুনিয়ায় বেগুনি রঙের ধান চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠছেন কৃষক

141

রাঙ্গুনিয়ায় প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে বেগুনি রঙের ধান। এ ধান চাষে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন এ ধানের খেত দেখতে আগ্রহী মানুষ ভিড় করছেন। বিস্তৃত সবুজ ধান খেতের মাঝে বেগুনি রঙের ধান গাছ দেখে অনেকে অবাক হচ্ছেন। চট্টগ্রামের মধ্যে এ প্রথম রাঙ্গুনিয়ায় এ ধরণের চাষাবাদ হয়েছে বলে জানা যায়। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সৌন্দর্য ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ধান। এ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ অনেকটাই কম হয়। রোপণ থেকে ধান পাকতে সময় লাগে সর্বোচ্চ ১৩০-১৪০ দিন। অন্য জাতের ধানের চেয়ে এ ধানের গোছা প্রতি কুশির পরিমাণ বেশি থাকায় একর প্রতি ফলনও বেশ ভালো। ফলন হয় হেক্টর পতি ৪-৫ টন। অন্য সব ধানের তুলনায় এ ধান চিকন, তবে পুষ্টিগুণ অনেক। এ চালের ভাত খেতেও সুস্বাদু। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তর কুমার শীল বলেন, চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো রাঙ্গুনিয়ায় এ ব্যতিক্রমী চাষাবাদ করা হয়েছে। এক বিঘা পরিমাণ জমিতে গুমাইবিলের কাটাখালী এলাকায় এ চাষাবাদ করেন কৃষক মোহাম্মদ নুর উদ্দিন। অন্যদিকে পোমরা ইউনিয়নের বুড়ির দোকান এলাকায় একই পরিমাণ জমিতে বেগুনী রঙের ধানের চাষাবাদ করেন কৃষক মঈন উদ্দিন। নারায়ণগঞ্জ থেকে ৩ হাজার টাকা করে দুই কেজি বীজ সংগ্রহ করে এই দুই কৃষকের মাধ্যমে রাঙ্গুনিয়ায় এই ধরণের চাষাবাদ শুরু করেছি। এটির বিশেষত্ব হচ্ছে ধানের গাছ এবং ধান দুটিই বেগুনি। ইতোমধ্যেই কৃষক নুর উদ্দিন ও মঈনের মতো এই জাতের চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন অন্যান্য কৃষকরাও। অনেকেই এই জাতের বীজের অগ্রীম চাহিদা দিচ্ছেন। কৃষক নুর উদ্দিন বলেন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমারের সাহায্যে ৩ হাজার টাকা দিয়ে ১ কেজি ধান সংগ্রহ করে আমার ১ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেছি। ইতিমধ্যে ধানের গুছা বেশ হৃষ্টপুষ্ট হয়েছে। সবুজের মাঝে বেগুনি রঙের ব্যতিক্রমী এ চাষাবাদ দেখতে অনেকেই আমার জমিতে আসছেন। অনেক কৃষক এই ধান চাষ করতে আমার কাছে বীজ চেয়েছেন। ভাল ফলাফল পেলে আগামীতে অন্য চাষিদের নিয়ে আরও ব্যাপক আকারে চাষাবাদ করার ইচ্ছে রয়েছে। কৃষক মঈন উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যে ধান গাছের আকার-আকৃতি বেশ ভালো দেখা যাচ্ছে। আশা করছি, অন্যান্য ধানের তুলনায় ফলন ভালো হবে। ফলন ভালো হলে উৎপাদিত ধানগুলো বীজ আকারে রাখা হবে। সেই সাথে আগামীতে আশপাশের এলাকায় ওই ধানের চাষ বৃদ্ধি পাবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কারিমা আক্তার জানান, বেগুনি রঙের এই ধান বিদেশি নয়। এটা আমাদের দেশি জাতের ধান। বোরো মৌসুমে সাধারণত এই ধরণের চাষাবাদ হয়। চট্টগ্রামের মধ্যে এই প্রথম রাঙ্গুনিয়ায় এই জাতের ধানের আবাদ করা হয়েছে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে এই ধানক্ষেতগুলো নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। অনেকটা উফশী জাতের এ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ অনেকটাই কম হয়।পরীক্ষামূলক ভাবে দুইজন কৃষক দিয়ে শুরু করলেও উপজেলার অনেক কৃষক এমনকি রাঙ্গুনিয়ার বাইরেও অনেকে এই ধরণের চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন।