রাঙ্গুনিয়ায় প্যাথলজীর ভুল রির্পোটে প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ

117

প্রতিদিন কোন না কোন প্যাথলজীতে ভুল রির্পোটের কারণে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার অর্ধশতাধিক প্যাথলজীতে লাভজনক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বছরের পর বছর অবৈধ জমজমাট প্যাথলজী ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অভিযান পরিচালনা না হওয়ায় দিন দিন বেপোরোয়া ভাবে এ লাভজনক ব্যবসার পরিধি ক্রমশঃ বাড়ছে। স্বাস্থ্য সেবার ঝুঁকির মাঝে পড়ছে। প্যাথলজীর ভূল রির্পোটের কারণে মৃত্যুর পথে টেলে দিচ্ছে শত নারী পুরুষ সহ সকল বয়সের মানুষকে। এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্ট একটির সাথে অন্যটির মিল পাওযা যায়না। জানা যায়, রাঙ্গুনিয়ার অর্ধ শতাধীক প্যাথলজীর মাঝে ২/৪টির স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিধি মত সকল কিছু থাকলেও অধিকাংশ প্যাথলজীর নাম মাত্র পরিচয় দিয়ে জমজমাট ভাবে এ রোগ নির্ণয়কে ব্যাবসায় পরিণত করছে। জানা যায়, একটি প্যাথলজী করতে হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স, ভেট লাইসেন্স,আয়কর, স্থানীয় ট্রড লাইসেন্স,পরিবেশ ছাড় পত্র,আরসিও রেডিসন কন্টোল অফিসার সাটিফিেিকট,ফায়ার লাইসেন্স,ইউনিয়ন পরিষদেও সাথে বর্জ অপাসারণ চুক্তির লাইসেন্স। প্রতিটি প্যাথলজির ফাইলে যথাযথভাবে টেকনিশিয়ানের সার্টিফিকেট ঝুলিয়ে রাখলেও নেই শুধু ওই সার্টিফিকেটের মানুষটি। হাসপাতালের অধিকাংশ টেকনিশিয়ান বাইরের প্যাথলজিতে কাজ করলেও হাসপাতালে তারা কোন কাজ করতে চায় না। হাসপাতালে রোগীদের বিভিন্ন অজুহাতে ফিরিয়ে দিয়ে প্যাথলজিতে পাঠিয়ে কসাইয়ের মতো টাকা আদায় করছে। ব্যাঙের ছাতার মতো প্রতিনিয়ত গৌরীপুরের আনাচে-কানাচে গড়ে উঠছে প্যাথলজি। বিভিন্ন প্যাথলজিতে ভুয়া ও অনভিজ্ঞ টেকনিশয়ান দ্বারা রোগীর প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা ও রিপোর্টে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন উপজেলার ৪ লক্ষাধিক মানুষ। সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সঙ্গে গোপন সমঝোতায় ঝাড়ুদার, পিয়ন দিয়ে চলছে প্যাথলজি ল্যাবরেটরিগুলো। সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফাইলে টেকনিশিয়ানের সার্টিফিকেট থাকলেও প্যাথলজিগুলোতে নেই। চন্দ্রঘোনা ডাক্তার পাড়া খ্যাত দোভাষীবাজারে এসব প্যাথলজী ডাক্তারদের সাথে কমিশন চুক্তিতে প্রতিদিন রোগীদের থেকে থেকে রোগ নির্ণয়ের জন্য ভুয়া রির্পোট দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্যাথলজীর মারিকগুলো ব্যাপক অর্থ বিত্তের মালিক হচ্ছে। এটি লাভবান ব্যবসা হিসেবে এলাকায় নতুন প্যাথলজী গড়ে উঠছে। সরকারী নির্দেশনা বাধ্যাতামুলক থাকলেও এরা ডেমকেয়ার মনোভাব দিয়ে প্যাথলজী ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। চন্দ্রঘোনা দোভাষি বাজারে কর্নসাস প্যাথলজী, চন্দ্রঘোনা প্যাথলজী,ন্যাশনাল প্যাথলজী,হেলথ কেয়ার প্যাথলজী, কর্ণফুলী প্যাথলজী,সেবা প্যাথলজী, শ্যামলী প্যাথলজী,মুন প্যাথলজী, চন্দ্রঘোনা ডায়বেটিস হাসপাতাল সাাইন বোর্ড পুঁজি করে চলছে প্যাথলজি। এসব প্যাথলজিতে কোন টেকনিশিয়ান নেই। সরেজমিন গিয়ে পাওয়া গেছে শুধু রক্ত মলমুত্র পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের জন্য ২/৩ জন মহিলা ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি। এদের কাছে জানতে চাইলে তারা কিছু জানেনা বলে জানান। অনেক প্যাথলজীতে রির্পোট স্বাক্ষর করা দেখতে পায়। এসব প্যাথলজীতে রোগী আনার জন্য নানা কৌশলের পাশাপাশি দালালের মাধ্যমে রোগী আনার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিযোগিতা মুলক এসব ডায়গনস্টিক সেন্টারে মানুষের জীবন মরনের বিষয় থাকলেও তারা তা গুরুত্ব সহকারে দেখেনা। চন্দ্রঘোনা দোভাষী বাজার মা মণি ডায়াগনস্টিক ও বিশেষ চিকৎসকের সেন্টারের পরিচালক দ্বীন মোহাম্মদ জানান, আমরা সরকারী সকল নিদের্শনা মেনে প্যাথলজী চালিয়ে যাচ্ছি। সব কাগজ পত্রাদি বছরে নবায়ন কওে আসছি। মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতি আমরা গুরুত্ব দিয়ে আসছি। চন্দ্রঘোনা খ্রিস্টিয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার প্রবীর খিয়াং জানান, আমাদেও হাসপাতালের প্যাথলজীর রির্পোটের সুনাম বহু বছর আগে থেকে। আমরা সরকারের সকল বিধি মেনে প্যাথলজী চালিয়ে যাচ্ছি। রাঙ্গুনিয়া হেলথ কেয়ার ডায়গনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালের ম্যানাজার মো. ইসমাইল হোসেন জানান, আমরা সকল রিপোট চট্টগ্রামের নামকরা ডাক্তার দ্বারা পরীক্ষার রির্পোট করে থাকি। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ কর্মকর্তা রাজীব পালিত জানান, ভূয়া প্যাথলজীগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান জানান, এসব ভুয়া প্যাথলজীর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।