রাঙ্গুনিয়ায় নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী

39

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বাজারগুলিতে নিত্য প্রয়োজনীয় নানা পণ্যেরদাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। দোকানিরা সিন্ডিকেট করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষ পত্রের দাম বাড়াচ্ছে। কারো যেন এখানে কিছু করার নেই। একেক দোকানে পণ্যের একেক মুল্য। সাধারণ ত ক্রেতারা ঠকছেন। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় অর্ধশতাধীক বাজারে কোন নিয়ম না মেনে নিত্য পণ্যের দাম বাড়িয়ে ইচ্ছেমত দোকানীরা দাম নিচ্ছে। সাধারণত এখানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান গুলোতে মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করার পর দুয়েকদিন দাম ঠিক থাকলেও আবার ক্রেতাদের থেকে ইচ্ছে মত দাম নিয়ে নেয়। হাটবাজারে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা চালু রাখার জোর দাবি জানিয়েছেন ক্রেতারা। উপজেলার লিচুবাগানে কয়েকটি দোকানে মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য ও নকল পণ্যে এবং অসাস্থকর পণ্য বিক্রি করে যাচ্ছে বছরের পর বছর। দামও নিচ্ছে ইচ্ছেমত। উপজেলার চন্দ্রঘোনা দোভাষীবাজার, রোয়াজার হাট, চৌমহনী, রাণীর হাট, ধামাইর হাট, মোগলের হাট, ক্ষেত্র বাজার, শান্তির হাটে কোন দোকোনে পণ্যের দামের তালিকা টাঙ্গানো নেই। সরকারের কোন নিয়ম নীতি এরা মানেনা। আবার এসব বাজারে ক্রেতাদের ওজনে কম দেওয়ার অহরহ ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় এরা সাধারণ মানুষকে ওজনে কম দেওয়াটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। চন্দ্রঘোনা বাণিজ্যিক কেন্দ্র লিচুবাগানে বাজার করতে আসা স্কুল শিক্ষিকা রওশন শরীফ তানি জানান, আমাদেরকে নানাভাবে ঠকাচ্ছেন দোকানীরা। দাম দিন দিন বাড়া ছাড়া কমতে দেখিনি। দাম আমাদের নাগালের বাইরে। নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী, ক্রেতাদের নাভিশ্বাসের শেষ হচ্ছেনা। বাজারে প্রশাসনের নজর থাকলে আমরা রক্ষা পাব। প্রতিটি হাট বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা থাকার জোর দাবি জানান। জানা যায়, ভরা মৌসুমেও বিভিন্ন খোলা ও পাইকারী বাজারে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহার্য তরি তরকারি ও শীতকালীন সবজির দাম আকাশচুম্বি। পেয়াজের সাথে পাল্লা দিয়ে শীতকালীন সবজির দামেও চলছে কমা-বাড়ার খেলা। গত কিছুদিন ধরে দাম বাড়তে থাকা পেঁয়াজের মূল্য নির্ধারণে সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার আশ্বস্ত করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। অনেক পরিবারে পেঁয়াজ ছাড়াই চলছে রান্না। এখানকার বিভিন্ন স্থায়ী এবং অস্থায়ী হাট-বাজারগুলোতে নিত্যপণ্যের দামে বিস্তর তারতম্য লক্ষ্য করা গেছে। হাট বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় দোকানগুলোতে সরকার প্রদত্ত নিত্যপণ্যের দামের তালিকাও টাঙানো হয়নি। এক শ্রেণির অধিক মুনাফাখোর ও মজুদদার ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ, আদা, রসুন, প্রয়োজনীয় তরি তরকারি সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। সরেজমিনে পাইকারি ও খুচরা মার্কেটে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে পেঁয়াজ, আদা, রসুন, মাছ, ও কাঁচা শাকসবজির দাম ১০ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়েছে। মাছের বাজারে যেন আকাল চলছে। তবে কিছু কিছু পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাছ, মাংস, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও সবজির দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাজারে আসা সাধারণ ক্রেতারা ক্ষোভ ঝাড়ছে মুখের ভাষায়। কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজের (বার্মিজ) কেজি ১৭০ থেকে ২০০ টাকা, বড় পেঁয়াজ ১২০-১৩৫, আদা প্রতি ১৮০ টাকা, ছোলা ৭০ টাকা, মসুরডাল ১২০ টাকা, ডিম প্রতি হালি ৩২ টাকা থেকে বেড়ে ৪০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এছাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে চাল, চিনি, আটা, ময়দা, গুড়ো দুধ ও তরল দুধের দাম। অন্যদিকে কাঁচা শাকসবজির দামও বেড়েছে। কাঁচা মরিচ কেজি ৪০-৫০ টাকা, প্রতি কেজি শসা ৫০ টাকা, ঝিঙে ৫৫-৬০ টাকা , চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ফুলকপি ৬০-৭০ টাকা, বাঁধা কপি ৩৫-৪০ টাকা, ধনে পাতা ১৫০-১৬০ টাকা কেজি, তিত করলা ৬০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, মুলা ৩০-৩৫ টাকা, নতুন আলু ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়শ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে বেগুন স্থানীয় ৬০ টাকা, ফার্ম বেগুন ৩৫-৪০ টাকা, টমেটো ৮০-১০০ টাকা। সরকারিভাবে নিয়মিত বাজার নজরদারির কথা থাকলেও কারো মাথা ব্যথা নেই। ফলে নিত্যপণ্যের বাজারে চলছে নৈরাজ্য এবং সাধারণ মানুষের বাড়ছে দীর্ঘশ্বাস। এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, ইচ্ছেমত দাম নিলে তাদেও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব। বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।