রাঙ্গুনিয়ায় নিখোঁজ গৃহবধূর লাশ কর্ণফুলী থেকে উদ্ধার

58

রাঙ্গুনিয়ায় নিখোঁজের একদিন পর গৃহবধূর লাশ কর্ণফুলী নদী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত গৃহবধূ সাহেদা শারমিন (১৯) স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের শান্তি নিকেতন গ্রামের মো. শহীদুল্লাহর মেয়ে। গত মঙ্গলবার সকালে পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডস্থ দক্ষিণ নোয়াগাঁও শ^শুড় বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন তিনি। গত বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রাউজানের কর্ণফুলী নদীর খেলাঘাট থেকে তার লাশটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে নিহতের স্বজনরা গিয়ে লাশটি সনাক্ত করেন। এই ঘটনায় নিহত গৃহবধূর পিতা মো. শহীদুল্লাহ বাদী হয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় গৃহবধূর স্বামী মো. আলমগীরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। লাশটি ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম চৌধুরী।
রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ মো. আহসানুল কাদের ভুইঞা বলেন, হত্যা মামলা হওয়ায় স্বামী আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে খেলাঘাটে গিয়ে দেখা যায় নদীপাড়ে লোকের ভিড়। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে সুরতহালের জন্য ব্যস্ত রয়েছে। এই সময় মেয়ের বাবা মো. শহীদুল্লাহ নদীপাড়ে বিষন্ন হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৬ মাস আগে মেয়ের বিয়ে হয়। গত মঙ্গলবার শ^শুড়বাড়ি থেকে মেয়ে নিখোঁজের খবর পেয়ে ঐ দিনই থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করি। লাশ পাওয়ার পর গত বুধবার মেয়ের স্বামীকে প্রধান আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করি।’ তিনি বলেন, তার মেয়েকে খুন করে নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে। বিয়ের পর থেকে স্বামী তার মেয়েকে প্রায়সময় মারধর করত। ঝগড়া বিবাদ করত। এ হত্যার জন্য আলমগীরের ফাঁসি দাবি করেন।
গ্রেপ্তারের পূর্বে লাশটি উদ্ধারের সময় সাহেদার স্বামী আলমগীরও নদীপাড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় তিনি জানান, ঢাকায় একটি আবাসিক ভবনে কেয়ারটেকার হিসেবে চাকরি করেন। ১৮ এপ্রিল স্ত্রীর বড় ভাই মো. রাসেলের বিয়ে উপলক্ষে সে বাড়িতে এসেছিল। ২৯ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে বাসে ঢাকায় চলে যান। মঙ্গলবার সকালে সে জানতে পারেন তার স্ত্রী নিখোঁজ। সংবাদ পেয়ে সে বাড়িতে আসেন।
মামলার তদন্তকারী অফিসার মোহাম্মদ ইসমাইল জানান, পারিবারিক কলহে হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়। ২৯ এপ্রিল বিকাল ৩টার পর থেকে ১ মে’র মধ্যে যে কোন সময়ে এটি ঘটে। লাশটি পানিতে ভাসায় বিকৃত হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশটি মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্বামী প্রাথমিকভাবে স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করছে। তাকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। আদালতে রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হবে। ঘটনার সাথে আর কারা জড়িত তদন্তে জানা যাবে।