রাঙামাটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বাড়ছে শিক্ষার্থী

252

কারিগরি প্রতিষ্ঠান মানেই আত্মকর্মসংস্থান। কারিগরি প্রতিষ্ঠান মানে বেকারত্ব দূরিকরণের প্রতিষ্ঠান। কারিগরি মানেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রতিষ্ঠান। কারিগরি মানেই সফল ভাবে বেঁচে থাকার প্রতিষ্ঠান। কারিগরি মানেই সামাজিক ভাবে জীবিকা নির্বাহের প্রতিষ্ঠান। কারিগরি মানেই বিদেশে রপ্তানিকরণ প্রতিষ্ঠান। রাঙাামাটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বেকারত্বের অভিশাপ দূরীকরণের একটি প্রতিষ্ঠানের নাম। ছাত্র-ছাত্রী সংকুলান না হওয়ায় আসন সংখ্যা বাড়ানোর দাবি শিক্ষার্থীদের।
রাঙামাটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি রাঙামাটি সদরের ১০২ নং রাঙ্গাপানি মৌজার রাঙামাটি সরকারি কলেজের পাশর্^বর্তী এলাকায়। এ প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যদিও সরকারি একটি প্রতিষ্ঠান কিন্তু বিগত দিনে কৃতিত্ব তেমন কিছুই ছিলনা। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি সকল দিক দিয়ে বিভিন্ন ভাবে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে।
বর্তমান সরকারের শত প্রচেষ্টায় ও বর্তমান প্রিন্সিপালের আন্তরিকতায় একটি আধুনিক কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে প্রতিষ্ঠানটি।এখানে লেখা-পড়ার পাশা পাশি খেলাধুলাসহ বিনোদনের সুব্যবস্থা রয়েছে। বিভিন্ন ভাবে অর্জন করছে অনেক কিছুতেই। প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষও পুরো ভবনে রয়েছে সিসি ক্যামেরার আওতায়। এছাড়াও রয়েছে ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব এবং শিক্ষক শিক্ষার্থী দের জন্য ডিজিটাল হাজিরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাঙামাটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যে কোন স্কুল-বা মাদ্রাসা থেকে অষ্টম শ্রেণি পাশ করে ২বছরের জন্য জেনারেল ইলেকট্টনিক্স, অটোমোটিভ, উড্ওয়ার্কিং, ইলেকট্রিক্যাল মেইনটেন্যান্স ওয়াকর্স, জেনারেল মেকানিক্স, জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং, ওয়েল্ডিং অ্যান্ড ফেব্রিকেশন সহপ্রায় ৮-৯টি ট্রেডে ভর্তি হয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ সমমান (এসএসসি) পাশ করা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন ট্রেডে ৬মাস,৪ মাস, ৩মাস,ও ২মাসের ও প্রশিক্ষণ করা যায়। যেসব প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বিদেশে যাওয়া যায় সেগুলো হলো-মোটর ড্রাইভিং,ওয়েল্ডিং, গার্মেন্টস সেলাই প্রশিক্ষণ,কম্পিউটার,গ্রাফিক্স ডিজাইন,রিফ্রিজারেশন এয়ারকন্ডিশন ও জেনারেল ইলেকট্টনিক্স ইত্যাদি।
শিক্ষার্থীরা জানান, আগের তুলনায় এখানে অনেক ভাল পড়ালেখা ও হাতে কলমে শিক্ষা প্রদান করা হয়। শিক্ষকেরা অত্যন্ত যতœ সহকারে দক্ষতার সাথে সকল ট্রেডে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। প্রত্যেক ক্লাশে ৩০-৪০জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সকল শিক্ষার্থীকে হাতে কলমে শিখানো হচ্ছে। আর শিক্ষার্থীরা ও আন্তরিকতার সাথে মনযোগ দিয়ে পড়াশুনা করছে। এ প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করে বিভিন্ন পলিটেকনিক ও কলেজে পড়ছে। কেউ কেউ নিজস্ব কর্মসংস্থান গড়ে তুলছে। আবার কেউ দেশের বাহিরে চলে যাচ্ছে।তবে সব কিছ ুমিলে বেকারত্ব দূর করাই এ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান লক্ষ্য ও টার্গেট।
ড্রাইভিং ট্রেনিং কোর্সে-এ ভর্তি হওয়া নবাগত শিক্ষার্থী মোঃ নাছির উদ্দিন জানান, অল্প দিন হলো ভর্তি হয়েছি। শিক্ষকদের যে আন্তরিকতা দেখেছি তাতে আমি মুগ্ধ। শিক্ষকরা আন্তরিকতার সাথে প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকেন। শিক্ষার্থীরা মনযোগ দিয়ে শিখলে খুব সহজেই আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারবে।
রাঙামাটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রিন্সিপাল মোঃ সানা উদ্দিন শেখ বলেন, প্রতিষ্ঠনটিতে প্রায় ১২শ’ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। এর মধ্যে এসএসসি (ভোকেশনাল) কোর্সে ৬৪০জন নিয়মিত শিক্ষার্থী আর বাকিরা ৬ মাস, ৪ মাস, ৩মাস, ও ২মাসের শর্ট কোর্স করে সাটিফিকেট নিয়ে বের হয়ে যায়। অনেকে এখান থেকে সাটিফিকেট নিয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে। তিনি আর ও বলেন, আসন সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় এ প্রতিষ্ঠানটিতে ভর্তি ইচ্ছু অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতি বছর যে হারে শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে তাতে ক্লাশ রুমে সংকুলান হচ্ছে না। জরুরিভাবে ভবন ও জনবল বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।