রাঙামাটির ৮ উপজেলায় আ. লীগের প্রার্থী চুড়ান্ত

79

রাঙামাটির ৮টি উপজেলায় নৌকা প্রতীকে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকে প্রার্থী চ‚ড়ান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, রাজস্থলীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উবাচ মারমা, কাপ্তাইয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মফিজুল হক, রাঙামাটি সদরে জেলা স্বোচ্ছাসেবকলীগ সহ-সভাপতি শহিদুজ্জামান মহসিন রোমান, কাউখালীতে কাউখালী উপজেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামশুদ্দোহা চৌধুরী, লংগদুতে লংগদু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল বারেক সরকার, বরকলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সবির চাকমা, বিলাইছড়িতে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জয়সেন তঞ্চঙ্গা ও জুরাছড়িতে আওয়ামী লীগ নেতা রুপ কুমার চাকমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি মুছা মাতব্বর জানান, জেলা কমিটির কাছে উপজেলা প্রার্থীদের বায়োডাটা জমা হলে সেগুলো কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।কেন্দ্র মাঠ পর্যায়ে খোঁজ-খবর নিয়ে যাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করছে তারাই আগামী মার্চ মাসে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবেন। কেন্দ্র থেকে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে সে সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে নেতাকর্মীরা ওই প্রার্থীর জন্যই কাজ করবে। তবে নানিয়াচর উপজেলায় নির্বাচন এখনো অনেক দেরি আছে আর বাঘাইছড়িতে আওয়ামী লীগ কোন প্রার্থী দেবেনা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আমেজ কাটতে না কাটতেই রাঙামাটিতে বইতে শুরু করেছে উপজেলা নির্বাচনের হাওয়া। এরই মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত ৩ ফেব্রæয়ারির তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। মার্চ মাসের মাঝামাঝি রাঙামাটিতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বর্তমান চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যনদের অনেকে আবারও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জেলার ১০ উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান অরুণ কান্তি চাকমা আবারও আসন্ন নির্বাচনে প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানান। অরুণ কান্তি চাকমা গত নির্বাচনে জেএসএস’র (জনসংহতি সমিতি) সমর্থনে স্বতন্ত্র হিসেবে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে যখন আছি, তাই আগামী নির্বাচনের চিন্তাভাবনা তো রয়েছেই। এজন্য প্রস্তুতিও রয়েছে। তাছাড়া জনগণ আবারও আমাকেই চাইছে। দল ও জনগণ গতবার বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করেছে। গত পাঁচ বছরে যতদূর সম্ভব জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পাঁচ বছর খুব একটা বেশি নয়। তাই আবারও চাই, জনগণের কাজ করতে। আবারও জয় নিয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী।

এদিকে সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার ১০ উপজেলা সমন্বয়ে গঠিত ২৯৯-পার্বত্য রাঙামাটি আসনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী দীপংকর তালুকদার। এতে সামনে যে কোনো নির্বাচনে জয় নিয়ে উজ্বল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে দলটির নেতাকর্মীদের ভেতর। আর সেই উচ্ছ¡াস, প্রেরণা ও উদ্দীপনা নিয়ে জেলায় আসন্ন উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। সার্বিকভাবে জেলার ১০ উপজেলার মধ্যে সদরের গুরুত্ব অন্যতম। তার বিবেচনায় সদরে প্রভাবশালী প্রার্থী দেয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে সব দলেরই। এসব বিবেচনায় এবার রাঙামাটি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে তরুণ প্রভাবশালী নেতা ও শহরের সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান মো. শহীদুজ্জামান রোমান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন।
পরিবহন নেতা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শহীদুজ্জামান রোমান দানবীর সমাজসেবক মরহুম হাজী মো. মহসীনের ছেলে। শহর ছাত্রলীগের সাবেক এ সাধারণ সম্পাদক বর্তমানে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি। এমবিএ পাস করা উচ্চশিক্ষিত তরুণ নেতা রোমান গত পৌরসভা নির্বাচনে রাঙামাটিতে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। শেষে দলীয় মনোনয়নে রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন জেলা যুবলীগের সভাপতি আকবর হোসেন চৌধুরী।
মোট ১০ উপজেলা নিয়ে গঠিত রাঙামাটি জেলা। এগুলো হল- সদর, কাপ্তাই, রাজস্থলী, কাউখালী, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, বরকল, লংগদু ও বাঘাইছড়ি। এসব উপজেলায় একাধিক ধাপে সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালের মার্চে। সেই নির্বাচনে অংশ নেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং আঞ্চলিক দল জনসংহতি সমিতি, ইউপিডিএফ ও সংস্কারবাদী জেএসএস মনোনীত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। ছিলেন নির্দলীয় প্রার্থীও।