রাঙামাটির ৭০৮ বিদ্যালয়ের ১৩৩টিই ঝুঁকিপূর্ণ

37

রোদ হলে যেমন তেমন করে চলে। বৃষ্টি হলে আর রক্ষা নেই। ছাতা মাথায় নিয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা দিতে হয়। এমনই বেহাল দশা রাঙামাটির বরকল উপজেলায় এরাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। শুধু এ বিদ্যালয়টি নয়, জেলার ৭০৮ বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৩৩টিই ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমছে বলে জানিয়েছেন ওইসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
এরাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেন বলেন, আমার বিদ্যালয়ে দুই শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। একটি টিনশেড ঘরে তিনটি এবং পাকা ভবনে দু’টিসহ ৫টি কক্ষে চলে শিক্ষা কার্যক্রম। পাকা ঘরটির ছাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। টিনশেড ঘরেরও একই অবস্থা। কিছু দিন আগে টিনশেড ঘরটি কিছুটা মেরামত করা হয়েছে। তারপরও বৃষ্টি শুরু হলেই শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়। না হয় মাথায় ছাতা দিয়ে পড়ালেখা চালাতে হয়। বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি একদম কমে যায়। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
রাঙামাটি সদর ইউনিয়নের বালুখালী বটতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রুপক চাকমা বলেন, আমার বিদ্যালয়ের ছাদের বিম ফেটে গেছে। প্রায় সময় পলেস্তারা খসে পড়ে। ছোট ছোট বাচ্চাকে নিয়ে খুব আতঙ্কে থাকি। যদি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে তার দায়ভার তো আমাদের ওপর এসে পড়বে। তাই দ্রুতই বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ করা না হলে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বাঘাইছড়ি উপজেলার পূর্ব আমতলী সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়েছিল ১৯৮২ সালে। ২০১৫ সালে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পরও এখনও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে একটি রুমে পাঠদান এবং একটি রুমে লাইব্রেরি রুম রাখা হয়েছে বলে জানান বিদ্যালয়ের সরকারী শিক্ষক মো. মো স্তাফিজ।
তিনি বলেন, আমাদের টিনশেড একটি ঘর আছে যাতে ছাত্র-ছাত্রীদের বসার স্থান না হওয়ার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হচ্ছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সোনা মিত্র চাকমা বলেন, ‘বাঘাইছড়ি উপজেলা অন্যান্য উপজেলা থেকে একটু বেশি দুর্গম এলাকা। এজন্য অনেক বিদ্যালয়ে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এই উপজেলায় ১১৬টি বিদ্যালয় আছে, যার মধ্যে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ প্রায় ১৫-২০টি।
জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, রাঙামাটি জেলায় ৭০৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যার মধ্যে ২০১৭ সালে মার্চে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৮১টি বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। সেই বিদ্যালয়গুলো সবচেয়ে খারাপ অবস্থা। সব মিলিয়ে মোট ১৩৩ বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আমরা এসব বিদ্যালয়ের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।