রাঙামাটির সাজেকে হামে ৬ শিশুর মৃত্যু

73

বাঘাইছড়ি উপজেলার দুর্গম এলাকা হিসেবে পরিচিত সাজেক ইউনিয়নের তুইচুই ও শিয়ালদাহ মৌজার অধীনে হাম রোগে সম্প্রতি ৬ শিশু মারা গেছে। এখানে আরো প্রায় শতাধিক শিশু হাম রোগে আক্রান্ত বলে জানা গেছে।
সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেনসন চাকমা নয়ন ও ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার হিরানন্দ ত্রিপুরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা জানিয়েছেন, গত ফেব্রূয়ারির ২৬ তারিখ থেকে চলতি মার্চ মাস (গতকাল শুক্রবার) পর্যন্ত ৬ জন শিশু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বেসরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা ৬ জন বলা হলেও সরকারি হিসেবে এ সংখ্যা ৫ জন বলেও তারা জানান।
সাজেকে হাম রোগে মৃত্যুবরণ করা শিশুরা হলেন রোজিনা ত্রিপুরা (৮), সাগরিকা ত্রিপুরা (১১), কহেন ত্রিপুরা (৩), বিষান ত্রিপুরা (২), কোলাই ত্রিপুরা (২) ও মনে ত্রিপুরা (দেড় বছর)।
সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেনসন চাকমা নয়ন ও ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার হিরানন্দ ত্রিপুরা মুঠোফোনে বলেন, হাম রোগের প্রাদুর্ভাবের খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে উপজেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, সেনা, বিজিবি অন্য আক্রান্ত শিশুদের রক্ষায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রোগটি নিয়ন্ত্রণে না আসার কারণ ওই এলাকার জনসাধারণ একেবারেই অশিক্ষিত ও অসচেতন। যার কারণে চিকিৎসা দিয়েও ব্যর্থ হচ্ছে কর্তৃপক্ষ। অপর দিকে ওই সব এলাকার সাথে সদর উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা পায়ে হাটাপথ। ফলে হাম রোগিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদরে আনা সম্ভব নয়। তবে প্রশাসন আন্তরিক রয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সকালে বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আহসান হাবিব জিতু মুঠোফোনে বলেন, গত ফেব্রæয়ারি মাসের শেষের দিকে ওই এলাকায় হাম রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। গত ২ ফেব্রæয়ারি ১ শিশু মারা যায়। ওই খবর পাওয়ার সাথে সাথে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও স্বাস্থ্য বিভাগ মিলে তাদের চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসা হয়। গত ২৭ ফেব্রূয়ারিও ২ জন শিশু মারা যায়। সর্ব শেষ গত ৮ মার্চ আরো ২ জন শিশু মারা গেছে। সরকারি হিসাব মতে,এ পর্যন্ত ৫ জন শিশু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সর্বশেষ প্রায় একশ’জন শিশু আক্রান্ত হওয়ার খবর দিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। ওই এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় চিকিৎসা টীমের সদস্যদের পায়ে হেঁটে ঘটনাস্থলে যেতে হচ্ছে। তবে আজ (শুক্রবার) সকাল থেকে শুনেছি পরিস্থিতি উন্নতির দিকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইফতেখার আহম্মদ মুঠোফানে বলেন, গত ফেব্রূয়ারি মাস থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ৫ জন শিশু মারা গেছে। ওই এলাকার ৭টি গ্রামে হাম ও অন্যান্য রোগে প্রায় একশতের বেশী শিশু হাম রোগে আক্রান্ত। এলাকার লোকজন অসচেতন বিধায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদরে আনা সম্ভব হচ্ছে না। এব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দের জন্য এবং উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির জন্য চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে।