রাঙামাটিতে সম্মেলন ঘিরে সরব আ. লীগ

50

রাঙ্গামাটিতে সম্মেলন ঘিরে মাঠে সরব সরকারি দল আওয়ামী লীগ। সাংগঠনিক কাজে চাঙ্গা দলটির জেলা, উপজেলাসহ তৃণমূল কমিটিগুলো। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে কর্মচাঞ্চল্য।
নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে সাংগঠনিক ব্যস্ততা নিয়ে দিন পার করছেন তারা। দলীয় পদ-পদবী পেতে লবিং-তদবিরে ব্যস্ত রয়েছেন সবাই। এরই মধ্যে জেলার প্রায় সবকটি উপজেলার সম্মেলন শেষ হয়েছে। সম্পন্ন হয়েছে ইউনিয়ন, ওয়ার্ডসহ তৃণমূলের সম্মেলন। সম্মেলন গুছিয়ে এনেছে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। আগামী ২৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে জেলা কমিটির সম্মেলন।
দলীয় সূত্র জানায়, তৃণমূলের সম্মেলন শেষে ২৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এ লক্ষ্যে দলটির জেলা কমিটির মধ্যে চলছে জোরালো প্রস্তুতি।
জেলার কয়েকজন নেতা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পাহাড়ে আওয়ামী লীগের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে এবং পাহাড়ি বাঙালির মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি জোরদারে আসন্ন জেলা সম্মেলন ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। এ লক্ষ্যে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারের নেতৃত্বে পাহাড়ে দলের ভাবমূর্তি অক্ষুণœ রাখতে জোরেশোরে চলছে সাংগঠনিক কার্যক্রম। আসন্ন সম্মেলনে দলের ত্যাগী ও বিচক্ষণ নেতাকর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়ে আসার চিন্তাভাবনা করছেন নেতাকর্মী সবাই।
জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা মাতব্বর বলেন, এ জেলায় আসন্ন ২৫ নভেম্বরের সম্মেলন সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে জেলার ৫০ ইউয়িনে সম্মেলন করে ওয়ার্ড কমিটিসহ ইউনিয়ন কমিটিগুলো পুনর্গঠন করা হয়েছে। জেলার ১০ উপজেলার মধ্যে নয়টিতে সম্মেলন সম্পন্ন করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যার কারণে বরকল উপজেলা সম্মেলন স্থগিত রাখা হয়েছে। বাকি সবকটি উপজেলায় সম্মেলনের মাধ্যমে কাউন্সিলরদের সরাসরি ও প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। প্রত্যেক উপজেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাদেরকে জেলা সম্মেলনের আগে প্রত্যেক উপজেলা থেকে প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি জেলা কমিটিতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। জেলা সম্মেলনের আগে ওইসব উপজেলা কমিটির অনুমোদন দেয়া হবে। স্থগিত রাখা বরকল উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনও সম্পন্ন করা হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, এরই মধ্যে শেষ হওয়া সম্মেলনে ৯ উপজেলায় নির্বাচিত হয়েছেন সদরে সভাপতি দীপক বিকাশ চাকমা, সাধারণ সম্পাদক সুখময় চাকমা, কাপ্তাইয়ে সভাপতি অংসুই ছাইন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল, বিলাইছড়িতে সভাপতি অভিলাষ তঞ্চঙ্গ্যা, সাধারণ সম্পাদক শাহীদুর ইসলাম সাইদুর, জুরাছড়িতে সভাপতি প্রবর্তক চাকমা, সাধারণ সম্পাদক জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা, লংগদুতে সভাপতি আবদুল বারেক সরকার, সাধারণ সম্পাদক বাবুল দাশ বাবু, বাঘাইছড়িতে সভাপতি বৃষ কেতু চাকমা, সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, নানিয়ারচরে সভাপতি আবদুল ওহাব, সাধারণ সম্পাদক এলিপন চাকমা, কাউখালীতে সভাপতি অংসুইপ্রæ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এরশাদ সরকার এবং রাজস্থলীতে সভাপতি উবাচ মারমা ও সাধারণ সম্পাদক পুচিমং মারমা।
এদিকে আসন্ন ২৫ নভেম্বরের সম্মেলন সামনে রেখে সাংগঠনিক প্রস্তুতির পাশাপাশি জেলা কমিটির বিভিন্ন পদে নির্বাচন করতে তৎপর অনেকে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্ব›দ্বী অনেকের নাম ওঠে আসছে। তাদের মধ্যে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা মাতব্বর, যুগ্ম সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক জমির উদ্দিন, কার্যনির্বাহী সদস্য ও রাঙামাটি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেলসহ আরও কয়েক জনের নাম শোনা যাচ্ছে। এসব প্রার্থী দফায় দফায় কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। সমর্থন আদায়ে যাচ্ছেন, তাদের দ্বারে দ্বারে।
জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি রয়েছেন, সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। তিনি ১৯৯৬ সাল হতে প্রত্যেক সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে আসছিলেন। দলীয় সূত্র মতে, দীপংকর তালুকদার এমপি এবারও সম্মেলনে প্রার্থী না থাকায় পুনঃরায় সভাপতি হচ্ছেন।