রাঙামাটিতে তিন শিক্ষার্থীর দোকানদারি

52

রাঙামাটিতে তিন শিক্ষার্থীর দোকানদারি। শহরের কোর্টবিল্ডিং এলাকা গাউছিয়া মার্কেটে দীর্ঘ-২-৩ বছর ধরে এই তিন শিক্ষার্থী একটি প্রিন্ট এ্যাড এন্ড ষ্টেশনারি দোকান সফল ভাবে পরিচালনা করে আসছে।প্রথমে মো.ওমর মোর্শেদ সামান্য পুঁজি নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি শুরু করে।পরে তার সাথে যুক্ত হয় তাঁর ছোট নুর মোহাম্মদ হাছিব (৮ম শ্রেণির ছাত্রীর শিক্ষার্থী)। ধীরে ধীরে ওমরের ব্যবসা যখন একটি পর্যায়ে বাড়তে থাকে তখন তাঁর নিকটতম (উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয়ে) প্রাইভেটে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবু বক্কর ছিদ্দিক এসে ওমরের সাথে যুক্ত হয়।
বর্তমানে এই তিন শিক্ষার্থী মিলে কোর্ট বিল্ডিং এলাকা শহরের গাউছিয়া মার্কেটে প্রিন্ট এ্যাড এন্ড ষ্টেশনারি নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেআসছে। এরা তিন জনের মধ্যে মো.ওমর মোর্শেদ রাঙামাটি সরকারি কলেজে (বিএ) পড়াশুনা করে আর নুর মোহাম্মদ হাছিব বনরুপাস্থ ফরেষ্ট রোড আল আমিন মডেল ফাজিল মাদ্রাসায় ৮শ্রেণিতে অধ্যায়নরত। মো.আবু বক্কর ছিদ্দিক উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ে।
প্রিন্ট এ্যাড ও ষ্টেশনারি দোকানের মালিক মো.ওমর মোর্শেদ প্রকাশ ওমর জানান,তারা কেউ মাদ্রাসা, স্কুল ও কলেজ ফাঁকি দিয়ে বা পড়া শুনা বাদ দিয়ে ব্যবসা করছে না। তাঁরা তিন জনই স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত ছাত্র।সে বলে দোকান দারিতে তাদের পড়ালেখার কোন ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে না। এখানে মজার বিষয় সুন্দর ভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে বিএ প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় সে ভাল রেজাল্ট করেছে। একই ভাবে হাছিব ও বক্কর পড়া শুনায় ভাল রেজাল্ট করছে। এভাবে যদি আমাদের ব্যবসা চলে তাহলে পড়াশুনার পাশাপাশি বাড়তি উপার্জন হিসেবে এই ব্যবসায় তাদের আরো উৎসাহ জোগাবে। ওমর বলেন,ব্যবসা আরো ভাল হতো যদি পুঁজি বিনিয়োগ করতে পারতাম। আমার কাছে তো পর্যাপ্ত পরিমান টাকা নাই। আমার গরিব বাবা যতটুকু পুঁজি দিয়েছে তা দিয়েই এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি। ওমর আরো বলেন,মূলতঃ আমার ব্যবসা হলো প্রিন্ট এ্যাড পাশাপাশি সকল প্রকার ষ্টেশনারি সামগ্রীও যাবতীয় ছাপার কাজ যতœসহকারে করা হয়। যদি সরকারি বা বেসরকারি ভাবে স্বল্প লাভে লোন পেতাম তা হলে ব্যবসা আরো বাড়ানো যেত। সঠিক ভাবে পুঁজি দিয়ে ব্যবসায় নামলে মানব সেবার পাশাপাশি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়।
কাঁঠালতলীর প্রবীণ ব্যক্তিত্ব ও সাবেক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ি চাঁন মিয়া সওদাগর ওমরের বাবা বলেন, তিনি একজন অনেক পুরাতন কাঁঠ ব্যবসায়ি কাঁঠ ব্যবসায় পুঁজি দিতে গিয়ে সহজ সরল লোকটি প্রচুর টাকা আতœসাৎ করেছেন কতিপয় কিছু সুবিধাভোগি মানুষ। যার কারনে আজ তিনি ব্যবসায়িক ভাবে অর্থহারা। সহজ সরল লোকটির সাথে লোকজনে প্রতারণা করেছে। তিনি বলেন,সর্বশেষ আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে বেশ কিছু অর্থ হাওলাদ বরাদ করে ওমর মোর্শেদকে এই দোকানটি করে দিয়েছি। বর্তমানে এই দোকানটিই তাদের একমাত্র সম্ভল।
বৃহত্তর বনরুপা ব্যবসায়ি কল্যাণ সমবায় সমিতি লিঃএর সভাপতি মো.আবু সৈয়দ বলেন,মো.ওমর মোর্শেদ ছাত্র জীবনে একজন সফল ব্যবসায়ি হয়ে দাড়ানোর চেষ্টা করছে। আমরা যদি এই ছাত্র দোকানদারকে একটু সহযোগিতা দিয়ে উৎসাহ দেই তা হলে আগামীতে সে ব্যবসায়িক ভাবে অনেক সফলতা অর্জন করতে পারবে। শুনেছি তারা যে তিন জন দোকানদারি করছে তিনজনই ছাত্র। তাই তাদের আগামী দিনের পথচলা আরো সুন্দর হউক এই প্রত্যাশা কামনা করছি।