রাখাইনে গ্রামে গ্রামে মর্টার শেল নিক্ষেপ সেনাবাহিনীর

114

রাখাইনের বিভিন্ন গ্রামে মর্টার শেল নিক্ষেপ, বেসামরিক নাগরিকদের আটক ও খাবার সরবরাহ আটকে দিচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। রাখাইনভিত্তিক সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকেই এসব তৎপরতা চালাচ্ছে সেনা সদস্যরা।
এসব সেনা ইউনিটের কয়েকটি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিপীড়নেও অংশগ্রহণ করেছিল। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ উত্থাপন করেছে।
মানবাধিকার সংগঠনটিকে গ্রামবাসী ও স্থানীয় অ্যাক্টিভিস্টরা জানিয়েছেন, বাড়িঘর লক্ষ্য করে মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হচ্ছে। স্থানীয়দের ত্যাগ করা বাড়ি ঘরের মূল্যবান সামগ্রী লুট করে তা ধ্বংস করা হচ্ছে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
গত ৪ জানুয়ারি ফাঁড়িতে আরাকান আর্মির হামলায় ১৩ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর রাখাইনে সামরিক অভিযান জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, অভিযান শুরুর পর সংঘাত কবলিত এলাকা থেকে ৫ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। কয়েক শত মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন প্রতিবেশী বাংলাদেশে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ নতুন ঘটনা নয়। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের নামে শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। এর ফলে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। আগে থেকে উপস্থিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় দশ লাখ। এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে বসবাস করছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ক্রাইসিস রেসপন্স বিভাগের পরিচালক তিরানা হাসান জানান, এই অভিযান আরেকবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী মানবাধিকারের প্রতি কোনও সম্মান ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে। যেকোনও পরিস্থিতিতে গ্রামীণ বসতিতে গোলাবর্ষণ ও খাদ্য সরবরাহ আটকে রাখা অযৌক্তিক।
তিরানা হাসান আরও বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতার আন্তর্জাতিক নিন্দার পরও তারা নির্লজ্জভাবে আরও গুরুতর নির্যাতন চালাচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর যে ডিভিশনগুলো ২০১৭ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতায় জড়িত ছিল তাদেরকেই পুনরায় রাখাইন রাজ্যে মোতায়েন করা হয়েছে।