রাউজানে মুনিরীয়া তবলীগের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের প্রস্তুতি

123

রাউজানের কাগতিয়া মাদ্রাসার রাজাকার ক্যাম্প থেকেই মুক্তিযোদ্ধা মুছা খান শহীদ হয়েছিলেন আলবদর বাহিনীর গুলিতে। একাত্তরের সেপ্টেম্বরের এক রাতে মুক্তিযোদ্ধারা দল বেঁধে সেখানে গিয়েছিলেন এ রাজাকার ক্যাস্প ধ্বংস করতে। সেই সময় এ মাদ্রাসায় ছিলেন মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ এম. তফজ্জল আহমদ। এ সময় রাজাকার ক্যাম্প থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর ছোঁড়া গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন রাউজানের মোহাম্মদপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মুছা খান। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তিযোদ্ধারা এ তথ্য জানিয়েছেন। সাম্প্রতিককালে কাগতিয়া মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির জঙ্গি কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রতিবাদ বিক্ষোভ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রাউজান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবু জাফর চৌধুরী বলেন, মুছার মৃত্যুর দৃশ্যটি মনে পড়লে এখনো চোখের পানি ধরে রাখতে পারি না। আবু জাফর চৌধুরীর মত রাউজানের মুক্তিযোদ্ধারা মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির কর্মকান্ড নিয়ে বলেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের পৃষ্ঠপোষকতায় থাকা এ পরিবারটির ম‚লোৎপাঠন করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। তারা বলেন, ১৯৭১ সালের রাজাকারদের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলেন এম তফজ্জল আহমদ। এখন তার পুত্র মুনির উল্লাহ কাগতিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষের পদে আসীন হয়ে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে কৌশলে অবস্থান নিয়ে যুব তবলীগের নামে দেশে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করছেন। তিনি তার বাবার পথ অনুসরণ করে স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে গোপন যোগাযোগ রক্ষা করে দেশকে অস্থিতিশীল করার প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে শান্তির রাউজানকে অশান্ত করার কৌশল নিয়েছেন। একাজে তিনি তরিকতের ব্যানারে কৌশলে ব্যবহার করেছেন মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটিকে। তার এ দর্শনের অনুসারী রাউজানের বহু ছাত্র যুবক জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ-বিদেশি জঙ্গি সংগঠনের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। তার প্রমাণ পাওয়া গেছে রাউজান কদলপুর এলাকার মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির এক সদস্য হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার সাথে জড়িত সন্দেহে আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরার পড়ার পর। রাউজান উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ আহসান হাবিব চৌধুরী বলেছেন, মুনিরীয়ার জঙ্গিরা সুন্নিয়ত ভিত্তিক সংগঠনের বিভিন্ন তরিকতের সমর্থক অর্ধশতাধিক আলেম ওলেমার উপর হামলা করেছে। কারো কারো পায়ের রগ কেটে দিয়ে জীবনের জন্য পঙ্গুত্ব করে দিয়েছে। তাদের অপরাধ ছিল মুনিরীয়ার জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কথা বলা। তার অভিযোগ মুনির উল্লাহ নিজকে একমাত্র পীর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে অন্যদের কন্ঠ স্তব্ধ করার লক্ষ্য নিয়ে তরিকতের নাম দিয়ে এলাকার ছাত্র যুবকদের সংগঠিত করছেন। তাদেরকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে দমানোর হাতিয়ার বানিয়েছেন। বর্তমানে মুনিরীয়ার নির্যাতন, নিপীড়ন বিরোধী প্রতিবাদে নেতৃত্বে থাকা রাউজান পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জমির উদ্দিন পারভেজ বলেন, পীর পরিচয়ে মুনির উল্লাহ বর্তমান সরকারের সাফল্যকে ম্লান করার এজেন্ডা নিয়ে দেশকে অশান্ত করার চেষ্টায় আছেন। তার অভিযোগ, মুনির উল্লাহ মুনিরীয়া যুব তবলীগের সদস্যদের দেশি-বিদেশি জঙ্গি সংগঠনের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয়ার কাজ করছেন। নিজেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করে যৃব তবলীগের নামে কোটি কোটি টাকা চাঁদা সংগ্রহ করছেন। নিজের ও সংগঠনের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে শত কোটি টাকার জমি কিনে স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। নিজের শত কোটি টাকা ব্যায়ে আলিশান ভাড়ি নির্মাণ করছেন। তার দাবি চলমান আন্দোলনের মাধ্যমে রাউজান থেকে মুনিরীয়ার শেকড় উপড়ে ফেলা হবে। সরকারের বিভিন্ন এজেন্সিতে এ সন্ত্রাসি সংগঠনের কর্মকান্ডের যাবতীয় প্রমাণ দেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।