রাউজানে এখনও থমথমে পরিস্থিতি

112

রাউজানে আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হককে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় চলা অবরোধ স্থগিতের পর গতকাল সন্ধ্যায় শেষ হল ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম। রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ এ আল্টিমেটাম দেয়। এদিকে গতকাল বিকেলে নগরীর প্রেস ক্লাবে মুনিরীয়া যুবলীগ কমিটির কর্মীদের হামলার বর্ণনা দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মুক্তিযোদ্ধা শফি।
আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যাচেষ্টার পর রাউজানে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির একাধিক শাখা কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় এলাকায় এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এর কোন সুরাহা না হওয়ায় আজ রবিবার নতুন কর্মসূচি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জমির উদ্দিন পারভেজ।
এ বিষয়ে রাউজান সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান বিএম জসিম উদ্দিন হিরু বলেন, মামলা হওয়ায় মোহাম্মদপুরের অনেক লোক এলাকায় নেই।
এ বিষয়ে রাউাজন থানার ওসি মো. কেপায়েত উল্লাহ বলেন, ঘটনার পরপর দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এছাড়া শনিবার মোহাম্মদপুরের মনছুর আলম নামে মুনিরীয়ার এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। এছাড়া মোহাম্মদপুরে হামলার শিকার মাওলানা হাফেজ নুরুল আবছার ও মুক্তিযোদ্ধা শফিও পৃথক দুটি মামলা করেন।
উল্লেখ্য, রাউজান সদর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর এলাকার শাহ আলম চেয়ারম্যান বাড়ির আহমদ কবিরের পুত্র মোজাম্মেল হক বুধবার সকালে ঘর থেকে বের হন। একইদিন বিকেলে তিনি বাড়ি ফেরার পথে মুনিরীয়া কার্যালয়ের দক্ষিণে মুনিরীয়ার সমর্থকরা তার ওপর হামলা করে। তারা মোজাম্মেলকে মৃত ভেবে একটি বিলে ফেলে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা মোজাম্মেলকে মুম‚র্ষু অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
মুনিরীয়া যুব তবলীগের বিবৃতি :
গত ১৭ এপ্রিল রাউজানের মুহাম্মদপুরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হকের উপর হামলার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির পক্ষে একটি প্রতিবাদ গত ১৯ এপ্রিল বিভিন্ন পত্রিকায় প্রচার করা হয়। হামলা পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত ১৮ এপ্রিল রাউজানের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর সাথে দেখা করে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির পক্ষ থেকে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানানো হয়। কিন্তু হামলার এ ঘটনাকে উপজীব্য করে একশ্রেণির দুষ্কৃতকারী আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নাম ব্যবহার করে রাউজানের সর্বত্র মুনিরীয়া তরিক্বতের অফিস এবং তরিক্বতপন্থীদের বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাটসহ নারী ও শিশুদের উপর অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া নিরীহ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। গত কয়েকদিনে এ অত্যাচারের ফলে রাউজানের হাজার হাজার লোকজন ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন, যাদের মধ্যে অনেকে সরকার দলীয় সমর্থক ও মুক্তিযোদ্ধাও রয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে প্রবাসী রাউজানবাসীরাও তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে উদ্বিঘ্ন। প্রশাসন এ ব্যাপারে একেবারে নির্লিপ্ত। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। এমতাবস্থায় এ তান্ডবলীলা বন্ধে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।