রমজানে জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয়

638

রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের শুভ বার্তাবাহী পবিত্র মাস রমজানুল মোবারক। এ মাস এবাদতের মাস। এ মাসের প্রথম রাতেই শয়তান ও দুষ্টু জীনদেরকে বন্দী করে রাখা হয় এবং জাহান্নামের দরজা সসূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। কোন দরজাই সেখানে খোলা থাকে না।
জান্নাতের সব দরজা খুলে দেয়া হয়, একটিও (রমজান মাসের শেষ পর্যন্ত) বন্ধ করা হয় না। যাতে মানব জাতি অভিশপ্ত শয়তানের কুমন্ত্রণার বাধাপ্রাপ্ত না হয়ে মুক্ত অবস্থায় এবাদত বন্দেগি করতে পারেন। মু’মিন মুসলমানরা পরম কাক্সিক্ষত আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত লাভ করতে পারেন। তাই দেখা যায়, রমজান মাসে মু’মিন মুসলমানদের ঘরে-ঘরে রোজা আদায়, কুরআন তেলাওয়াত, দান-খায়রাত ইত্যাদি নেক কাজের আধিক্য।
প্রতিটি মসজিদ মুসল্লিতে ভরে যায়, মু’মিন হৃদয়ে আনন্দের হিল্লোল বয়ে যায়। মু’মিন মুসমানদের মনোজগতে একটি বিরাট পরিবর্তন এসে যায়। বস্তুত এসব মাহে রমজানের বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, এ মাসে একদল ঘোষণাকারী ঘোষণা দিতে থাকেন হে কল্যাণ অন্বেষণকারী অগ্রসর হও, হে পাপাসক্ত বিরত হও।
শয়তানের প্ররোচনায় পতিত হয়ে পাপের মাঝে জর্জরিত বান্দাদের জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ হতে নিঃসন্দেহে এ পবিত্র মাস এক বড় নিয়ামত। এ মাসের প্রতিটি মুহূর্তই এবাদতের মধ্যে শামিল। দিনের বেলা রোজা এবং রাতের বেলা ইফতার, তারাবিহ্ নামাজ আদায়, সেহেরি খাওয়ার জন্য মধ্যরাতে জাগ্রত হওয়া সবই এবাদতে গণ্য। রোজাদারের বৈশিষ্ট্য : হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত যে, হযরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেছেন, আমার উম্মতকে রমজান শরীফের ব্যাপারে এমন পাঁচটি বৈশিষ্ট্য দান করা হয়েছে, যা আর অন্যকোন উম্মতকে প্রদান করা হয়নি। প্রথমত, রোজাদারের মুখ থেকে যে খুশবু বের হয় তা আল্লাহ পাকের নিকট কস্তুরী (মিশক আম্বর) থেকেও অধিকতর পছন্দনীয়। দ্বিতীয়ত, রোজাদারের জন্য সমুদ্রের মাছ পর্যন্ত দোয়া করতে থাকে এবং ইফতারের সময় পর্যন্ত তারা দোয়া করতে থাকে। তৃতীয়ত, প্রতিদিন জান্নাতকে রোজাদারের জন্য সুসজ্জিত করা হয়। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, আমার নেক বান্দারা দুনিয়ার দুঃখ, কষ্ট পশ্চাতে রেখে অতি শীঘ্রই আমার নিকট আসবে। চতুর্থত, রমজানে শয়তানকে বন্দি করে রাখা হয়। ফলে সে রমজানে অন্যায়ের দিকে ধাবিত হতে পারে না। পঞ্চমত, রমজানের শেষ রাতে আল্লাহ পাক রোজাদারদের ক্ষমা করে দেন।
সাহাবায়ে কেরাম এ সময় জিজ্ঞেস করলেন, এ রাত কি শবে মাগফিরাত না শবে কদর? হুজুর (সা.) তখন ইরশাদ করলেন, না, বরং নিয়ম হলো এই যে, শ্রমিক যখন তার কাজ শেষ করে, তখন তাকে পারিশ্রমিক দিয়ে দেয়া।
অন্য হাদিসে হুজুর (সা.) ইরশাদ করেছেন, যদি মানুষ জানত যে রমজানের সত্যিকার মাহাত্ম কি? তবে আমার উম্মত আকাঙ্খা করতো যেন সারা বছর রমজান হয়।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন যে ব্যক্তি ঈমান ও খাঁটি অন্তরে (বিশুদ্ধ নিয়তে) রোজা রাখে তাঁর পেছনের গুনাহ সমূহ মাফ হয়ে যাবে,এবং রমজানের রাতসমূহে ঈমান ও বিশুদ্ধনিয়তের সাথে ইবাদত করবে তার পেছনের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। আল্লাহ্ আমাদের সকলকে মাহে রমজানের এবাদত বন্দেগি যথাযথভাবে আদায় করার তৌফিক দিন- আমিন।