রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ অব্যাহত ‘গুলির বদলে গুলি চলবেই’

22

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতার পর বিক্ষোভ গড়িয়েছে সপ্তম দিনে। আইনটি পাস হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সংঘর্ষে ১৯ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। শনিবার দুপুরে দক্ষিণ দিল্লির চানক্যপুরিতে সংঘর্ষ হয়েছে।
চেন্নাই শহরের কেন্দ্রীয় স্টেশনের কাছ থেকে আটক করা হয়েছে প্রায় দুইশো শিক্ষার্থীকে। এদিন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজপথে নেমে উত্তর প্রদেশের রামপুরে পুলিশের সঙ্গে নতুন করে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে এক বিক্ষোভকারী। এদিকে প্রতিবাদীদের ওপর বলপ্রয়োগে সমর্থন জানিয়ে এক বিজেপি নেতা বলেছেন, গুলির বদলে গুলি তো চলবেই। গত ১২ ডিসেম্বর ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ১৯ ডিসেম্বর সেখানে বিক্ষোভরত অবস্থায় ২ জন প্রাণ হারায়। শুক্রবার জুমার নামাজের পর সংঘর্ষে নিহত হয় ৯ জন। শনিবার রাজ্যের রামপুরের ঈদগাহ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের পর সেখানে মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে পাথর ছুড়লে তাদের লক্ষ্য করে লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। এদিনের সহিংসতায় একজন নিহত হয়েছে। সবমিলে উত্তর প্রদেশে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ জনে।
মধ্যপ্রদেশের ৫০ থেকে ৫২টি জেলায় শুক্রবার সহিংস বিক্ষোভের পর কয়েকটি এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার বড় ধরনের জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। দিল্লিতে শুক্রবারের সহিংস বিক্ষোভের পর শনিবার চানক্যপুরির উত্তর প্রদেশ ভবনের আশেপাশে নিষেধাজ্ঞামূলক আদেশ জারি করা হয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সিলামপুরে যৌথ টহল দিয়েছে পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও টানা সপ্তম দিনের মতো বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।
এদিকে তামিল নাড়ু রাজ্যের চেন্নাই শহরের কেন্দ্রস্থলের এক রেল স্টেশনের কাছ থেকে প্রায় দুইশো শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ট্রেন চলাচল বন্ধ করার চেষ্টা করায় তাদের আটক করা হয়েছে। এর আগে ১২ ডিসেম্বর আসামে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের (সিএবি) প্রতিবাদে কারফিউ ভেঙে বিক্ষোভ করে হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সে সময় পুলিশের গুলিতে তিন বিক্ষোভকারী নিহত হয়। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় আরও দুই জনের।
১৯ ডিসেম্বর কর্নাটকের ম্যাঙ্গালুরুতে কারফিউ ভেঙে বিক্ষোভ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পুলিশের দাবি, বিক্ষোভকারীরা ম্যাঙ্গালুরু নর্থ থানা দখল করতে এলে ফাঁকা গুলি চালানো হয়। তবে সে সময় ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিও বার্তায় পুলিশকে সরাসরি বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাতে দেখা গেছে। ওই দিনের সংঘর্ষে ২ জন প্রাণ হারায়। শুক্রবার ওই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ নিয়েছেন বিজেপি’র জাতীয় সম্পাদক এইচ রাজা। চেন্নাইয়ে তিনি বলেন, ‘যারা মারা গেছে তারা কয়েকশো মানুষ মারতে চেয়েছিল। পাল্টা গুলি করা ছাড়া পুলিশের হাতে আর কোনও উপায় ছিল না।’