রওশনকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করল জাপার একাংশ

28

জাতীয় পার্টির সদ্য প্রয়াত নেতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা দিয়েছেন দলের একাংশ। তবে এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসা তার ভাই জিএম কাদের দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে দলটির একাংশ এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদকে তাদের দলের চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করে। এর কয়েক ঘণ্টা পরে দলটির আরেক অংশ জিএম কাদেরকে তাদের বৈধ চেয়ারম্যান বলে দাবি করে।
জিএম কাদের এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে দলটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছিলেন। এসব ঘোষণায় দলটি আবারও ভাঙনের মুখে পড়েছে বলে এর নেতাকর্মীদের অনেকে বলেছেন। এই দুই শীর্ষ নেতাই সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হতে চেয়ে সংসদে স্পিকারের কাছে চিঠি দিয়েছেন। খবর বিবিসি বাংলার
রওশন এরশাদের ঘোষণা :
গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলন করে দলটির একাংশের নেতারা রওশন এরশাদকে চেয়ারম্যান ঘোষণার পাশাপাশি জিএম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যানের পদে থেকে দায়িত্ব পালনের আহবান জানিয়েছেন।
এই সংবাদ সম্মেলনে রওশন এরশাদও বক্তব্য রেখেছেন। তিনি জাতীয় পার্টির ঐক্য ধরে রাখার জন্য নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানান।
তিনি বলেছেন, এরশাদ সাহেব তিল তিল করে এই পার্টিটাকে গড়ে তুলেছেন। এর ঐক্য আমরা ধরে রাখবো।
তাই আমি সবাইকে বলবো, আসুন আমরা পার্টির ঐক্য অটুট রাখি। পুরনো যারা পার্টি ছেড়ে চলে গেছেন, তাদের আমরা বলবো, আপনারা ফিরে আসুন। মান-অভিমান নিয়ে থাকবেন না। আসুন আমরা একসাথে পার্টি করি।
জাতীয় পার্টির যে অংশটি রওশন এরশাদের গুলশানের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে নেতৃত্ব নিয়ে এসব ঘোষণা দেন, তাদের মধ্যে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নুসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এই অংশটি মশিউর রহমান রাঙাকেই তাদের পার্টির মহাসচিব হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তবে রাঙা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না। তাকে গত কয়েকদিন ধরে জিএম কাদেরের সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গেছে।
জিএম কাদের সংবাদ সম্মেলন
এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরেই জিএম কাদের পাল্টা একটি সংবাদ সম্মেলনে আসেন। সেখানে তিনি বলেছেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এবং দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ যে দায়িত্ব দিয়ে গেছেন, সে হিসাবেই তিনি বৈধভাবে পার্টির চেয়ারম্যান রয়েছেন।
জাতীয় পার্টি ভেঙ্গে গেল কিনা বা বিভক্ত হলো কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেউ ঘোষণা দিলেই পার্টি ভাগ হয়ে যায় না।
এ সময় জিয়াউদ্দিন বাবলু, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন জিএম কাদের।
এদিকে এরশাদের মৃত্যুতে রংপুরের একটি সংসদীয় আসন শূন্য হওয়ার পর সেখানে উপনির্বাচন হতে যাচ্ছে। সেই উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করেও জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের বিষয় প্রকাশ্যে আসে। এরশাদ বেঁচে থাকতেই তার দল জাতীয় পার্টি বিভিন্ন সময় কয়েক ভাগে ভাগ হয়েছিল। এখন পারিবারিক এবং ক্ষমতার দ্ব›দ্ব থেকে দলটিতে বিভক্তি আবারও দৃশ্যমান হচ্ছে।