যে গাছের ফুল থেকে তৈরি জুস জনপ্রিয় ইউরোপজুড়ে

105

স্লোভেনিয়ার স্থানীয় ভাষায় একে বলা হয় ‘বেজেগ।’ কেউ আবার বলে থাকেন ‘এলডার বেরি।’ তবে উদ্ভিদবিজ্ঞানে এ জাতীয় উদ্ভিদকে ‘সাম্বুকাস’ (ঝধসনঁপঁং) নামক জেনাসের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গ্রিক শব্দ ‘সাম্বুস’ থেকে সাম্বুকাস শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। সাম্বুকাসের অনেকগুলো প্রজাতি রয়েছে যেমন সাম্বুকাস নিগ্রা, সাম্বুকাস ইবুলুস, সাম্বুকাস সিইবলদিয়ানা, সাম্বুকাস রেসমুসা ইত্যাদি।
ইউরোপ ও আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসন্ত এবং গ্রীষ্মকালীন সময়ে সাম্বুকাস আনে বাড়তি প্রশান্তি। সাম্বুকাসের মূল আকর্ষণ এর ফুলকে ঘিরে। এ জাতীয় ফুলের গন্ধ কিছুটা বেলি ফুলের মতো তবে বেলি ফুলের মতো সাম্বুকাসের ঘ্রাণ এত বেশি তীব্র নয়। সাধারণত অধিক জৈব পদার্থের উপস্থিতি আছে এমন মাটিতে এবং অপেক্ষাকৃত বেশি সূর্যালোকের উপস্থিতি থাকে এমন স্থানে ঝোপের মতো বেড়ে ওঠে সাম্বুকাস। বসতবাড়ি কিংবা কৃষিখামারের আশেপাশে এ জাতীয় উদ্ভিদ জন্মাতে দেখা যায়। সাম্বুকাস তার জীবন চক্রে নাইট্রোজেনের ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল, এজন্য একে ‘নাইট্রোজেন বেজড প্ল্যান্ট’ বলা হয়ে থাকে।
সাম্বুকাসের অন্যতম কদর জুস ও সিরাপ তৈরিতে। ইউরোপসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই এ ফুলের ননির্যাস থেকে জুস ও সিরাপ তৈরি করা হয়। গ্রীষ্মকালে সাম্বুকাসের জুস ইউরোপে একটি জনপ্রিয় পানীয়। এছাড়াও ফল হিসেবেও এলডার বেরির বিশেষ কদর রয়েছে। অ্যান্থোসায়ানিডিন নামক বিশেষ ধরনের জৈব রঞ্জক পদার্থের উপস্থিতির কারণে এলডার বেরি দেখতে অনেকটা নীলাভ-বেগুনি রঙের হয়।
সাম্বুকাসের ফুল থেকে তৈরি সিরাপ :
সাম্বুকাস নিয়ে ইউরোপের অনেক দেশে বেশ কিছু কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে। কতিপয় প্রজাতির সাম্বুকাস বিষাক্ত। অনেক অধিবাসীর ধারণা, কোনও বসতবাড়ির আশেপাশে সাম্বুকাস জন্ম লাভ করলে সে বাড়ি অভিশাপ থেকে মুক্তি লাভ করে। এছাড়াও কোনও কারণে যদি বয়স্ক কোনও সাম্বুকাসের গাছ কেটে ফেলা হয় তাহলে অভিশাপ বর্ষিত হয় এবং বয়স্ক গাছটি ভিন্ন রূপে ফিরে আসে প্রতিশোধ নিতে।