যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত

43

নভেল করোনা ভাইরাসের মহামারী ঠেকাতে ‘শাটডাউন’এর অংশ হিসেবে সরকারের ‘ছুটি’ বাড়ানোর ঘোষণার পর এবার যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞাও ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলেছে, পণ্য পরিবহন, জরুরি সেবা, জ্বালানি, ঔষধ, পচনশীল ও ত্রাণবাহী পরিবহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে। তবে পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।
এই সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের বলেন, ইতোপূর্বে সরকার ২৬ মার্চ
থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছিল। আপনারা জানেন সরকার আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বর্ধিত করেছে। এর ধারাবাহিকতায় জনসাধারণের স্বার্থ বিবেচনায় আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত দেশব্যাপী সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার অনুরোধ করছি।
দেশে নভেল করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় বিশ্বের অনেক দেশের মত বাংলাদেশেও সব অফিস আদালত এবং সড়ক, নৌ ও বিমান চলাচল বন্ধ রেখে সবাইকে যার যার বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে। সরকারি ভাষায় একে বলা হচ্ছে ‘ছুটি’।
প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের জন্য এই নির্দেশনা জারি হলেও গত ৩১ মার্চ ডিসিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বাড়ানোর আভাস দেন। পরদিন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ‘সাধারণ ছুটি’ ঘোষণা করে আদেশ জারি করে, যার সঙ্গে পরের দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটিও যোগ হবে বলে জানানো হয়।
ওই আদেশে বলা হয়েছিল, মানুষের জীবন জীবিকার স্বার্থে রিকশা-ভ্যানসহ যানবাহন, রেল, বাস সার্ভিস পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে। কিন্তু যানবাহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও ১১ এপ্রিল পর্যন্তই বলবৎ থাকবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের শনিবার বলেন, সংকটে আমাদের দেশের পরিবহন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ত্যাগ স্বীকার করেছে। এই সংকট আমাদের সকলের। এই সংকট উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩১ দফা যে নির্দেশনা দিয়েছেন, মেনে চলবেন। ১১ তারিখ পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখবেন, পরবর্তী সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে।
অফিস ছুটির মধ্যেও জরিমানা ছাড়া নির্ধারিত ফি দিয়ে ৩১ জুন পর্যন্ত যানবাহনের ফিটনেস ও ড্রাইভার্স লাইসেন্স নবায়নের সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
কোনো অবস্থাতেই শঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি আজ এক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, এ যাবৎ বিশ্বে ১১ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, প্রায় ৫৭ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে এই প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে। আমাদের দেশ তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো।
আজকে ইতালি, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সেরমত দেশে যে ভয়াবহ অবস্থা, সেই তুলনায় আল্লাহর রহমতে আমরা অনেক ভালো আছি। আমরা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ৩১টি নির্দেশনা মেনে সবাই একযোগে এই অদৃশ্য শত্রূর মোকাবিলা করে চলেছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করতে গিয়ে অধিক লোক জমায়েতের মত বিপদজনক পথ বেছে না নিই। কোনো অবস্থাতেই জমায়েত করা যাবে না।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে দেশ ‘অচিরেই ভালোর দিকে’ যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহযোগিতা করতে হবে। দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে আমার আহ্বান, সুদিনের প্রত্যাশায় আজকের সাময়িক কষ্ট মেনে চলতে হবে। সুদিনের আশায় আমরা সাময়িক ত্যাগ স্বীকার করব, এটা যেন আমাদের মাথায় থাকে।… স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আমরা অবশ্যই এই মহা সংকট থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারব।