ম্যাক্স হাসপাতালের সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে একটি মহল তৎপর

52

নগরীর ম্যাক্স হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক লিমিটেডের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক ও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ও আর নিজাম রোডের একটি হোটেলের হল রুমে গতকাল সকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ম্যাক্স হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ডা. মো. লিয়াকত আলী খান বলেন, ম্যাক্স হাসপাতাল জন্মলগ্ন থেকে চট্টগ্রামবাসীকে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছে। নামকরা বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, সংসদ সদস্য,আমলা, সাংবাদিক, সমাজসেবী ও সমাজের উচ্চ পদস্থ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আমাদের হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সকল ক্রিকেট ম্যাচে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দেরকে ইনজুরিসহ বিভিন্ন রোগে সকল চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছিল, যা ভবিষ্যতেও দেওয়া হবে।
ম্যাক্স হাসপাতাল সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সকলের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে ডা. লিয়াকত বলেন, আমাদের সফলতায় একটি মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে বিভ্রান্তিমূলক মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে ম্যাক্স হাসপাতালের অর্জিত সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
সংবাদ সম্মেলনে গত ৮ ডিসেম্বর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গর্ভের একটি শিশুর মৃত্যুর ব্যাপারে ম্যাক্স হাসপাতালকে দায়ী করে যে সংবাদ পরিবেশন করা হয় তা নির্জলা মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিমূলক বলে ডা. লিয়াকত আলী খান দাবি করেন।
শিশুমৃত্যুর ঘটনায় ম্যাক্স হাসপাতাল কোনভাবে দায়ী নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, শারমিন আক্তারের ডেলিভারি চট্টগ্রামের অন্য একটি হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছিল, যেখানে বাচ্চাটি মৃত অবস্থায় প্রসব হয়। যার সাথে ম্যাক্স হাসপাতালের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা নেই।
ডা. লিয়াকত বলেন, মামলার বাদী ইউসুফ আলম মাসুদের স্ত্রী শারমীন আক্তার চমেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আফরোজা ফেরদৌসের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। গত ১ ডিসেম্বর নিয়মিত চেকআপে তিনি ডা. আফরোজার চেম্বারে আসেন। চিকিৎসক রোগীর সার্বিক অবস্থা স্বাভাবিক দেখে প্রেগন্যান্সি প্রোফাইল তৈরি করার নির্দেশ দেন। ডাক্তারের পরামর্শে ডা. এইচএম রাকিবুল হকের কাছে আলট্রাসনোগ্রাফি করান শারমিন। পরে আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্ট নিয়ে ডা. আফরোজাকে দেখালে সবকিছু ঠিক আছে বলে জানান তিনি।
ম্যাক্স হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দাবি করেন, পরবর্তীতে প্রসুতি অসুবিধা বোধ করলে ডা. আফরোজার সঙ্গে কোন রকম যোগাযোগ না করে ৩ ডিসেম্বর তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে শারমিন একটি মৃত বাচ্চা প্রসব করেন বলে জানা যায়। মেট্রোপলিটন হাসপাতালের চিকিৎসক প্রায় ৬ ঘণ্টা আগে বাচ্চা মারা যাওয়ার কথা জানান। তাছাড়া জরায়ু থেকে বাচ্চার মাথা বের করা অবস্থায় ছিল।
তিনি বলেন, ম্যাক্স হাসপাতালে ছোট ঘটনা ঘটলেই সেটাকে বেশি হাইলাইট করা হয়। যেসব অভিযোগে হাসপাতালের সংশ্লিষ্টদের অভিযুক্ত করা হয়েছে তার কোন ভিত্তি নেই।
সংবাদ সম্মেলনে বিশিষ্ট গাইনি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রওশন মোরশেদ, বিশিষ্ট সনোলোজিস্ট ডা. এইচএম রাকিবুল হক সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এছাড়া ম্যাক্স কর্তৃপক্ষ তাদের বক্তব্যের স্বপক্ষে সংবাদ মাধ্যমের ভিডিও ক্লিপসহ বিভিন্ন কাগজপত্র উপস্থাপন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক খান, সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী, বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সভাপতি ডা. এমএ কাশেম, কোষাধ্যক্ষ ডা. সুলতান মাহমুদ, গাইনোকোলজি সোসাইটির নেতৃবৃন্দ ডা. প্রীতি বড়ুয়া, অধ্যাপক ডা. রওশন মোর্শেদ, সহকারী অধ্যাপক ডা. আফরোজা ফেরদৌস, বিশিষ্ট সনোলোজিস্ট ডা. এইচএম রাকিবুল হক, ম্যাক্স হাসপাতালের মেডিকেল ডাইরেক্টর ডা. আবুল কাশেম মাসুদ প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি