মোতালেবের ব্যবসায় আয় সাড়ে তিন লক্ষ

114

রাজনীতিবিদের চেয়ে ব্যবসায়ী হিসেবে বেশি পরিচিত সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী এমএ মোতালেব। খ্যাতনামা বনফুল ও কিষোয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন তিনি। হলফনামাতেও পেশা দেখিয়েছেন ব্যবসা। কিন্তু ব্যবসার চেয়ে শেয়ার সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমনত থেকে মোতালেবের আয় বেশি। এ খাতে মোতালেবের বাৎসরিক আয় যেখানে ৯১ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা সেখানে ব্যবসা থেকে বছরে আয় মাত্র তিন লক্ষ ৩৫ হাজার ৭৪৭ টাকা। তবে চাকরি থেকে সম্মানি ও পরিচালক ফি তিনি আয় করেন ১৮ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা। সাতকানিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদের আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামায় এমন তথ্য দিয়েছেন তিনি। হলফনামায় বিএনপি প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল গফফার চৌধুরী তিন খাতে বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন তিন কোটি ১৫ লক্ষ ৭২ হাজার ৩২৫ টাকা।
হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ প্রার্থী এমএ মোতালেব এইচএসসি পাস। ব্যবসায়ী এই প্রার্থীর বাৎসরিক সর্বমোট আয় এক কোটি ৫০ লক্ষ ৩৭ হাজার ৯১৩ টাকা। এরমধ্যে কৃষিখাতে ২৫ লক্ষ ১০ হাজার ৮০০ টাকা, বাড়ি বা এপার্টমেন্ট বা দোকান বা অন্যান্য ভাড়া ১০লক্ষ আট হাজার টাকা, ব্যবসায় তিন লক্ষ ৩৫ হাজার ৭৪৭টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র বা ব্যাংক আমানত খাতে ৯১ লক্ষ ৮৭ হাজার ৩৬৬ টাকা, চাকরি থেকে সম্মানি ও পরিচালক ফি ১৮ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা এবং অন্যান্য খাতে এক লক্ষ টাকায় করেন নৌকার প্রার্থী মোতালেব। অস্থাবর সম্পত্তি আছে তিন কোটি ২৮ লক্ষ দুই হাজার ৩৬৬ টাকা। এরমধ্যে নগদ টাকা ছয় লক্ষ ২২ হাজার ৪৪ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ আট লক্ষ নয় হাজার ৩৭৭ টাকা, একই খাতে স্ত্রীর নামে ৬৬ লক্ষ ৯৩ হাজার ৪২ টাকা, বন্ড, ঋণপত্র, শেয়ার খাতে নিজ নামে দুই কোটি পাঁচ লক্ষ ৩৬ হাজার ৮৬৫ টাকা, স্ত্রীর নামে ২০ লক্ষ ৯৫ হাজার ৬৪১ টাকা, পোস্টাল, সেভিংস, সঞ্চয়পত্রসহ স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগের পরিমাণ নিজ নামে ৭৫ লক্ষ টাকা, বাস, ট্রাক, মটরগাড়ি নিজ নামে আট লক্ষ ১০ হাজার, স্বর্ণালঙ্কার নিজের নামে দেড় হাজার টাকা, ইলেকট্রিক সামগ্রী স্ত্রীর নামে ৩০ হাজার টাকা, আসবাবপত্র নিজের নামে দুই হাজার ৬০০ টাকা ও স্ত্রীর নামে ৯০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পত্তি আছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে অকৃষি জমি নিজ নামে ৬৯ লক্ষ ৫৩৬ টাকা, স্ত্রীর নামে ৬৯ লক্ষ ৫৩ হাজার ৫৩৫ টাকা, দালান ২৮লক্ষ ৫৭ হাজার ৫০৪ টাকা, স্ত্রীর নামে তিন কোটি ৫৪ লক্ষ ২২ হাজার ৩৭০ টাকা, একটি বাড়ি ৪৪ লক্ষ ১৩ হাজার ৯৫০টাকা। ঋণ আছে দুই কোটি বিশ লক্ষ টাকা।
ধানের শীষ প্রতীকের বিএনপি প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল গফফার চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন স্ব-শিক্ষিত। কিন্তু পেশা দেখিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত। কৃষিখাতে বাৎসরিক আয় চার লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত দুই কোটি ৮৯ লক্ষ ৩১ হাজার ৪২৫টাকা ও অন্যান্য খাতে ২২ লক্ষ ৩৫হাজার ৯০০ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা ৩৫ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা, বাস, ট্রাক, মটরগাড়ী, লঞ্চ ৩৬ লক্ষ ১০ হাজার টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ২৫ হাজার টাকা, আসবাবপত্রের ১০ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে বাড়ি বা এপার্টমেন্ট আছে ১৪টি। যার আর্থিক মূল্য এক কোটি ১০ লক্ষ ৯৬ হাজার ৫১৯ টাকা। সৌনালী ব্যাংকে একক ঋণ আছে ৪০ লক্ষ টাকা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোনায়েম মুন্না চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বশিক্ষিত। ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় নয় লক্ষ ৯৩ হাজার ৭৭৪ টাকা। অস্থাবর সম্পদ নগদ তিন লক্ষ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ দুই লক্ষ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার দশ ভরির আর্থিক মূল্য চার লক্ষ টাকা, ইলেকট্রিক সামগ্রী এক লক্ষ টাকা, আসবাবপত্র এক লক্ষ টাকা। ব্র্যাক ব্যাংকে একক ঋণ আছে ছয় লক্ষ টাকা।
প্রসঙ্গত, সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাড়াও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিন, আছিফুর রহমান সিকদার, বশির উদ্দিন আহমদ, মো. শাহজাহান, সালাহ উদ্দিন হাসান চৌধুরী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তারান্নুম আয়েশা, আনজুমান আরা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। এ উপজেলায় দুই লক্ষ ৮৩ হাজার ৩৮০ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লক্ষ ৫০ হাজার ২৮৬ জন ও মহিলা ভোটে এক লক্ষ ৩৩ হাজার ৯৪ জন।