মেয়র পদে নতুন প্রার্থী খুঁজছে বিএনপি

805

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলেও এখনো কোনো ধরনের কার্যক্রম শুরু করেনি বিএনপি। তবে জানা গেছে, মেয়র পদে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর নিজেদের প্রার্থী নির্বাচন করবে দলটি। এক্ষেত্রে বিএনপি নতুন কাউকে প্রার্থী করার চিন্তা-ভাবনা করছে। আর নতুন প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন এরশাদ উল্লাহ ও নিয়াজ মোহাম্মদ খানের নাম। এর মধ্যে এরশাদ উল্লাহ নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আর নিয়াজ মোহাম্মদ খান নগর বিএনপির বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর।
চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে কাকে বিএনপির প্রার্থী করা হচ্ছে সেটা এখনো জানে না দলটির নীতিনির্ধারণী মহলও। কেবল অনুমানের ভিত্তিতেই প্রার্থী নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে। এতে প্রার্থীতার দৌঁড়ে এগিয়ে আছেন এরশাদ উল্লাহ। লন্ডনের সাথে ঘনিষ্ঠতার কারণে এরশাদ উল্লাহ এগিয়ে থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে কেন্দ্রের সাথে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে নিয়াজ মোহাম্মদ খানের। তবে শেষ পর্যন্ত লন্ডন থেকেই চূড়ান্ত করা হবে মেয়র প্রার্থী, এমনটাই বলছেন দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী। আজ ইসির তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি তৎপরতা শুরু করবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে কথা হলে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, জাতীয় স্থায়ী কমিটির মিটিংয়ে মেয়র প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে। কিভাবে নমিনেশন দেয়া হবে সে সিদ্ধান্তও স্থায়ী কমিটি থেকে আসবে। আগে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হোক। তারপর সবকিছু ধারাবাহিকভাবে হবে। এখন এ ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না। আজ (১৬ ফেব্রূয়ারি) চসিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। ইতোমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে। গত মঙ্গলবার নগর বিএনপির কার্যালয় নাসিমন ভবন মাঠে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানান। তবে মেয়র প্রার্থী সম্পর্কে তিনি কিছু জানাননি। ফলে তখন থেকে শুরু হয় বিএনপির মেয়র প্রার্থী নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা।
নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এরশাদ উল্লাহ বলেন, দলের পদ-পদবি নয়, আমার কাছে শহীদ জিয়ার আদর্শই বড়। দল যদি চায় তাহলে মেয়র প্রার্থী হবো। অন্য কাউকে যদি প্রার্থী করে, তাহলেও তার পক্ষে কাজ করবো। কাকে প্রার্থী করা হচ্ছে সেটা দলের বিষয়। আমাদের কাজ দলের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা।
নগর বিএনপির সহ-সভাপতি নিয়াজ মোহাম্মদ খান বলেন, কেন্দ্রের সাথে আমার যোগাযোগ আছে। আমি তিনবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর ছিলাম। দলের স্বার্থে অনেক ত্যাগ করেছি। মেয়র প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে কথা হয়েছে। এখন দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে নির্বাচন করবো। অন্য কাউকে দিলে দলের স্বার্থে কাজ করবো। এখন দলকে গোছানোর সময়। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো।
কেন আলোচনায় এরশাদ-নিয়াজ : একসময় নগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এরশাদ উল্লাহ। দলের হয়ে বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসনে ২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু ২০১২ সালে দল তাকে বহিষ্কার করে। তবে দলের পদ হারালেও তিনি দল ছাড়েননি, ছাড়েননি রাজনীতিও। এই ব্যবসায়ী নেতা সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ানের পক্ষে ভূমিকা রেখেছেন। যার কারণে খুশি হয়েছেন তারেক রহমান। এরই মধ্যে তিনি তারেক রহমানের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎও করেছেন।
অন্যদিকে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী পাঠানটুলী খানবাড়ি পরিবারের সন্তান নিয়াজ মোহাম্মদ খান। তিনি তিনবার চসিকের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বোর্ড সদস্য ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন তিনি। জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া যুব কমপ্লেক্সের ডবলমুরিং থানার সেক্রেটারি হয়ে পরবর্তীতে ডবলমুরিং থানা বিএনপির সভাপতি, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বর্তমানে নগর বিএনপির সহ-সভাপতির দায়িত্বে আছেন নিয়াজ মোহাম্মদ খান।