মেক্সিকো সীমান্তে আরও তিন শতাধিক সেনা পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র

47

মেক্সিকো সীমান্তে আরও তিন শতাধিক সেনা পাঠাতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যেই মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের পক্ষ থেকে সামরিক বাহিনীকে এ সংক্রান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সোমবার মার্কিন বাহিনী জানিয়েছে, তারা অভিবাসন কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় মেক্সিকো সীমান্তে আরও প্রায় ৩২০ সেনা মোতায়েন করবে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স। পেন্টাগনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ ৩২০ সেনা মোতায়েন করা হবে। এতে খরচ পড়বে প্রায় ৭ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার।
নতুন করে যুক্ত হওয়া এসব সেনাসদস্যরা সীমান্তে আগে থেকে দায়িত্বরত সামরিক বাহিনীর দুই হাজার ৯০০ সদস্যের সঙ্গে যুক্ত হবেন। মেক্সিকোর সঙ্গে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার ব্যাপারে ট্রাম্পের তোড়জোড় নতুন নয়। তবে এখন খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই ট্রাম্পের মেক্সিকো সীমান্ত বন্ধের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা স্টিফেন লেগোমস্কি। তার ভাষায়, ‘কোনও একটি স্থলবন্দর বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের আছে। কিন্তু মেক্সিকোর সঙ্গে পুরো সীমান্ত যদি তিনি বন্ধ করে দিতে চান তাহলে তা আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।’
জানিয়েছে, ট্রাম্পের হুমকিকে হালকাভাবে নিয়েছেন মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা মনে করেন, মেক্সিকো সীমান্ত বন্ধের চিন্তা করা আর শরীর একে অপরের সঙ্গে যুক্ত এমন যমজ শিশুদের আলাদা করার কথা ভাবা একই রকম বিষয়। ট্রাম্প আগেও বহুবার মেক্সিকোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু এবার দেশটি মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে ঢোকা অভিবাসী হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের চাপে হিমশিম খাচ্ছে। ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রম করতে মার্কিন নাগরিকদের এখন থেকে অনেক বেশি সময় লাগবে। কারণ সেখানে ৭৫০ জন এজেন্ট নিয়োগ করা হয়েছে অভিবাসী হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের কাগজপত্র পরীক্ষার জন্য।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী ক্রিস্টজেন নেইলসেনসহ আরও অনেক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, স¤প্রতি মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অভিবাসী হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে উপস্থিত হতে চাওয়ার সংখ্যা বহু বেড়ে গেছে। এদের একটা বড় অংশই নারী ও শিশু। মধ্য আমেরিকার দেশগুলোতে হওয়া সহিংসতা ও দারিদ্র্যের হাত থেকে বাঁচতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে তারা সেখানে উপস্থিত হয়েছে। এল সালভাদর, হন্ডুরাস ও গুয়েতেমালা থেকেই মূলত এদের আগমন।
এমন প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মেক্সিকোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত বন্ধ করার হুমকি দিয়েছিলেন ফ্লোরিডা সফরে গিয়ে। সেখানে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমরা দীর্ঘ সময়ের জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দেবো। আমি কোনও খেলা খেলছি না। মেক্সিকোকে এটা বন্ধ করতে হবে।’ তিনি সব ধরনের পণ্যের জন্য সীমান্ত বন্ধ করে দেবেন কি না জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘সব পণ্যের জন্যই সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।’

তিনি মনে করেন, অভিবাসী হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশ বন্ধে মেক্সিকো কার্যকর কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। তাই সীমান্তে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতি আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।