মুনিরীয়া যুব তবলীগের ৭ কর্মী কারাগারে

59

আদালতে আত্মসমর্পণ করতে আসা মুনিরীয়ার ৭ কর্মীকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল রবিবার চট্টগ্রাম জেলা দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে এলে আদালতের বিচারক শুনানী শেষে তাদের আটক করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটির সদস্যরা রাউজানসহ একাধিক জায়গায় আলেম ও ওলামা, সাধারণ মানুষের উপর বিভিন্নভাবে হামলা-মামলা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে থাকলেও প্রতিবাদ বা মামলা করার সাহস কেউ কখনো পাননি। সেই সময়ে তাদের বিরুদ্ধে হামলার শিকার কয়েকজন ব্যক্তি মামলা ও প্রতিবাদ করলেও তৎ সময়ে তাদের এতোই প্রভাব ছিল যে সুফল পাওয়া কল্পনাতিত ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হক ও মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল আনোয়ারের উপর হামলার ঘটনায় প্রতিবাদমূখর হয়ে ওঠে সর্বত্র। এতে মুনিরীয়ার সদস্যদের হাতে কিশোর নঈম উদ্দিন হত্যাসহ একাধিক হামলার মামলার শিকার ব্যক্তিরা প্রতিবাদ করতে থাকলে উত্তপ্ত হয়ে উঠে জনপদ। এরই জের ধরে ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধন, প্রধানমন্ত্রীকে স্বারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করা হয়।
এসব কর্মসূচির জেরে উপজেলার গহিরায় একটি মাহ্ফিলে বক্তব্য প্রদানকালে মুনিরীয়ার সদস্যরা হামলা করে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাড. মোসাহেব উদ্দিন বখতেয়ারের উপর। এই ঘটনায় আইনজীবী মোসাহেব উদ্দিন বখতেয়ার গত ১৮ এপ্রিল মুনিরীয়ার সভাপতি মুনির উল্লাহকে প্রধান আসামি করে রাউজান থানায় একটি মামলা করেন। এই মামলাসহ ৩টি মামলায় মুনিরীয়ার ৭ কর্মী হাই কোর্ট থেকে ৪ সপ্তাহের জামিন নেয়। জামিনের মেয়াদ শেষে গতকাল রবিবার সকাল ১১ টার সময় চট্টগ্রামের দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেনের আদালতে আত্মসমর্পণ করতে আসেন তারা। আদালত দু’টি মামলায় মুনিরীয়ার ৭ কর্মীকে জামিন দিলেও অ্যাড. মোসাহেব উদ্দিন বখতেয়ারের দায়ের করা মামলায় জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
গ্রেপ্তার মুনিরীয়ার সদস্যরা হচ্ছেন রাউজান উপজেলার মোবারকখীলের মৃত আনোয়ার খানের ছেলে নঈম উদ্দিন, একই এলাকার মুন্সি আহমদের ছেলে মো. আলী, রফিক খানের ছেলে শাহেদ খান, গহিরা কলেজের পাশের বাড়ির মুজিবুল হকের ছেলে মো. ফোরকান, কালাচাদ চৌধুরী বাড়ির লিয়াকতের ছেলে সোহরাব হোসেন রিগ্যান, গহিরা সাহের চৌধুরী বাড়ির আবু রাশেদের ছেলে এফিল চৌধুরী।
এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী ও জেলা অ্যাডিশনাল পিপি অ্যাড. সমীর দাশগুপ্ত বলেন, এই মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী ছিলেন পিপি অ্যাড. একেএম সিরাজুল ইসলাম। আইনজীবী মোসাহেব উদ্দিনের উপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাসহ ৩ টি মামলায় পাওয়া জামিন শেষে আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত শুনানী শেষে দুই মামলায় জামিন দিলেও আইনজীবী মোসাহেব উদ্দিনের উপর হামলা মামলায় তাদের জেলে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কেপায়েত উল্লাহ জানান, আইনজীবী মোসাহেব উদ্দিনের উপর হামলার ঘটনায় ১৮ এপ্রিল মুনিরীয়ার সভাপতি মুনির উল্লাহকে প্রধান আসামি করে রাউজান থানায় একটি মামলা হয়। মুনিরীয়ার এই ৭ কর্মীর বিরুদ্ধে আরো ৫টি মামলা রয়েছে বলে তিনি জানান।